মার্জিন ঋণের নতুন ফাঁদ? পুঁজি হারানোর ভয়ে বিনিয়োগকারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রস্তাবিত নতুন মার্জিন ঋণ নীতিমালার কয়েকটি ধারাকে ‘বাজারের জন্য আত্মঘাতী’ আখ্যা দিয়ে এর বিরুদ্ধে তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। তাদের আশঙ্কা, এসব বিধান অপরিবর্তিত অবস্থায় কার্যকর হলে বাজারে তারল্যপ্রবাহে তীব্র সংকট তৈরি হবে এবং সূচকের বড় ধরনের পতন ঘটতে পারে, যা সার্বিক স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলবে।
সোমবার বিকেলে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ) কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এই উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টরস অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমআইএ)। সংগঠনের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে সভাপতি এস এম ইকবাল হোসেন বলেন, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার নামে এমন কিছু বিধান চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে যা বাজারের স্বাভাবিক গতিপ্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করবে।
যেসব বিধান নিয়ে মূল আপত্তি
নীতিমালার সবচেয়ে বিতর্কিত বিষয়গুলোর মধ্যে একটি হলো মূল্য-আয় (পি/ই) অনুপাতের সীমা ৩০-এ নামিয়ে আনা। যদিও ঝুঁকি কমানোর উদ্দেশ্যে এই প্রস্তাব করা হয়েছে, বিনিয়োগকারী নেতারা বলছেন, এটি ‘একই মাপের লাঠি দিয়ে সবাইকে পেটানোর’ মতো। এস এম ইকবাল হোসেনের মতে, একটি-দুটি দুর্বল কোম্পানির কারণে পুরো খাতের পি/ই অনুপাত প্রভাবিত হতে পারে। এর ফলে ভালো মৌলভিত্তিসম্পন্ন শেয়ারও মার্জিন ঋণ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য ক্ষতিকর।
আরেকটি উদ্বেগের কারণ হলো ‘ফোর্সড সেল’ বা বাধ্যতামূলক বিক্রির বিধান। প্রস্তাব অনুযায়ী, কোনো শেয়ার ‘এ’ বা ‘এন’ থেকে ‘বি’ বা ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নেমে গেলে মাত্র পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তা বিক্রি করতে হবে। ইকবাল হোসেন এই বিধানকে বাজারে কৃত্রিমভাবে বিক্রির চাপ তৈরির একটি ‘বিপজ্জনক ফাঁদ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেন, “হাজার হাজার বিনিয়োগকারী যখন একসাথে শেয়ার বিক্রি করতে বাধ্য হবেন, তখন ক্রেতার অভাবে বাজারে প্যানিক তৈরি হবে এবং লেনদেন বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতিও সৃষ্টি হতে পারে।” এর বিকল্প হিসেবে তিনি শেয়ার সমন্বয়ের জন্য অন্তত তিন মাসের সময়সীমা দেওয়ার প্রস্তাব করেন।
শুধু তাই নয়, খসড়া নীতিমালায় বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ দেওয়ার ক্ষমতাও সীমিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তাদের নিট সম্পদের তিন গুণের বেশি ঋণ দেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং পরিশোধিত মূলধনের তুলনায় বাজার মূলধন বাড়লে ঋণ-ইক্যুইটি অনুপাত কমানোর বিধান—এই দুটি পদক্ষেপ বাজারের সামগ্রিক তারল্যপ্রবাহকে আরও সংকুচিত করবে বলে মনে করছেন বিনিয়োগকারীরা।
বিনিয়োগকারীদের অন্যান্য দাবি
একইসাথে, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে আরও কিছু দাবি তুলে ধরা হয় সংবাদ সম্মেলনে। এর মধ্যে রয়েছে—মিউচুয়াল ফান্ডের অনিয়মে সম্পদ ব্যবস্থাপকদের আইনত দায়বদ্ধ করা, কোনো কোম্পানিকে তালিকাচ্যুত করার আগে বিনিয়োগকারীর সুরক্ষা নিশ্চিত করা, এসএমই বোর্ডের ৩০ লাখ টাকা বিনিয়োগের সীমা তুলে দেওয়া এবং ভুয়া আর্থিক প্রতিবেদন দেওয়া কোম্পানির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা হিসেবে ফরেনসিক অডিটের দাবি জানানো হয়।
আল-আমিন ইসলাম/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- মার্জিন বিধিমালা ২০২৫ খসড়া প্রকাশ, বিনিয়োগকারীদের জন্য বড় ঘোষণা
- আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের বড় ঘোষণা, শেয়ারে হঠাৎ চাহিদার ঝড়
- বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিএসইর বিশেষ সতর্কবার্তা
- বাংলাদেশ বনাম নেপাল: লস টাইমে গোল, শেষ হলো ম্যাচ, জানুন ফলাফল
- বিনিয়োগকারীদের চাহিদার শীর্ষে ৯ কোম্পানির শেয়ার
- বাংলাদেশ ব্যাংকের সতর্কবার্তা: বিমা খাত এখন ঝুঁকির মধ্যে
- আট ব্রোকারেজ হাউজের বিরুদ্ধে বিএসইসির পদক্ষেপ, তালিকায় সাকিবের প্রতিষ্ঠান
- মার্জিন রুলস নিয়ে বিএসইসির নতুন সিদ্ধান্ত
- আজকের শেয়ারবাজার: বিক্রেতা সংকটে ৯ কোম্পানি হল্টেড
- বিনিয়োগকারীরা সাবধান: ডিএসইর গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা
- বাংলাদেশ বনাম নেপাল: ৯০ মিনিটের খেলা শেষ, জেনে নিন ফলাফল
- আপনার মতামতেই চূড়ান্ত হবে শেয়ারবাজারের মার্জিন রুলস
- বিনিয়োগকারীদের চাহিদার শীর্ষে ৫ কোম্পানির শেয়ার
- ঢাকায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের মিছিল ঠেকালো পুলিশ-জনতা
- বিক্রেতা সংকটে হল্টেড ৫ কোম্পানির শেয়ার