ঢাকা, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০ কার্তিক ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

ষোলো বছরের দীর্ঘ বিরতি শেষে নিজেদের হারানো ক্ষমতা ফিরে পেল সেনাবাহিনী

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৫ ১১:৩৭:৩৬
ষোলো বছরের দীর্ঘ বিরতি শেষে নিজেদের হারানো ক্ষমতা ফিরে পেল সেনাবাহিনী

দীর্ঘ ১৬ বছর প্রতীক্ষার পর অবশেষে নির্বাচনী পরিস্থিতিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মর্যাদা পুনরুদ্ধার করল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। অন্তর্বর্তী সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন করা হয়েছে, যার ফলস্বরূপ এখন থেকে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা পুলিশ কর্মকর্তাদের সমতুল্য ক্ষমতা ব্যবহার করে নির্বাচনী অপরাধের দায়ে যে কাউকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করতে পারবেন।

এই সংশোধিত বিধান অনুযায়ী, প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগ—অর্থাৎ সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী—এখন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় পুনরায় অন্তর্ভুক্ত হলো। এই পরিবর্তনের মাধ্যমে নির্বাচনী কার্যক্রমে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের কার্যকরভাবে অংশগ্রহণের পথ প্রশস্ত হলো।

ক্ষমতা রদ ও পেছনের যুক্তি

এই বিধানটি প্রথম কার্যকর হয়েছিল ২০০১ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে। তখন আরপিও সংশোধন করে একটি অধ্যাদেশ আকারে সেনাবাহিনীকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।

তবে, ২০০৮ সালে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর এই বিধানটি বাতিল করে দেয়। তাদের সেই সময়ের যুক্তি ছিল যে সামরিক বাহিনীর হাতে এমন ক্ষমতা থাকলে তা 'ভোট লুট'-এর পথে বাধা সৃষ্টি করবে। সেই সময় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞা থেকে প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগকে বাদ দেওয়া হয়। এই বাতিলের ফলে একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, যেখানে স্থানীয় সরকার নির্বাচন সহ যেকোনো ভোটেও একজন সাধারণ আনসার সদস্যের চেয়ে সেনা সদস্যের ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছিল। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের পরই আওয়ামী লীগ সরকার পূর্বের সেই অধ্যাদেশটি বাতিল করে সামরিক বাহিনীকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বাইরে রাখে।

নির্বাচন কমিশনের ব্যাখ্যা

নির্বাচন কমিশনের পক্ষে কমিশনার আব্দুর রহমান এল মাসুদ এই সংশোধনীকে যুক্তিযুক্ত বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, “আমাদের সশস্ত্র বাহিনী দেশের মানুষের বিশ্বাস ও আস্থার প্রতীক। জনগণ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল মনে করে, নির্বাচনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা হিসেবে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে সহায়ক হবে। এজন্যই আমরা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২ সংশোধন করে সশস্ত্র বাহিনীকে পুনরায় আইনের সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছি।”

কমিশনার মাসুদ আরও নিশ্চিত করেন যে এই সংশোধনের ফলে এখন থেকে নির্বাচনী আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর কার্যকারিতা বৃদ্ধি পাবে, কারণ তাদের আর অন্য কারও নির্দেশের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুণতে হবে না।

তানভির ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ