ঢাকা, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

জ্বালানি খাতের ১৬ শেয়ার সম্পদ মূল্যের নিচে: সুবর্ণ সুযোগ বিনিয়োগকারীদের!

শেয়ারনিউজ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১০ ২৩:১০:১৯
জ্বালানি খাতের ১৬ শেয়ার সম্পদ মূল্যের নিচে: সুবর্ণ সুযোগ বিনিয়োগকারীদের!

দেশের পুঁজিবাজারে বর্তমানে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ২৩টি তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে ১৬টির শেয়ার তাদের প্রকৃত সম্পদ মূল্যের (Net Asset Value - NAV) চেয়ে কম দামে লেনদেন হচ্ছে। এই তথ্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (DSE) থেকে প্রাপ্ত, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, সম্পদ মূল্যের নিচে থাকা এই শেয়ারগুলো দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয় সুযোগ তৈরি করতে পারে।

যেসব কোম্পানিতে সুযোগ:

এই তালিকায় থাকা উল্লেখযোগ্য কোম্পানিগুলো হলো তিতাস গ্যাস, পাওয়ার গ্রিড, জিবিবি পাওয়ার, সামিট পাওয়ার, এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন, বারাকা পাওয়ার, বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার, ডরিন পাওয়ার, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি, ডেসকো, লুবরেফ বাংলাদেশ, অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন, বিডি ওয়েল্ডিং, যমুনা অয়েল, পদ্মা অয়েল এবং মেঘনা পেট্রোলিয়াম।

শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য ও বর্তমান দরের তুলনামূলক চিত্র:

তিতাস গ্যাস: এই কোম্পানিটি সম্পদ মূল্যের তুলনায় সবচেয়ে বেশি অবমূল্যায়িত। প্রতি শেয়ারের সম্পদ মূল্য ৯৮ টাকা ১৫ পয়সা হলেও, বাজারে এর দর মাত্র ২১ টাকা। অর্থাৎ, ৭৭ টাকা ১৫ পয়সা কম দামে এর লেনদেন হচ্ছে।

পাওয়ার গ্রিড: এর শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য ৪১ টাকা ৪৪ পয়সা, কিন্তু বর্তমানে তা ৩৩ টাকায় লেনদেন হচ্ছে। অর্থাৎ, ৮ টাকা ৪৪ পয়সা কম।

জিবিবি পাওয়ার: ২০ টাকা ২৭ পয়সা সম্পদ মূল্যের বিপরীতে এর শেয়ার ৭ টাকা ৬০ পয়সায় পাওয়া যাচ্ছে, যা ১২ টাকা ৬৭ পয়সা কম।

সামিট পাওয়ার: সামিট পাওয়ারের শেয়ারের সম্পদ মূল্য ৪১ টাকা ৪৪ পয়সা হলেও, লেনদেন হচ্ছে ১৫ টাকা ৫০ পয়সায়, ২৫ টাকা ৯৪ পয়সা কমে।

লুবরেফ বাংলাদেশ: এই কোম্পানির শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য ৩৭ টাকা ৪২ পয়সা হলেও, বাজার দর ১৩ টাকা ৬০ পয়সা, যা ৬৩.৬৫ শতাংশ বা ২৩ টাকা ৮২ পয়সা কম।

এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন: ৩৭ টাকা ৪৫ পয়সা সম্পদ মূল্যের শেয়ার ১৪ টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন হচ্ছে, ২৩ টাকা ০৫ পয়সা কমে।

বারাকা পাওয়ার: ২২ টাকা ৬১ পয়সা সম্পদ মূল্যের বিপরীতে এর শেয়ার ১১ টাকা ৫০ পয়সায় পাওয়া যাচ্ছে, ১১ টাকা ১১ পয়সা কম।

বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার: ২৬ টাকা ৫২ পয়সা সম্পদ মূল্যের শেয়ার ১৪ টাকা ৫০ পয়সায় লেনদেন হচ্ছে, যা ১২ টাকা ০২ পয়সা কম।

ডরিন পাওয়ার: ৪৯ টাকা ৫৭ পয়সা সম্পদ মূল্যের শেয়ার ২৯ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হচ্ছে, ১৯ টাকা ৬৭ পয়সা কমে।

খুলনা পাওয়ার: ১৮ টাকা ৩৪ পয়সা সম্পদ মূল্যের শেয়ার ১১ টাকা ৪০ পয়সায় পাওয়া যাচ্ছে, ৬ টাকা ৯৪ পয়সা কম।

বিডি ওয়েল্ডিং: ১১ টাকা ৬১ পয়সা সম্পদ মূল্যের বিপরীতে এর শেয়ার ৯ টাকা ৮০ পয়সায় লেনদেন হচ্ছে, ১ টাকা ৮১ পয়সা কমে।

ডেসকো: ৩৭ টাকা ৯২ পয়সা সম্পদ মূল্যের শেয়ার ২৩ টাকা ৯০ পয়সায় পাওয়া যাচ্ছে, ১৪ টাকা ০২ পয়সা কম।

অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন: ১৮ টাকা ৫৬ পয়সা সম্পদ মূল্যের শেয়ার ১৬ টাকা ৩০ পয়সায় লেনদেন হচ্ছে, ২ টাকা ২৬ পয়সা কমে।

যমুনা অয়েল: ২২৮ টাকা ৬১ পয়সা সম্পদ মূল্যের শেয়ার ১৮৬ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন হচ্ছে, ৪২ টাকা ৪১ পয়সা কমে।

পদ্মা অয়েল: ২৩১ টাকা ৫৬ পয়সা সম্পদ মূল্যের শেয়ার ১৯৪ টাকা ৭০ পয়সায় পাওয়া যাচ্ছে, ৩৬ টাকা ৮৬ পয়সা কম।

মেঘনা পেট্রোলিয়াম: ২৩৪ টাকা ১২ পয়সা সম্পদ মূল্যের শেয়ার ২০৭ টাকা ৬০ পয়সায় লেনদেন হচ্ছে, ২৬ টাকা ৫৩ পয়সা কমে।

বিনিয়োগ কৌশল ও সম্ভাবনা:

বাজারের এই প্রবণতা বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করে। যে সকল শেয়ার তাদের অন্তর্নিহিত মূল্যের নিচে লেনদেন হচ্ছে, সেগুলোকে প্রায়শই "আন্ডারভ্যালুড" বা অবমূল্যায়িত হিসেবে দেখা হয়। দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে, এমন শেয়ারগুলো ভবিষ্যতে তাদের প্রকৃত মূল্যে ফিরে আসার সম্ভাবনা থাকে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য উল্লেখযোগ্য মুনাফা বয়ে আনতে পারে।

অন্যদিকে, কিছু শেয়ার সম্পদ মূল্যের চেয়ে বেশি দামে লেনদেন হলেও, এর মাধ্যমে বাজারের একটি গতিপ্রকৃতি বোঝা যায়। সঠিক বিশ্লেষণ এবং সুচিন্তিত কৌশল গ্রহণের মাধ্যমে স্বল্পমেয়াদেও এই ধরনের শেয়ার থেকে মুনাফা অর্জনের সুযোগ থাকে। পরিশেষে, সম্পদ মূল্য এবং শেয়ার মূল্যের মধ্যকার এই পার্থক্যটিই পুঁজিবাজারে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে দেয়।

বিনিয়োগকারীদের এই সুযোগগুলো কাজে লাগানোর জন্য বাজারের গভীর বিশ্লেষণ এবং অভিজ্ঞ আর্থিক উপদেষ্টার পরামর্শ নেওয়া অত্যাবশ্যক।

আব্দুর রহিম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ