ঢাকা, শনিবার, ২৩ আগস্ট ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২

বর্ষসেরা ইনিংস ঘোষণা

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২২ ডিসেম্বর ২৩ ১৪:১৮:১২
বর্ষসেরা ইনিংস ঘোষণা

উইজডেনের বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি ইনিংসগুলোর তালিকায় এক নম্বরে জায়গা করে নিয়েছে বিরাট কোহলির অপরাজিত ৮২ রান। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রায় হারের মুখ দেখতে বসে ভারত। কিন্তু কোহলির অতিমানবীয় ওই ইনিংসে ভর করে জয় তুলে নেয় রোহিত শর্মার দল। সে কারণে সবাইকে পেছনে ফেলে উইজডেনের এ বছরের সেরা টি-টোয়েন্টি ইনিংস কোহলির।

২৩ অক্টোবর মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভের গ্রুপ পর্বে ম্যাচে পাকিস্তানকে ৪ উইকেটে হারায় ভারত। প্রথমে ব্যাট করতে নামে পাকিস্তান। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৯ রান করে তারা। ম্যাচ জিততে শেষ বল পর্যন্ত খেলতে হয় ভারতকে।

ম্যাচের এক পর্যায়ে মাত্র ৩১ রানেই ৪ উইকেট পড়ে যায় ভারতের। সেখান থেকে দলকে টেনে তুলেন কোহলি ও হার্দিক পান্ডিয়া। এ দুজনে মিলে মাত্র ৭৮ বলে যোগ করেন ১১৩ রান। শেষ তিন ওভারে ভারতের প্রয়োজন ছিল ৪৮ রান। তখন মারকুটে মেজাজে ব্যাট করে দলকে জেতান কোহলি।

কোহলির এই ইনিংসটি মূলত সেরা হয়েছে বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে পাকিস্তানের বিপক্ষে যখন যেমন দরকার তখন তেমন ব্যাটিং করায়। শেষ দিকে যখন মাত্র ১৮ বলে ৪৮ রান দরকার তখন রানের গতি বাড়ান কোহলি। তাছাড়া আগে থেকেই রানের চাকা সচল রেখে পান্ডিয়াকে নিয়ে লড়ে যান একাই।

শেষ ৩ ওভারে যখন রান রেট দাঁড়ায় ১৬ তে, তখন ১৭তম ওভারে বল হাতে আসেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। প্রথম বলে বাউন্ডারি মেরে শুরু করেন কোহলি। ওই ওভারে আরও দুটি বাউন্ডারি মেরে মোট ১৭ রান তুলেন সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক।

১৮তম ওভারে আসেন হারিস রউফ। যিনি কিনা গোটা ম্যাচে দারুণ বোলিং করে পাকিস্তানকে জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন। এ ওভারের প্রথম ৪ বলেও দেন মাত্র ৩ রান। তাতে চাপে পড়ে যায় ভারত। তখন পরপর দুটি ছক্কা হাঁকান কোহলি। তাতে আবারও ম্যাচে ফেরে রোহিতের দল।

শেষ ওভারে যখন প্রয়োজন ছিল ১৬ রানের, তখন ৩৭ বলে ৪০ রান করা পান্ডিয়াকে তুলে নিয়ে পাকিস্তানকে ম্যাচে ফেরান মোহাম্মদ নাওয়াজ। এর পরের দুই বলে মাত্র ৩ রান খরচ করেন নওয়াজ। চতুর্থ বলটি নো বল করেন বসেন। তাতে সুবিধা পান কোহলি। ওই নো বলে ছক্কা হাঁকান কোহলি।

ছক্কা খাওয়ার পর যেন লাইন-লেন্থ হারিয়ে ফেলেন নওয়াজ। পরপর দুটি ওয়াইড দেন। তখনও ম্যাচে টানটান উত্তেজনা ছিল। সেইসাথে পঞ্চম বলে রান আউট হন দিনেশ কার্তিক। শেষ বলে ভারতের দরকার ছিল দুই রান। তখন আবারও ওয়াইড দিয়ে বসেন নওয়াজ। আর শেষ বলে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ব্যাট থেকে আসে জয়সূচক রান। রোমাঞ্চকর ম্যাচ জিতে নেয় ভারত।

ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলানো এমন ম্যাচে বীরত্বপূর্ণ খেলায় মূলত সবাইকে পেছনে ফেলেছেন কোহলি। কারণ উইজডেনের তালিকায় বাকি ইনিংসগুলো সবকটি শত রানের। শুধু মাত্র কোহলির ইনিংসটি একশ রানেরও কম।

এ তালিকায় দুইয়ে আছে সূর্যকুমার যাদবের ইনিংস। জুলাইয়ে ইংল্যান্ডের মাটিতে বেন স্টোকসদের বিপক্ষে মাত্র ৫৫ বলে ১৪ চার আর ৬ ছক্কায় ১১৭ রান করেন সূর্যকুমার। ট্রেন্ট ব্রিজের ওই ইনিংস জায়গা পেয়েছে উইজডেনের তালিকায় দুইয়ে।

তিনে আছে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটার গ্লেন ফিলিপসের রেকর্ডগড়া শতরানের ইনিংস। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই কিউই ব্যাটার যখন ব্যাট হাতে নামেন তখন নিউজিল্যান্ড ১৫ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসে। চারে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ৬৪ বলে ১০ চার আর ৪ ছক্কায় ১০৪ রানের ইনিংস। যা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চারে বা তার নিচে নেমে সেঞ্চুরি করার একমাত্র রেকর্ড।

উইজডেনের এ তালিকায় চারে স্থান পেয়েছে পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজমের ইনিংস। ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ শুরুর ঠিক আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলে পাকিস্তান। ওই সিরিজে ২২ সেপ্টেম্বরের ম্যাচে মাত্র ৬৬ বলে হার না মানা ১১০ রানের ইনিংস খেলেন পাক অধিনায়ক। যেখানে ছিল ১১ চার আর ৫ ছক্কার মার। বাবর মোহাম্মদ রিজওয়ানকে সঙ্গে নিয়ে ইংলিশদের হারিয়ে দেন ১০ উইকেটে।

তালিকায় পাঁচে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাটার ডেভিড মিলারের ইনিংস। ২ অক্টোবর ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৪৭ বল খেলে ৮ চার আর ৭ ছক্কায় ১০৬ রানের অপরাজিত ছিলেন তিনি। যদিও দল হেরে যায় ভারতের মাটিতে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ