একনজরে দেখেনিন বিশ্বকাপের স্মরণীয় পাঁচ গোল

কিংবা আর্জেন্টিনার সঙ্গেই ১৯৯৮ বিশ্বকাপে মাইকেল ওয়েনের সেই জাদুকরী গোল। বিশ্বকাপের এ রকম স্মরণীয় কিছু গোল নিয়ে এই আয়োজন।
ডিয়েগো ম্যারাডোনা : আর্জেন্টিনা বনাম ইংল্যান্ড, ১৯৮৬
মেক্সিকোর আজটেকা স্টেডিয়ামের ১৯৮৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাঁর প্রথম গোলটি নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। কিন্তু সেই ‘হ্যান্ড অব গড’ গোলের রেশ ফুরিয়ে যেতে না যেতেই তিনি দ্বিতীয় যে গোলটি করেন, সেটিই তাঁকে ফুটবল ইতিহাসের অমরত্ব দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। ইংল্যান্ডকে চোখের জলে ভাসানো সেই নজরকাড়া গোলটিই ফিফার জরিপে শতাব্দীর সেরা গোল নির্বাচিত হয়েছে, যার নামই হয়ে গেছে ‘গোল অব দ্য সেঞ্চুরি’। চোখ বুজেই তাই বল যায়, বিশ্বকাপ ফুটবলের সেরা গোলটির গর্বিত মালিক ডিয়েগো ম্যারাডোনা।
১৯৮৬ সালের ২২ জুনের এ ম্যাচে দ্বিতীয়ার্ধের ৯ মিনিটে এ কীর্তিটা গড়েছিলেন ম্যারাডোনা। নিজেদের সীমানার মধ্যে হেক্টর এনরিকের দেওয়া পাস থেকে বল পেয়ে মাত্র ১০ সেকেন্ডে ৬০ মিটার পথ পাড়ি দেন তিনি। পথে একে একে হডল, রিড, স্যানসম বুচার আর ফেনউয়িককে কাটিয়ে মুখোমুখি হন গোলরক্ষক পিটার শিলটনের।
দারুণ এক ডজে তাঁকেও বোকা বানিয়ে বাঁ পায়ের শটে জালে ঠেলে দেন বলটি। তিনি যখন বল নিয়ে ছুটছিলেন, তখন সবাই ধরে নিয়েছিল, এই বুঝি ম্যারাডোনা বলটি ভালদানোর দিকে মাইনাস করছেন। ‘আমি চাইছিলাম, বলটা ওকে (ভালদানো) দিতে। পারিনি। ইংলিশরা এমনভাবে ঘিরে ফেলছিল যে বল পাসের সুযোগ পেলাম না। তাই ফিনিশিংটা নিজেকেই করতে হলো’—ম্যারাডোনা পরে এভাবেই ব্যাখ্যা করেছেন। অন্য জগৎ থেকে নিশ্চয়ই কাতার বিশ্বকাপে এ রকম গোল দেখতে চাইবেন আর্জেন্টাইন প্রয়াত এই কিংবদন্তি।
মাইকেল ওয়েন : ইংল্যান্ড বনাম আর্জেন্টিনা, ১৯৯৮
১৮ বছর বয়সী এক তরুণের পক্ষে ইংল্যান্ড-আর্জেন্টিনা ম্যাচের প্রবল চাপ সহ্য করা কঠিন। মাইকেল ওয়েন সেই চাপ শুধু সহ্যই করেননি, ১৯৯৮ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে চোখ-ধাঁধানো একটি গোলও করেছিলেন। ইংল্যান্ডকে ম্যাচ জেতাতে না পারলেও সেই গোল ফিফার জরিপে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেরার স্বীকৃতি পেয়েছে। বিরতির আগে ডেভিড বেকহামের পাস থেকে বলটি যখন রিসিভ করেন, ওয়েন তখন প্রায় মধ্যমাঠে।
সামনে ছিলেন আর্জেন্টিনার দুজন মিডফিল্ডার, নজরকাড়া ড্রিবলিংয়ে তাঁদের যখন ফাঁকি দিচ্ছেন ওয়েন, তখনো তাঁর গতি এমন কিছু চোখে পড়ার মতো ছিল না। কিন্তু প্রতিপক্ষের ডি-বক্সের কাছাকাছি এসে তিনি হঠাৎ করেই গতি এমন বাড়িয়ে দেন যে বিশ্বের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার রবার্তো আয়ালাও বোকা বনে যান। খানিকটা ডান দিকে ঝুঁকে আরো কিছু দূর এগিয়ে আর্জেন্টাইন কিপার কার্লোস রোয়ার মাথার ওপর দিয়ে বলটি পোস্টে জড়িয়ে দেন ওয়েন। ইংল্যান্ড এ গোলে এগিয়ে গেলেও অনেক নাটকীয়তার পর শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে হেরে যায় ম্যাচটি।
পেলে : ব্রাজিল বনাম সুইডেন, ১৯৫৮
পেলে যখন মাঠ মাতাতেন, তখন হালের হাইটেক বল ছিল না। ছিল না টেলিভিশন রিপ্লের ব্যবস্থাও। তবু সেই ১৯৫৮ বিশ্বকাপের বৃষ্টিস্নাত ফাইনালে ভেজা বলে তাঁর অসাধারণ গোলটি চোখে ভাসে যারা দেখেছে তাদের। ওই ম্যাচে দুটি গোল করেছিলেন পেলে, সেরা পাঁচের ৩ নম্বরে থাকছে তাঁর প্রথম গোলটি। প্রথমে গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়লেও ম্যাচের ৫৫ মিনিটে পেলে যখন এই গোল করেন, ততক্ষণে ব্রাজিল এগিয়ে গেছে ২-১ গোলে।
সুইডিশদের সীমানার ভেতর নিলটন স্যান্টোসের একটি ক্রস বুক দিয়ে রিসিভ করেন পেলে। সামনে দাঁড়ানো ছিলেন ডিফেন্ডার সিগ পারলিন, তিনি কিছু বুঝে ওঠার আগেই পেলে আলতোভাবে বলটি ক্লিক করে তাঁর মাথার ওপর দিয়ে ছোট ডি-বক্সে ফেলেন। তারপর মুহূর্তের মধ্যে বুক হিম করা সাইড ভলিতে ফাঁকি দেন গোলরক্ষক সভেনসনকে। ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ৫-২ গোলে জিতে প্রথম বিশ্ব শিরোপার স্বাদ পেয়েছিল পেলের দল।
ডিয়েগো ম্যারাডোনা : আর্জেন্টিনা বনাম বেলজিয়াম, ১৯৮৬
আগের ম্যাচেই বিশ্বকাপ ইতিহাসের সেরা গোলটি করেছিলেন তিনি। সবচেয়ে বিতর্কিত গোলটিও। সে কারণেই অতটা লাইমলাইটে আসেনি ১৯৮৬ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে বেলজিয়ামের বিপক্ষে তাঁর অসাধারণ গোলটি। ওই ম্যাচে দুটি গোল করেছিলেন ম্যারাডোনা। বলা হচ্ছে তাঁর দ্বিতীয় গোলটির কথা।
৬৩ মিনিটের এই গোলও ম্যারাডোনার একক প্রচেষ্টারই ফসল। বেলজিয়ান গোলপোস্ট থেকে ৩০ গজ দূরে কিছুটা ফাঁকায় দাঁড়িয়ে বলটা পেয়েছিলেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। ঠিক আগের ম্যাচেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করা সেই শতাব্দীর সেরা গোলটির স্মৃতি জাগিয়ে তোলা এক দৌড়ে বেলজিয়ান ডিফেন্স লাইনে হানা দেন তিনি। দুর্দান্ত গতি ও অসাধারণ ডামিতে বেলজিয়ামের তিন ডিফেন্ডারকে পেছনে ফেলার পর বাঁ পায়ের জোরালো শটে পরাস্ত করেন অসহায় বেলজিয়ান গোলরক্ষক জা মেরি পাফকে।
গিওর্গি হ্যাজি : রোমানিয়া বনাম কলম্বিয়া, ১৯৯৪
১৯৯৪ বিশ্বকাপ তাদের সেরা সাফল্যের দেখা পেয়েছিল রোমানিয়া। দলকে কোয়ার্টার ফাইনালে নিয়ে যাওয়ার পথে সব মিলিয়ে তিনটি গোল করেছিলেন ‘কার্পেথিয়ানের ম্যারাডোনা’ খ্যাত গিওর্গি হ্যাজি। এর মধ্যেই ছিল কলম্বিয়ার বিপক্ষে গ্রুপ ম্যাচে করা তাঁর অসাধারণ গোলটিও। দারুণ গুরুত্বপূর্ণ ওই ম্যাচে তখনো কোনো গোল হয়নি।
৩৫ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে উড়ে আসা একটি বল এসে পড়ে কলম্বিয়ান সীমানার ভেতর অপেক্ষমাণ হাজির পায়ে। তাঁর মার্কার কলম্বিয়ার রাইট ব্যাক লুই হেরেরা মুহূর্তের জন্য বেখেয়াল হয়েছিলেন, সুযোগটি কাজে লাগাতে ভুল করলেন হ্যাজি। হেরেরাকে কাটিয়েই গোলপোস্টের প্রায় ৩৫ মিটার দূর থেকে তিনি অবিশ্বাস্য শট নিলেন। কলম্বিয়ার গোলরক্ষক অস্কার কর্দোভা বুঝতেই পারেননি, বলটি কিভাবে জালে গিয়ে পৌঁছাল। ওই গোলই শেষ পর্যন্ত ভাগ্য গড়ে দিয়েছিল ম্যাচের।
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেয়ারবাজারে কারসাজির চক্র: দুর্বল কোম্পানির শেয়ারের দামে অস্বাভাবিক উল্লম্ফন
- শেষ হলো মেলবোর্ন স্টার্স বনাম বাংলাদেশের মধ্যকার রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ
- এশিয়া কাপ ২০২৫: বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের স্কোয়াড জায়গা পেলেন যারা
- ৩ কোম্পানির কারখানায় ঝুলছে তালা, ক্ষোভ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের
- এশিয়া কাপ ২০২৫: তিন ওপেনার নিয়ে বাংলাদেশের চূড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা
- ভারত বনাম বাংলাদেশ : ৯০ মিনিটের খেলা শেষ, জেনে নিন ফলাফল
- রপ্তানি আয়ের ৮ হাজার কোটি টাকা গায়েব: কেয়া গ্রুপ ও চার ব্যাংককে তলব
- বদলে গেল ফোনের ডায়াল প্যাড, জানুন আসল কারণ ও আগের অবস্থায় ফেরানোর উপায়
- ভারত বনাম বাংলাদেশ: গোল, গোল, ৮০ মিনিটের খেলা শেষ
- বদলে গেল আপনার ফোনের ডায়াল প্যাড, আতঙ্ক নয় সমাধান আছে, জেনে নিন
- এশিয়া কাপ ২০২৫: বড় চমক, বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের স্কোয়াড চূড়ান্ত
- ‘ক্ষমতা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি’—ড. ইউনূস
- মালয়েশিয়া প্রবাস: যেভাবে আবেদন করবেন সম্পূর্ণ বিনা খরচে
- ভারত বনাম বাংলাদেশ: প্রথমার্ধের খেলা শেষ, জানুন সর্বশেষ ফলাফল
- গুজব না সত্য: যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা হাসিনার পদত্যাগপত্র খুঁজে পায়নি