ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০ আশ্বিন ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

বিদেশি বিনিয়োগে বেক্সিমকোর ১৫ কারখানা: শেয়ারবাজারে আশার আলো!

শেয়ারনিউজ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৫ ১৫:৩০:০০
বিদেশি বিনিয়োগে বেক্সিমকোর ১৫ কারখানা: শেয়ারবাজারে আশার আলো!

দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যাওয়ার আলোচনার মধ্যেই সুখবর নিয়ে এসেছে বেক্সিমকো গ্রুপ। জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদের সহযোগিতায় গ্রুপের অধীনে ১৫টি নতুন কারখানা স্থাপনের ঘোষণা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি করেছে। এই উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রকল্পটি ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় ৩৮০ কোটি টাকা নিট মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, যা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি এবং শেয়ারবাজার উভয়ের জন্যই নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে।

বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কেন্দ্রে বেক্সিমকো

গত ২২ সেপ্টেম্বর (২০২৫) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)-কে পাঠানো এক চিঠিতে বেক্সিমকো গ্রুপ নিশ্চিত করেছে যে, তাদের ১৫টি কারখানা স্থাপনে জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীরা যৌথভাবে কাজ করবে। এই ঘোষণা প্রকাশের পর বেক্সিমকো ছাড়া গ্রুপের অন্য দুটি তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারদামে ইতিবাচক সাড়া দেখা গেছে। যদিও বেক্সিমকো লিমিটেড এখনো ফ্লোর প্রাইসে অবস্থান করছে, তবে সম্প্রতি ব্লক মার্কেটে এর শেয়ার লেনদেনে কিছুটা নড়াচড়া দেখা যাচ্ছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান আগ্রহের ইঙ্গিত দেয়।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বেক্সিমকো লিমিটেড একটি চিঠির মাধ্যমে ১৮ সেপ্টেম্বর প্রথম আলো অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত “বেক্সিমকোর ১৫টি কারখানা চালু করতে জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসছে বিনিয়োগ” শীর্ষক সংবাদটি সত্য বলে নিশ্চিত করেছে। কোম্পানিটি আশা করছে, এই নতুন বিনিয়োগ তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে আরও প্রসারিত করবে এবং এর আর্থিক ভিত্তিকে শক্তিশালী করবে। যদি আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যেই কারখানাগুলো পুরোদমে উৎপাদন শুরু করতে পারে, তবে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে বলে তারা আশাবাদী।

জাতীয় অর্থনীতিতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব

বেক্সিমকোর এই বৃহৎ আকারের বিনিয়োগ কেবল তাদের নিজস্ব লাভের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং জাতীয় অর্থনীতিতেও এর সুদূরপ্রসারী ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। ১৫টি নতুন কারখানা চালু হলে হাজার হাজার নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে, যা দেশের ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব কমাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। এর পাশাপাশি, এই বিদেশি বিনিয়োগ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে শক্তিশালী করবে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করবে। বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ যখন একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে, তখন বেক্সিমকোর এই উদ্যোগ একটি ব্যতিক্রমী এবং অনুপ্রেরণামূলক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

শেয়ারবাজারের জন্য এক ইতিবাচক বার্তা

বিনিয়োগ বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বেক্সিমকোর এই ধরনের একটি বড় প্রকল্প পুরো শেয়ারবাজারের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা বহন করছে। এটি কেবল বেক্সিমকো নয়, বরং সামগ্রিকভাবে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে সাহায্য করবে। দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি যখন আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়, তখন তা অন্যান্য ছোট-বড় কোম্পানির জন্যও অনুসরণীয় হয়ে ওঠে। বাজারের স্থিতিশীলতা এবং দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়নের জন্য এমন বড় বিনিয়োগের খবর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা এবং বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশের প্রতি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ পুনরায় প্রমাণ করে।

এই নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে বেক্সিমকো গ্রুপ দেশের শিল্প খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে এবং একই সাথে দেশের শেয়ারবাজারেও নতুন প্রাণ সঞ্চার করছে, যা ভবিষ্যতে আরও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আব্দুর রহিম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ