ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

MD Zamirul Islam

Senior Reporter

দলিল রেজিস্ট্রেশনে বড় পরিবর্তন! নতুন নিয়ম আসছে ২০২৬-এ

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৪ ২২:২২:৩৪
দলিল রেজিস্ট্রেশনে বড় পরিবর্তন! নতুন নিয়ম আসছে ২০২৬-এ

ভূমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা: ২০২৬-এর শুরুতে দলিল নিবন্ধনে কঠোর বিধি, কমবে জনভোগান্তি

জনভোগান্তি লাঘবে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে ২০২৬ সালের পয়লা জানুয়ারি থেকে সারাদেশে দলিল রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় আমূল সংস্কার আনছে ভূমি মন্ত্রণালয়। সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়গুলোতে দালালদের দৌরাত্ম্য, দলিল লেখকদের সিন্ডিকেটের সৃষ্টি ও অতিরিক্ত ফি আদায়ের পুরনো জটিলতা নিরসনে এই নতুন কাঠামো প্রণয়ন করা হয়েছে।

ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন থেকে সম্পত্তির ধরন এবং দলিলের প্রকৃতি অনুযায়ী নিবন্ধন ফি স্পষ্টভাবে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে। এই নির্ধারিত ফি-এর তালিকা প্রতিটি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে বাধ্যতামূলকভাবে প্রদর্শন করতে হবে। এতে স্ট্যাম্প খরচ, রেজিস্ট্রেশন মাশুল, আইটি সার্ভিস চার্জ—সব মিলিয়ে মোট ব্যয়ের পূর্ণাঙ্গ হিসাব নাগরিকরা কাজ শুরু করার আগেই জেনে নিতে পারবেন।

লাইসেন্স ছাড়া নয়, সিন্ডিকেটে রাশ টানতে কঠোরতা

দীর্ঘকাল ধরে দলিল লেখকদের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট ভূমি মালিকদের কাছ থেকে ইচ্ছেমতো 'অগণিত হিসাব' দেখিয়ে সরকারের নির্ধারিত হারের চেয়ে বহুগুণ বেশি অর্থ আদায় করত। অভিযোগ ছিল, প্রতিরোধকারী পক্ষকে বিভিন্ন অজুহাতে অযথা হয়রানি করা হতো। এই অনিয়ম ঠেকাতে সরকার ২০১৪ সালের দলিল লেখক লাইসেন্স বিধিমালার কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে যাচ্ছে। এখন থেকে কেবল সরকার অনুমোদিত লাইসেন্সপ্রাপ্তরাই রেজিস্ট্রেশন কার্যালয়ে কাজ করার সুযোগ পাবেন, অন্য কেউ নয়।

অনলাইন ক্যালকুলেটরে মিলবে নির্ভুল ব্যয়

রেজিস্ট্রেশন ফি সংক্রান্ত বিভ্রান্তি দূর করতে ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে একটি বিশেষ "দলিল রেজিস্ট্রেশন ক্যালকুলেটর" অ্যাপও চালু করা হয়েছে। ভূমি মালিকেরা অ্যাপটি ডাউনলোড করে জমির শ্রেণী, অবস্থান, পরিমাণ এবং মৌজা সংক্রান্ত তথ্য দিলেই প্রকৃত ও নির্ভুল ব্যয় স্বয়ংক্রিয়ভাবে জেনে নিতে পারবেন।

নিবন্ধন আবশ্যিক, সচেতনতা প্রচারে সরকার

সরকার ভূমি মালিকদের সতর্ক করছে যে ১৯০৮ সালের নিবন্ধন আইনের ১৭ ধারা অনুসারে জমি ক্রয়-বিক্রয়ের যেকোনো নথি নিবন্ধিত হওয়া আবশ্যিক। নিবন্ধনহীন দলিলের ভিত্তিতে মালিকানা দাবি বা ভূমি রেকর্ড সংশোধন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

এছাড়াও, কোনও দলিল লেখক বা অফিস সংশ্লিষ্ট কেউ বাড়তি অর্থ দাবি করলে বা প্রতারণা করলে, ভূমির মালিকেরা সরাসরি জেলা রেজিস্ট্রারের কাছে লিখিত নালিশ জানাতে পারবেন। পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হটলাইনেও অভিযোগ দায়েরের সুযোগ রাখা হয়েছে।

কর্তৃপক্ষের বিশ্বাস, এই নতুন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দীর্ঘদিনের দালালচক্রের প্রভাব উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে, ব্যয়ের ক্ষেত্রে পূর্ণ স্বচ্ছতা আসবে এবং জনগণ প্রতারণার শিকার হওয়া থেকে সুরক্ষিত থাকবে। নতুন আইন ও ব্যয় কাঠামো দেশের ভূমি খাতে একটি মৌলিক পরিবর্তন নিয়ে আসবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

আল-মামুন/

ট্যাগ: ভূমি মন্ত্রণালয় দলিল রেজিস্ট্রেশন Ministry of Land Bangladesh Deed Registration দলিল নিবন্ধন Land Registration সাব-রেজিস্ট্রি অফিস দলিল রেজিস্ট্রেশন নতুন নিয়ম দলিল রেজিস্ট্রেশন পরিবর্তন Deed Registration New Rules Land Registration 2026 ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি ২০২৬ নতুন নিয়ম New Rules Jan 1 2026 দলিল রেজিস্ট্রেশন ফি রেজিস্ট্রেশন খরচ কত দলিল খরচ ক্যালকুলেটর অনলাইন দলিল ক্যালকুলেটর দলিল রেজিস্ট্রেশন ফি ক্যালকুলেটর Deed Registration Fee Land Registration Cost Calculator রেজিস্ট্রেশন ফির স্বচ্ছতা স্ট্যাম্প খরচ দালাল চক্রের অবসান দলিল লেখক সিন্ডিকেট সাব-রেজিস্ট্রিতে দালাল মুক্ত দলিল লেখক লাইসেন্স বিধিমালা দলিল লেখক লাইসেন্স ২০১৪ Anti-Syndicate Law BD দলিল রেজিস্ট্রেশন আইন ১৯০৮ রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক বাধ্যতামূলক দলিল নিবন্ধন আনরেজিস্টার্ড দলিল মালিকানা দাবি বাতিল ভূমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা District Registrar জেলা রেজিস্ট্রার দুদকের অভিযোগ

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ