ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ২ কার্তিক ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

বোর্ড চ্যালেঞ্জ ২০২৫: আপনার HSC খাতা কি আবার নতুন করে দেখা হবে? নম্বর বাড়ে যে ৪ কারণে!

শিক্ষা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১৭ ১৬:৩০:০৮
বোর্ড চ্যালেঞ্জ ২০২৫: আপনার HSC খাতা কি আবার নতুন করে দেখা হবে? নম্বর বাড়ে যে ৪ কারণে!

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের পরপরই শুরু হয়ে গেছে খাতা পুনঃনিরীক্ষণ বা বোর্ড চ্যালেঞ্জের আবেদন প্রক্রিয়া। ফল নিয়ে অসন্তুষ্ট পরীক্ষার্থীদের মনে এখন একটাই জিজ্ঞাসা—বোর্ড চ্যালেঞ্জ করলে কি আমার খাতা আবার নতুন করে দেখা হবে?

পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে বোর্ড চ্যালেঞ্জ নিয়ে একটি বড় ভুল ধারণা প্রচলিত আছে যে, এই প্রক্রিয়ায় উত্তরপত্রের মান বা লেখা বিচার করে নতুন করে নম্বর দেওয়া হয়। তবে শিক্ষা বোর্ডগুলো বারবার স্পষ্ট করেছে যে, এই প্রক্রিয়াটি হলো 'পুনঃনিরীক্ষণ' (Re-scrutiny), কোনো অবস্থাতেই এটি 'পুনর্মূল্যায়ন' (Re-evaluation) নয়।

অর্থাৎ, চ্যালেঞ্জ করলে আপনার উত্তরপত্র নতুন করে কাটা হয় না বা উত্তরের মানের ওপর ভিত্তি করে নম্বর পরিবর্তন করা হয় না।

তাহলে নম্বর বাড়ে কেন? জানুন সেই ৪ কারণ

বোর্ড চ্যালেঞ্জের মাধ্যমে উত্তরপত্রটি একাধিক অভিজ্ঞ নিরীক্ষক দ্বারা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করা হয়। এই যাচাই বা নিরীক্ষণে নম্বর সংক্রান্ত চারটি প্রধান ভুল বা অসঙ্গতি খুঁজে বের করা হয়, যার ফলেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীর ফল পরিবর্তিত হয় বা নম্বর বাড়ে।

আরও পড়ুন: এইচএসসি বোর্ড চ্যালেঞ্জ ২০২৫ শুরু: প্রতি বিষয়ে ফি ১৫০ টাকা, আবেদন করবেন যেভাবে

নম্বর বাড়ার সেই ৪টি প্রধান কারণ হলো:

১. নম্বর যোগে ভুল (Error in Summation):

পরীক্ষক আপনার উত্তরপত্রের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে যে নম্বরগুলো দিয়েছেন, সেগুলোর মোট যোগফল সঠিকভাবে করা হয়েছে কি না, তা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পুনরায় যাচাই করা হয়। যোগফল করার সময় অনিচ্ছাকৃত ভুল হওয়ার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি থাকে, যা নম্বর বৃদ্ধির মূল কারণ।

২. অদেখা উত্তর বা নম্বর দেওয়া বাদ পড়া:

উত্তরপত্রের ভেতরের কোনো একটি নির্দিষ্ট প্রশ্নের উত্তর পরীক্ষকের চোখ এড়িয়ে গেছে কি না বা উত্তরটি দেখা হলেও কোনো নম্বর দেওয়া হয়নি কি না, তা পরীক্ষা করা হয়। যদি এমন কোনো উত্তর পাওয়া যায়, তবে নিয়মানুযায়ী সেটির সঠিক নম্বর প্রদান করা হয়।

৩. ডাটা এন্ট্রি বা কোডিংয়ের ভুল:

পরীক্ষক কর্তৃক প্রদত্ত নম্বর প্রধান নম্বরপত্রে বা বোর্ডের কেন্দ্রীয় ডাটাবেজে এন্ট্রি (ইনপুট) করার সময় কোনো ভুল হয়েছে কি না, তা যাচাই করা হয়। অনেক সময় হাতে লেখা নম্বর ডিজিটাল সিস্টেমে তোলার সময় সামান্য অসঙ্গতি দেখা দিতে পারে, যা নিরীক্ষণের মাধ্যমে সংশোধন করা হয়।

৪. প্রাপ্ত নম্বর ঠিকমতো বসানো হয়েছে কিনা:

উত্তরপত্রের প্রতিটি অংশে প্রদত্ত নম্বরগুলো চূড়ান্ত OMR শিটে বা বোর্ডের নম্বরপত্রে সঠিকভাবে স্থানান্তর করা হয়েছে কি না, তা যাচাই করা হয়। নম্বর স্থানান্তরের সময় ভুলবশত কম নম্বর বসানো হলে তা সংশোধন করা হয়।

সংক্ষেপে প্রক্রিয়ার ফলাফল

বোর্ড চ্যালেঞ্জ প্রক্রিয়ায় আপনার উত্তরপত্রের গুণগত মান বা উত্তরের সঠিকতা বিচার করা হয় না। শুধুমাত্র নম্বর সংক্রান্ত এই যান্ত্রিক ও মানবসৃষ্ট ভুলগুলোই সংশোধন করা হয়।

পুনঃনিরীক্ষণে কোনো অসঙ্গতি ধরা পড়লে, সংশোধিত নম্বর বোর্ডের ডাটাবেজে যুক্ত করে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। উল্লেখ্য, এই প্রক্রিয়ায় সাধারণত কারও নম্বর কমার কোনো সুযোগ থাকে না; নম্বর হয় বাড়ে, নয়তো অপরিবর্তিত থাকে।

যেহেতু এই প্রক্রিয়ায় শুধুমাত্র ভৌত বা গাণিতিক ভুলগুলো সংশোধন করা হয়, তাই পরীক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস থাকলে এবং নম্বর প্রাপ্তিতে সন্দেহ থাকলে অবশ্যই বোর্ড চ্যালেঞ্জের সুযোগ নেওয়া উচিত।

তানভির ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ