ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আরও ১–২ বছর থাকবে: সাবেক সেনাপ্রধান 

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২১ ১৪:৪৭:৩৮
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আরও ১–২ বছর থাকবে: সাবেক সেনাপ্রধান 

সাবেক সেনাপ্রধান ইকবাল করিম ৫ বছরের পূর্বাভাস: আসছে ৩টি রাজনৈতিক দৃশ্যপট, দেশজুড়ে বিভ্রান্তি ও অস্থিরতার শঙ্কা

বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান ইকবাল করিম দেশের আগামী পাঁচ বছরের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে একটি নিজস্ব ও গুরুত্বপূর্ণ বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছেন। "আগামী পাঁচ বছরে আমরা কোথায় যাচ্ছি?" শিরোনামের ওই পোস্টে তিনি ৫ আগস্টের পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহকে ভিত্তি ধরে তিনটি সম্ভাব্য রাজনৈতিক দৃশ্যপট তুলে ধরেছেন। তার মতে, আগামী পাঁচ বছর দেশকে "বিভ্রান্তি, অস্থিরতা, প্রতিবাদ, আন্দোলন, হরতাল-অবরোধ, সহিংসতার" মধ্য দিয়ে যেতে হবে, যেখানে "পঙ্গু অর্থনীতি দরিদ্রদের আরও বিপদ ফেলবে" এবং বাংলাদেশ সামাজিক-অর্থনৈতিক সূচকে ক্রমাগত পেছাতে থাকবে।

আগামী পাঁচ বছরের জন্য তিনটি সম্ভাব্য দৃশ্যপট

সাবেক সেনাপ্রধানের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, বাংলাদেশের আগামী পাঁচ বছরের রাজনীতি নিম্নলিখিত তিনটি প্রধান ধারায় প্রবাহিত হতে পারে:

১. বিএনপি'র ক্ষমতা আরোহণ ও চ্যালেঞ্জ:

প্রথম দৃশ্যপটে বলা হয়েছে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আরও এক থেকে দুই বছর ক্ষমতায় থাকবে। এরপরে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে বিএনপির ক্ষমতা আরোহণের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বিএনপি পুরো মেয়াদ শেষ করতে পারবে কি না, তা দুটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করবে—প্রথমত, ভারতের কৌশলগত অবস্থান এবং দ্বিতীয়ত, আওয়ামী লীগের প্রত্যাবর্তন ও শক্তি সঞ্চয়ের ওপর। তিনি সতর্ক করে বলেন, বিএনপি যদি তার বিরুদ্ধে পরিচালিত "পরিকল্পিত সহিংসতা-বিরোধী আন্দোলন দমনে ব্যর্থ হয়," তবে দেশে '১/১১-র পুনরাবৃত্তি' ঘটতে পারে।

২. ঐকমত্যের জাতীয় সরকার গঠন (ড. ইউনুসকে প্রেসিডেন্ট):

দ্বিতীয় দৃশ্যপটে নির্বাচন না হয়েই অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় থাকবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে অদক্ষতা/আইন-শৃঙ্খলা অবনতির কারণে অথবা ছাত্রচাপের মুখে সংস্কার-মিশনে হাত দিলে। সেক্ষেত্রে দুর্বল মন্ত্রীরা বদলাবেন এবং ড. ইউনুসকে প্রেসিডেন্ট করে ঐকমত্যের একটি জাতীয় সরকার গঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

৩. সংবিধান প্রণয়ন ও গণভোটের বছর:

তৃতীয় এবং সবচেয়ে ক্ষীণ দৃশ্যপটে সংবিধান বদলের গুঞ্জন উচ্চকিত হওয়ার কথা বলা হয়েছে। যদি এই পথে অগ্রসর হওয়া হয়, তবে আগামী পাঁচটি বছর গণপরিষদের নির্বাচন, সংবিধান প্রণয়ন ও গণভোটে ব্যয় হবে।

বিশ্লেষণের ভিত্তি ও প্রেক্ষাপট

ইকবাল করিম স্পষ্ট করেছেন যে এই বিশ্লেষণ সম্পূর্ণভাবে তাঁর নিজস্ব চিন্তা, অভিজ্ঞতা ও বাস্তব পর্যবেক্ষণের ওপর নির্ভর করে রচিত। তাঁর এই পূর্বাভাসের মূল ভিত্তি গড়ে উঠেছে ৫ আগস্টের পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ এবং তার বহুমাত্রিক সামাজিক-রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়ার প্রেক্ষাপটে।

তিনি উল্লেখ করেন, 'জুলাই সনদ', সাংবিধানিক সংস্কার এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচন—সবকিছুই আজ ৫ আগস্টের ছাত্র আন্দোলনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাবে নতুন দিকনির্দেশনা পেয়েছে।

পেশাদার নিরপেক্ষতার দাবি

সাবেক এই সেনাপ্রধান তাঁর লেখায় দাবি করেন, তাঁর এই বিশ্লেষণ রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান কিংবা বিভিন্ন মতাদর্শের সঙ্গে নাও সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে পারে—যা গণতান্ত্রিক সমাজে স্বাভাবিক বিষয়। তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন বিষয়টি পেশাদার নিরপেক্ষতা ও বাস্তব মূল্যায়নের আলোকে উপস্থাপন করতে। তাঁর মতে, এখানে ব্যক্তিগত বিশ্বাস, দলীয় আনুগত্য বা রাজনৈতিক পক্ষপাতের কোনো প্রভাব নেই; শুধুমাত্র ঘটনার যৌক্তিক বিশ্লেষণই এই লেখার মূলভিত্তি।

তানভির ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ