
MD Zamirul Islam
Senior Reporter
পুঁজিবাজারে ডিজিটাল জালিয়াতি: বিএসইসি-এনটিএমসি'র যৌথ উদ্যোগ

দেশের পুঁজিবাজারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে এক শ্রেণীর প্রতারক চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে, যারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামে লোভনীয় প্রস্তাব দিয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। এমন গুরুতর অভিযোগের প্রেক্ষিতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারকে (এনটিএমসি) আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
প্রতারণার ধরন ও কৌশল:
বিএসইসির মার্কেট ইন্টেলিজেন্স বিভাগের সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এই প্রতারক চক্র অত্যন্ত সুকৌশলে কাজ করছে। তারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (যেমন হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, টেলিগ্রাম) আকর্ষণীয় বার্তা পাঠায়। প্রাথমিক পর্যায়ে ছোট বিনিয়োগে দ্রুত মুনাফা দেখিয়ে বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জন করে।
এরপর অধিক লাভের প্রলোভন দেখিয়ে বিপুল অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগে উৎসাহিত করে। যখন বড় অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ হয়ে যায়, তখন চক্রটি জানায় যে বিনিয়োগকারীর ব্যবহৃত মোবাইল অ্যাপে সমস্যা হয়েছে এবং এর সমাধানের জন্য আরও অর্থ প্রদান করতে হবে। এভাবে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের পর প্রতারকরা দ্রুত ভুক্তভোগীকে সংশ্লিষ্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে ব্লক করে দেয়, যার ফলে বিনিয়োগকারী তার সমস্ত অর্থ হারান।
বিএসইসির জরুরি পদক্ষেপ:
বিএসইসি তাদের অনুসন্ধানে এমন একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সন্ধান পেয়েছে যা এই প্রতারণার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। গ্রুপটির লিংক:
https://chat.whatsapp.com/KQwwxYzstK58wl4tNgA2Yx । এই গুরুতর পরিস্থিতিতে, বিএসইসি এনটিএমসির মহাপরিচালককে চিঠি দিয়ে ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপটি বন্ধ করতে এবং এর নেপথ্যের ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের প্রতি সতর্কবার্তা ও অবৈধ গ্রুপের তালিকা:
একইসঙ্গে, বিএসইসি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রতি চরম সতর্কতা জারি করেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে যে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি বা হ্রাসের মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে কিছু চক্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে। এই কর্মকাণ্ড বাংলাদেশ সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (রিসার্চ অ্যানালিস্ট) রুলস, ২০১৩ এর পরিপন্থী।
আইন অনুযায়ী, শুধুমাত্র মার্চেন্ট ব্যাংকার, স্টক-ডিলার, স্টক-ব্রোকার, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি, ইনভেস্টমেন্ট অ্যাডভাইজার এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট রিসার্চ ফার্মগুলোই নিবন্ধিত রিসার্চ অ্যানালিস্ট হিসেবে পুঁজিবাজারের সিকিউরিটিজের মূল্য সম্পর্কে মতামত বা পরামর্শ প্রকাশ করতে পারে। নিম্নলিখিত ফেসবুক পেজ, আইডি বা গ্রুপগুলো এর আওতাভুক্ত নয় এবং এদের মাধ্যমে প্রচারিত তথ্য
সম্পূর্ণ বেআইনি:
১. শখের শেয়ার বাজার: https://www.facebook.com/profile.php?id=61579790072044
২. BD STOCK EXCHANGE (DSE & CSE):
https://www.facebook.com/groups/391580888653809/
৩. Momin Dse:
https://www.facebook.com/groups/391580888653809/user/100016058347627/
৪. Ashakaa Rasul Noomani:
https://www.facebook.com/groups/391580888653809/user/100008105401350/
৫. শেয়ার মার্কেট সাকসেস স্ট্রাটেজিস: https://www.facebook.com/groups/391580888653809/user/61574056896483/
৬. বাজার বিশ্লেষণ: https://www.facebook.com/profile.php?id=61579257136367
৭. আশিকুর রহমান আশিক: https://www.facebook.com/asikura.rahamana.asika.371807
৮. Anika Sarah (Consultancy Assetmanagement): https://www.facebook.com/anika.sarah.142
৯. PUBLIC BUSINESS CLUB: https://www.facebook.com/groups/1421914744614689/
১০. Planned Investment: https://www.facebook.com/groups/1768873286596084/
১১. Caleb Wright: https://www.facebook.com/profile.php?id=61579983105760
বিনিয়োগকারীদের এ ধরনের অননুমোদিত উৎস থেকে কোনো বিনিয়োগ পরামর্শ গ্রহণ না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।
বিএসইসির প্রতিশ্রুতি ও যোগাযোগের মাধ্যম:
বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, "সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় এই প্রতারক চক্রগুলো শেয়ারের দর বৃদ্ধি-হ্রাসের লোভ দেখিয়ে বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করছে। এই প্রতারণা রুখতে বিএসইসি বিনিয়োগকারীদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে। যদিও আইডি ট্র্যাক করা বিএসইসির একার পক্ষে সম্ভব নয়, তবুও পুঁজিবাজারে এ ধরনের যেকোনো প্রতারণা মোকাবিলায় কমিশন সর্বোচ্চ পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।"
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় প্রতারক চক্র বা পুঁজিবাজার সংক্রান্ত যেকোনো অনিয়মের তথ্য পেলে তা দ্রুত কমিশনের মার্কেট ইন্টেলিজেন্স ডিপার্টমেন্টের ই-মেইলে ([email protected]) জানানোর জন্য বিএসইসি সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে তৎকালীন বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম জাতীয় টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এর উদ্দেশ্য ছিল কারসাজি ও গুজব ছড়িয়ে বাজারকে অস্থিতিশীল করা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা। তবে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে গত বছরের ২৯ আগস্ট বর্তমান বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ সেই প্রস্তাব বাতিল করেন।
আল-মামুন/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- আজ বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচ: লাইভ দেখার সহজ উপায় ও সময়সূচি
- ৫ ব্যাংকের শেয়ার বাজেয়াপ্ত: সরকারি সিদ্ধান্তে শেয়ারহোল্ডাররা দিশেহারা!
- এক কোম্পানির শেয়ার 'জেড' থেকে 'এ' ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর
- 'জেড' থেকে 'এ' ক্যাটাগরি ও 'বি' থেকে 'জেড' ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর দুই কোম্পানির শেয়ার
- শেয়ারবাজারে আসছে বড় পরিবর্তন: ডিএসইর রেকর্ড ডেট প্ল্যান!
- বিএনপিতে শোকের ছায়া: বিএনপি মহাসচিবের শোক প্রকাশ
- বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা: বি-ক্যাটাগরির ঝুঁকি, ৬ শেয়ারে অবিশ্বাস্য মুনাফা
- আগামীকাল শনিবার যে সকল এলাকায় ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না
- অন্ধকারে 'জেড' ক্যাটাগরির ৯ শেয়ার: বিনিয়োগকারীদের জন্য সতর্কবার্তা!
- দুই কোম্পানির ক্যাটাগরি পরিবর্তন
- সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা: গ্রেড অনুযায়ী কার কত বেতন বাড়ছে
- লভ্যাংশ পেল ৩ কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- এক কোম্পানির শেয়ার ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর
- আর্সেনাল বনাম নটিংহাম ফরেস্ট: লাইভ দেখার উপায় ও সময়সূচি
- চলছে বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচ: লাইভ দেখুন এখানে