MD. Razib Ali
Senior Reporter
জোটের স্বার্থে ১০০ আসনে জামায়াতের তালিকা কাটছাঁট, আসছে নতুন মুখ
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নিজেদের ঘোষিত প্রার্থী তালিকায় বড় ধরনের রদবদল আনতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে, দলের পূর্বঘোষিত তালিকা থেকে ন্যূনতম ৮০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০ জন প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে।
চলমান ৫ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনে শরিক বাকি সাতটি ইসলামী দলের জন্য আসন সমঝোতার পথ প্রশস্ত করতেই এই বৃহৎ পদক্ষেপ। অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনা এবং মাঠপর্যায়ে জনপ্রিয়তার ভিত্তিতেও বেশকিছু আসনে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। জামায়াতের প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব যোবায়ের জোর দিয়ে বলেছেন যে, আসন সংখ্যা নয়, বরং বিজয়ের সম্ভাবনাকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। তার ভাষ্যমতে, আট দলের নেতারা এই নীতিতে ঐক্যবদ্ধ যে, যাকে যেখানে দিলে জয়ী হতে পারবেন, তাকেই সেখানে মনোনীত করা হবে। তাদের অভীষ্ট লক্ষ্য হলো, রাষ্ট্রক্ষমতায় ইসলামকে প্রতিষ্ঠা করা।
‘এক বাক্সে সব ইসলামী ভোট’: সমঝোতার কৌশল
দলগুলো ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়নে গণভোটসহ ৫ দফা দাবিতে যে অভিন্ন ও সম্মিলিত আন্দোলন শুরু করেছিল, সেই ধারাবাহিকতায় এবার নির্বাচনি সমঝোতার দিকে মনোনিবেশ করেছে। তাদের প্রধান কৌশল হলো ‘ইসলামি দলগুলোর সব ভোট এক বাক্সে’ আনা। এই লক্ষ্য পূরণের অংশ হিসেবেই আটটি ইসলামী দল একক প্রার্থী নির্ধারণে কাজ করছে।
আন্দোলনের বিভাগীয় সমাবেশ কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর আট দলের লিয়াজোঁ কমিটি আলোচনার মাধ্যমে প্রার্থীতালিকা চূড়ান্ত করবে। জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন এবং খেলাফত আন্দোলনসহ জোটের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, মাঠ জরিপের প্রতিবেদনেই স্পষ্ট হবে কোন দল কত আসনে আগ্রহ প্রকাশ করতে পারে বা জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু। যদিও শীর্ষ নেতারা ইসলামের বৃহত্তর স্বার্থে সর্বোচ্চ ছাড় দেওয়ার মানসিকতার কথা জানিয়েছেন, তবুও আসন বণ্টন নিয়ে কিছুটা অস্বচ্ছতা রয়েছে।
ইসলামী আন্দোলনের আসন ভাগাভাগির প্রস্তাব
আসন বণ্টন নিয়ে প্রধান দুটি শরিক দলের মধ্যে একটি মতপার্থক্যের আভাস দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (আইএবি)। দলটির দপ্তর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসেন জাফরী মনে করেন, আইএবি ও জামায়াতে ইসলামী এই জোটের প্রধান শরিক। তাই তাদের দুজনের আসন সংখ্যা প্রায় সমান হওয়া উচিত। তার প্রস্তাব হলো, আইএবি ১২০টি, জামায়াত ১৩০টি, এবং বাকি ৫০টি আসন অন্য ছয়টি দলের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া যেতে পারে।
তবে মাওলানা জাফরী এ-ও জানিয়েছেন যে, যেহেতু জামায়াত পূর্বে পার্লামেন্টে ছিল, তাই তারা সামান্য বেশি আসন পেতে পারে। তিনি আরও ইঙ্গিত দেন, জোটের পরিধি বেড়ে ১০ বা ১১ দলে উন্নীত হতে পারে, সেক্ষেত্রে নতুন দলগুলোর জন্যও আসন ছাড়তে হবে। তিনি দাবি করেন, তাদের কাছে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার মতো তালিকা রয়েছে, যার মধ্যে ৪০-৫০ জনের জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
অপরদিকে, খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী ২০টি আসন চাইবেন বলে জানিয়েছেন। এই দলের আরেক অংশের যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ হোসেন আকন্দ ৫টি আসনে প্রার্থী দিতে আগ্রহী হলেও, আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার কথা যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছেন। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টিও তাদের নিজস্ব প্রার্থী তালিকা ও জরিপের কাজ চালাচ্ছে।
শীর্ষ নেতৃত্ব ও সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব
আট দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে কে কোথায় লড়বেন, তা চূড়ান্ত হয়েছে। নিশ্চিত প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক এবং খেলাফত আন্দোলনের আমির মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী—তিনজনই ঢাকা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তবে ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম (চরমোনাই পীর) নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না বলে জানা গেছে।
অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব যোবায়ের জানিয়েছেন, সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে ২ জন হিন্দু প্রার্থীকে ইতোমধ্যে মনোনয়ন নিশ্চিত করা হয়েছে। এদের মধ্যে খুলনা-১ আসনে কৃষ্ণ নন্দী এবং কিশোরগঞ্জ-৪ আসনে আরও একজন রয়েছেন। এছাড়াও সনাতন এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বী ও উপজাতিদের মধ্য থেকে আরও ৪ থেকে ৫ জন প্রার্থী হতে পারেন।
ছাত্রনেতাদের অগ্রাধিকার
ডাকসু কার্যনির্বাহী সদস্য সর্বমিত্র চাকমার নাম রাঙামাটি আসনের জন্য আলোচিত হলেও, কম বয়সের কারণে তার মনোনয়ন নাও মিলতে পারে। সেক্ষেত্রে ডাকসু জিএস এসএম ফরহাদকে রাঙামাটি থেকে দেওয়া হতে পারে। বান্দরবন থেকে একজন উপজাতি প্রার্থীর সন্ধান চলছে। অন্যদিকে, ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েমকে খাগড়াছড়ি অথবা ঢাকার কোনো আসন থেকে মনোনয়ন দিতে পারে জামায়াত। এছাড়া চাকসু, রাকসু, জাকসুতে বিজয়ীদের কয়েকজনকে মাঠ জরিপের ভিত্তিতে প্রার্থী করা হবে।
ইতিমধ্যে জামায়াতের প্রার্থী রদবদল শুরু হয়েছে। দলের জেলা আমির যেখানে প্রার্থী ছিলেন, সেই হবিগঞ্জ-৪ আসনে নির্বাসিত প্রবাসী সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমানকে একদিন আগেই নিশ্চিত করা হয়েছে। কুড়িগ্রামেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। শরিক দলগুলোর জন্য আসন ছাড় এবং অভ্যন্তরীণ পরিবর্তনের কারণে সব মিলিয়ে বর্তমান প্রার্থীদের মধ্য থেকে কমপক্ষে ৮০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০ আসনে পূর্বঘোষিত প্রার্থীরা বাদ পড়ছেন, যা নিশ্চিত বলে জানিয়েছে নির্ভরযোগ্য সূত্র।
আল-মামুন/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা ২য় ওয়ানডে: খেলাটি সরাসরি দেখুন Live
- ভূমিকম্প রেড জোন: সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে দেশের যে ৯ জেলা, দেখুন তালিকা
- ব্রাজিল বনাম বাংলাদেশ ম্যাচ কবে, জানুন সময়সূচি
- ঢাকার ভূমিকম্পে টিকবে কোন এলাকা? প্রকাশ হলো নিরাপদ এলাকার তালিকা
- আর্জেন্টিনা বনাম বাংলাদেশ ম্যাচ কবে, জানুন সময়সূচি
- বাংলাদেশ বনাম ব্রাজিল ম্যাচ কবে, জানুন সময়সূচি
- ল্যাটিন-বাংলা সুপার কাপের সূচি প্রকাশ, বাংলাদেশ-ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার ম্যাচ কবে
- earthquake today: আবারও ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল কোথায়?
- আজকের সোনার দাম: (বুধবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫)
- এসএসসি পাসে সেনাবাহিনী সৈনিক নিয়োগ: যোগ্যতা ও আবেদনের A to Z জানুন
- ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা: জমে উঠেছে লড়াই খেলাটি সরাসরি দেখুন Live
- ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনা ম্যাচ কবে, জানুন সময়সূচি
- ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা: কোহলির সেঞ্চুরি, পাহাড়সম লক্ষ্য দিল ভারত
- Bangladeshvs brazil ম্যাচ কবে, জানুন সময়সূচি
- ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা: শেষ ৭২০ রানের ওয়ানডে ম্যাচ, জানুন ফলাফল