ঢাকা, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২

MD Zamirul Islam

Senior Reporter

২০২৬ সালের জুন এর মধ্যে ৬ ধরনের দলিল বাতিল করবে সরকার

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১০ ১২:৩৯:৪২
২০২৬ সালের জুন এর মধ্যে ৬ ধরনের দলিল বাতিল করবে সরকার

ভূমি সংক্রান্ত প্রতারণা ও জটিলতা নিরসনে এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ভূমি ব্যবস্থাপনাকে সম্পূর্ণরূপে দুর্নীতিমুক্ত ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে সুনির্দিষ্ট ছয় ক্যাটাগরির দলিল অবৈধ ঘোষণা করা হবে।

জুলাই থেকে সম্পূর্ণ অনলাইন ভূমি রেকর্ড

এই আমূল পরিবর্তনের লক্ষ্য হলো ভূমির রেকর্ডে স্বচ্ছতার নিশ্চয়তা দেওয়া। ভূমি মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের সূত্রমতে, যে কোনো দলিল যা প্রতারণা, জালিয়াতি অথবা গুরুতর আইনগত ত্রুটির শিকার—সেটি তার বৈধতা হারাবে।

এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরপরই, অর্থাৎ ২০২৬ সালের জুলাই মাস থেকে দেশজুড়ে চালু হবে ‘ডিজিটাল ভূমিজরি বিডিএস’ (BDLand System)। এই সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক প্ল্যাটফর্মটি কেবলমাত্র পরীক্ষিত ও আইনসিদ্ধ দলিলসমূহকে ডিজিটালি সংরক্ষণ করবে, যার মাধ্যমে দ্বৈত মালিকানা ও ভুয়া দলিলের সুযোগ বিলীন হবে।

যে ৬ প্রকারের দলিল অকার্যকর করা হবে

সরকার কর্তৃক চিহ্নিত এই ছয়টি প্রকারের দলিল পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জুন ২০২৬-এর মধ্যে অকার্যকর করা হবে:

১. প্রতারণামূলক হেবা (টিপসসহীহ): শারীরিক বা মানসিকভাবে দুর্বল/অক্ষম ব্যক্তিকে কাজে লাগিয়ে অথবা জালিয়াতির মাধ্যমে সম্পাদিত 'টিপসসহীহ' যুক্ত হেবা দলিলগুলো বাতিল করা হবে।

২. উত্তরাধিকার সীমা লঙ্ঘনকারী ওসিয়তনামা: সম্পত্তির মোট পরিমাণের এক-তৃতীয়াংশের বেশি অংশ যদি উত্তরাধিকারী ব্যতিরেকে অন্য কারো নামে উইল করা হয়, তবে সেই ওসিয়তনামা আইনত অবৈধ হিসেবে পরিগণিত হবে।

৩. নথিভুক্ত না হওয়া মালিকানা দাবি: যে সকল দলিলের মাধ্যমে যথাযথ আইনি রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই জমির ওপর স্বত্ব দাবি করা হয়েছে, সেগুলোর কোনো আইনগত ভিত্তি থাকবে না।

৪. ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে সৃষ্ট দলিল: নকল বা ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে তৈরি যেকোনো দলিল চিহ্নিত করে বাতিল করা হবে এবং এর ফলে অর্জিত মালিকানাও স্বয়ংক্রিয়ভাবে রহিত হয়ে যাবে।

৫. রাজনৈতিক/পেশিশক্তি প্রয়োগে অর্জিত দলিল: রাজনৈতিক প্রভাব অথবা পেশিশক্তি ব্যবহার করে জোরপূর্বক জমি দখল বা মালিকানা অর্জনের প্রমাণ মিললে সেই দলিলও যাচাই সাপেক্ষে বাতিল ঘোষণা করা হবে।

৬. যৌথ সম্পত্তিতে অতিরিক্ত বিক্রি প্রমাণিত হলে: পারিবারিক বা যৌথ সম্পত্তিতে নিজ অংশের চেয়ে বেশি জমি বিক্রির ঘটনা প্রমাণিত হলে সেই দলিলও বাতিল হবে। সেক্ষেত্রে, আদালতের নির্দেশে প্রকৃত ওয়ারিশদের অংশ তাদের কাছে ফেরত দেওয়া হবে।

ভূমি বিশেষজ্ঞদের অভিমত, এই যুগান্তকারী পদক্ষেপ কার্যকর হলে দেশে প্রচলিত ভূমি জালিয়াতি, ভুয়া দলিল তৈরি এবং উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বহু বছরের পুরনো বিরোধ অনেকাংশে নিষ্পত্তি হবে। ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৬ সালের জুলাই থেকে পুরোপুরি অনলাইনভিত্তিক ভূমি রেকর্ড ও দলিল ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা কার্যকর করার লক্ষ্যে জুন মাসের মধ্যেই পুরো প্রক্রিয়াটি শেষ করা হবে।

প্রায়শ জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQ) ও উত্তর

১. সরকার মোট কয়টি দলিল বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছে?

সরকার মোট ছয় ধরনের দলিল সম্পূর্ণভাবে বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছে।

২. এই দলিলগুলো বাতিলের সময়সীমা কখন নির্ধারণ করা হয়েছে?

ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই দলিলগুলো বাতিলের প্রক্রিয়া ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে শেষ করা হবে।

৩. নতুন ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থা কবে থেকে চালু হবে?

বাতিল প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর ২০২৬ সালের জুলাই মাস থেকে সারাদেশে ‘ডিজিটাল ভূমিজরি বিডিএস (BDLand System)’ পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা হবে।

৪. কেন সরকার এই পদক্ষেপ নিচ্ছে?

ভূমি ব্যবস্থাপনাকে স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ও জালিয়াতিমুক্ত করতেই সরকার এই বড় পদক্ষেপ নিচ্ছে।

৫. ওসিয়তনামা দলিল বাতিলের ক্ষেত্রে কোন আইনগত সীমা লঙ্ঘন করা হয়েছে?

আইন অনুযায়ী মোট সম্পত্তির সর্বোচ্চ এক-তৃতীয়াংশ ওয়ারিশের বাহিরে কাউকে ওসিয়ত করা যায়। এই সীমা লঙ্ঘন করে করা দলিলগুলো অবৈধ বলে গণ্য হবে।

৬. নতুন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে কোন দলিলগুলো সংরক্ষিত থাকবে?

নতুন প্ল্যাটফর্ম ‘ডিজিটাল ভূমিজরি বিডিএস’-এ শুধুমাত্র যাচাইকৃত ও বৈধ দলিলগুলো অনলাইনে সংরক্ষিত থাকবে।

আল-মামুন/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

আজ ৮ কোম্পানি গুরুত্বপূর্ণ বোর্ড সভা: আসছে ইপিএস

আজ ৮ কোম্পানি গুরুত্বপূর্ণ বোর্ড সভা: আসছে ইপিএস

বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কেন্দ্রে আজ আটটি ভিন্ন কোম্পানি। ঘোষণা অনুযায়ী, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এই প্রতিষ্ঠানগুলোর পর্ষদ সভা (বোর্ড সভা) আজকের দিনটিতে (১০... বিস্তারিত