MD. Razib Ali
Senior Reporter
বাতিল হচ্ছে ১০ ধরনের নামজারি! জমির মালিকরা এখনি সতর্ক হোন
বাংলাদেশ ভূমি প্রশাসনে এক যুগান্তকারী সংস্কারের বছর হতে চলেছে ২০২৫ সাল। ভূমি মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে, নতুন ও কঠোর নীতির মাধ্যমে মোট ১০ শ্রেণির জমির নামজারি বা মিউটেশন প্রক্রিয়া অকার্যকর হতে যাচ্ছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে দেশজুড়ে জমির মালিকানা যাচাই, খতিয়ান হালনাগাদ ও রেকর্ড সংশোধনের ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। জমির মালিকদের একটি বড় অংশ এই পরিবর্তনের কারণে তাদের বর্তমান নামজারির বৈধতা নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারেন।
কঠোর সিদ্ধান্তের নেপথ্যে কারণ
দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অঞ্চলে ভূমি সংক্রান্ত যে গুরুতর ও লাগামহীন অনিয়মগুলো প্রশাসনিক জটিলতা সৃষ্টি করছিল, সেগুলোর মূলোৎপাটন করাই এই পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য। সূত্রমতে, যে ধরনের ব্যাপক অনিয়মগুলো বন্ধ করার জন্য প্রশাসন এই কঠোর অবস্থান নিচ্ছে, সেগুলো হলো:
প্রতারণামূলক বা ভুয়া কাগজপত্র (জাল দলিল) ব্যবহার।
অসৎ উপায়ে ভুল দাগ নম্বর দিয়ে মালিকানা নথিভুক্ত করা।
উৎকোচের বিনিময়ে দ্রুত নামজারি সম্পন্ন করা।
প্রকৃত দখলে না থেকেও ভূমি নিজের নামে তুলে নেওয়া।
সরকারি সম্পত্তি বা বিশেষ সংস্থার জমিকে ব্যক্তিগত মালিকানায় নামজারি করা।
ভূমি প্রশাসন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এই নতুন বিধিমালা কার্যকর হলে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে এবং জালিয়াতি বা আইনি জটিলতায় থাকা জমির নামজারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে রদ হয়ে যাবে। ফলস্বরূপ, জমি সংক্রান্ত মালিকানা নথির ক্ষেত্রে মালিকদের পূর্ব সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।
২০২৫ সালের মধ্যে যে ১০ ধরনের নামজারি রদ হবে
ভূমি মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, নিম্নোক্ত ১০ প্রকার জমির মালিকানা পরিবর্তন নথিভুক্তি (নামজারি) ২০২৫ সালের মধ্যে বাতিল বলে গণ্য হবে:
১. বিচারাধীন মামলার অধীনে থাকা ভূমি:
যেসব জমি নিয়ে দেওয়ানি আদালতে মামলা চলমান, সেই অবস্থায় প্রভাব খাটিয়ে বা অবৈধ উপায়ে করা নামজারি বাতিল হবে। মামলার অন্য পক্ষ সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে "মিস কেস" দাখিল করলেই নামজারি শূন্য ঘোষিত হবে।
২. দখলবিহীন জমির নামজারি:
যদি কোনো জমির দখল অন্য কোনো ব্যক্তির কাছে থাকে, কিন্তু নামজারি করা হয়েছে ভিন্ন নামে, তবে দখলে থাকা ব্যক্তি আপত্তি জানালে সেই মালিকানা পরিবর্তন নথিভুক্তি টিকে থাকবে না।
৩. প্রাপ্য অংশের অতিরিক্ত নামজারি:
কারও বৈধ মালিকানা ৩ শতাংশ হলেও, যদি তিনি প্রতারণার মাধ্যমে ৫ শতাংশের নামজারি করে নেন, তবে এই অতিরিক্ত ২ শতাংশ জমির নামজারি রদ করা হবে।
৪. ভুল দাগ নম্বরের নামজারি:
যদি দলিলে ভুল দাগ নম্বর থাকা সত্ত্বেও অনৈতিক উপায়ে নামজারি সম্পন্ন করা হয়, তবে দলিল সংশোধন না করা হলে ২০২৫ সালে সেই নামজারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে অকার্যকর হতে পারে।
৫. অর্পিত সম্পত্তি (ক-তফসিল):
অর্পিত সম্পত্তির মধ্যে ক-তফসিলভুক্ত (যা সরকারি সম্পত্তি) জমির কোনো নামজারি বৈধ হবে না। ভুলক্রমে হয়ে থাকলেও তা প্রত্যাহার করা হবে। (তবে খ-তফসিল মালিকানা সম্পত্তি হিসেবে গণ্য)।
৬. খাস বা সরকারি জমি:
১ নম্বর খতিয়ানভুক্ত খাস জমি কোনোভাবেই ব্যক্তিগত নামে নামজারি করা যাবে না। ১৯৫০ সালের রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইনের ৮৬ থেকে ৯২ ধারা অনুযায়ী এসব জমি সরকারের মালিকানাধীন। ভুলবশত করা নামজারি বাতিল হবে।
৭. সরকারি সংস্থা কর্তৃক ব্যবহৃত ভূমি:
রেলওয়ে, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক বিভাগ বা অন্য কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি নামজারি করা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। পূর্বে ভুলভাবে করা নামজারিও বাতিল হয়ে যাবে।
৮. রেকর্ডবিহীন জমির নামজারি:
সর্বশেষ সরকারি রেকর্ড (যেমন RS/BS/CS/DCR) না থাকা জমির মালিকানা পরিবর্তন নথিভুক্ত করা যাবে না। পূর্বে এ ধরনের রেকর্ডবিহীন জমির যে কোনো নামজারি প্রত্যাহার করা হবে।
৯. অনলাইন নিষিদ্ধ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত সম্পত্তি:
ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনলাইন সিস্টেমে সংস্থা, খাস বা অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে তালিকাভুক্ত জমি যদি নামজারি করা হয়, তবে তা তাৎক্ষণিকভাবে রদ করা হবে।
১০. জালিয়াতি ও উৎকোচ নির্ভর নামজারি:
তহসিল অফিসার বা এসিল্যান্ডকে অবৈধভাবে প্রভাবিত করে বা ঘুষের মাধ্যমে সম্পন্ন করা সকল নামজারি পর্যায়ক্রমে বাতিল ঘোষণা করা হবে।
নামজারি রদ হলে সম্ভাব্য পরিণতি
কোনো জমির নামজারি বাতিল হলে মালিকদের জন্য নিম্নলিখিত গুরুতর সমস্যাগুলো সৃষ্টি হতে পারে:
জমির মালিকানা নিয়ে পুনরায় বিরোধ বা আইনি জটিলতা সৃষ্টি।
ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা) প্রদান স্থগিত হয়ে যাওয়া।
জমির হস্তান্তর (বিক্রি বা দান) প্রক্রিয়া আটকে যাওয়া।
ভবিষ্যৎ ভূমি রেকর্ডের সংশোধনে জটিলতা বৃদ্ধি।
সুরক্ষিত থাকতে মালিকদের জন্য করণীয়
জমির মালিকানা নিশ্চিত করতে এবং নামজারি বাতিল হওয়ার ঝুঁকি এড়াতে নিম্নলিখিত বাধ্যতামূলক পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে:
১. যাচাইকরণ: দলিলের দাগ নম্বর, পরিমাণ ও মৌজা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করুন।
২. দখল নিশ্চিতকরণ: জমির প্রকৃত দখল নিশ্চিত করেই কেবল নামজারি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করুন।
৩. নিষিদ্ধ জমি বর্জন: খাস বা সরকারি সংস্থার জমি কেনা থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকুন।
৪. অনলাইন স্টেটাস চেক: ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনলাইন তথ্য সিস্টেমে দাগ নম্বর দিয়ে জমির বর্তমান অবস্থা পরীক্ষা করুন।
৫. দলিল সংশোধন: দলিলের যেকোনো ভুল (যেমন দাগ নম্বর) থাকলে অবিলম্বে তা সংশোধন করে নিন।
৬. আইনি পদক্ষেপ: প্রয়োজনে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে আপত্তি বা "মিস কেস" দাখিল করুন।
এস,এম,মুন্না/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- বাংলাদেশ বনাম ব্রাজিল: খেলাটি সরাসরি দেখুন Live
- আজ বাংলাদেশ বনাম ব্রাজিল ম্যাচ: খেলাটি কখন, কোথায় ও কীভাবে দেখবেন লাইভ
- বাংলাদেশ বনাম ব্রাজিল ম্যাচ কবে, জানুন সময়সূচি
- বাংলাদেশ বনাম ব্রাজিল: খেলাটি মোবাইল দিয়ে সরাসরি Live দেখবেন যেভাবে
- আজ বাংলাদেশ বনাম ব্রাজিল ম্যাচ: খেলাটি সরাসরি Live দেখবেন যেভাবে
- বাংলাদেশ বনাম ব্রাজিল: ৯০ মিনিটের খেলা শেষ, জানুন ফলাফল
- ঢাকার ভূমিকম্পে টিকবে কোন এলাকা? প্রকাশ হলো নিরাপদ এলাকার তালিকা
- আজ বাংলাদেশ বনাম ব্রাজিল ম্যাচ: খেলাটি লাইভ দেখার উপায় ও সময়সূচি
- চলছে বাংলাদেশ বনাম ব্রাজিল ম্যাচ: খেলাটি সরাসরি দেখুন Live এখানে
- বাংলাদেশ বনাম ব্রাজিল: প্রথমার্ধের খেলা শেষ, জানুন ফলাফল
- বাংলাদেশ বনাম ব্রাজিল: ৮০ মিনিটের খেলা শেষ, জানুন ফলাফল
- Bangladeshvs brazil ম্যাচ কবে, জানুন সময়সূচি
- চলছে বাংলাদেশ বনাম ব্রাজিল ম্যাচ: ২ গোল খেলাটি সরাসরি দেখুন Live এখানে
- লিভার ড্যামেজ: ত্বকে সংকেত দেয় যে ৪ লক্ষণ, জানুন এখনি
- বাংলাদেশ বনাম ব্রাজিল: শেষে চরম উত্তেজনায় শেষ ম্যাচ জানুন ফলাফল