ঢাকা, রবিবার, ২৪ আগস্ট ২০২৫, ৯ ভাদ্র ১৪৩২

বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার চতুর্থ তারকার অপেক্ষায় আছে তরুণ প্রজন্ম

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৩ জানুয়ারি ২১ ১৩:৫০:২০
বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার চতুর্থ তারকার অপেক্ষায় আছে তরুণ প্রজন্ম

বিশ্বকাপ জয়ের মতো বড় অর্জন উপকার এবং অপকার দুটিই করতে পারে। একটি সাফল্য আরও অনেক সাফল্যকে টেনে নিয়ে আসতে পারে। বিশ্বকাপ জয়ের মতো ঘটনা আগুয়ান প্রজন্মকেও দারুণভাবে উৎসাহিত করতে পারে। আবার ঘটতে পারে উল্টোটাও। সাফল্য অনেক সময় ক্লান্তিও নিয়ে আসতে পারে।

৩৬ বছরের অপেক্ষা ঘুচে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই আর্জেন্টাইনদের মন এখন তৃপ্ত। কাঙ্ক্ষিত অর্জন যে আত্মতুষ্টির জন্ম দেয়, তা পরবর্তী প্রজন্মের সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে না। সম্ভাব্য এ দুটি পথকে খোলা রেখে বিশ্ব ফুটবলে আর্জেন্টিনার ভবিষ্যতে আলো ফেলে দেখা যেতে পারে।

কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা তো বটেই, পুরো পৃথিবীর চোখ ছিল লিওনেল মেসির ওপর। খুদে জাদুকরের হাতে বিশ্বকাপ দেখতে মুখিয়ে ছিল পৃথিবীর কোটি মানুষ। শেষ পর্যন্ত সে আশা পূরণও হয়েছে। দোহায় বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে নেওয়ার পর মেসি এখন শাশ্বত। তবে বিশ্বকাপ জেতার পর আর্জেন্টাইন ফুটবলে ঘটে যাওয়া নীরব বিপ্লব কিছুটা হলেও ঢাকা পড়েছে।

মেসি-দি মারিয়াদের সঙ্গে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন হুলিয়ান আলভারেজ, অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার, এনজো ফার্নান্দেজের মতো একদল তরুণ। বিশ্বকাপের আগে তাঁরা অতটা পরিচিত ছিলেন না। যুব ফুটবল দল থেকেই মূলত তাঁদের খুঁজে বের করা হয়েছে। এই তারকাদের খুঁজে আনার কৃতিত্ব স্কালোনির পাশাপাশি আরেকজনকে দিতে হবে, তিনি সাবেক ফুটবলার পাবলো আইমার। স্কালোনির বিশ্বকাপজয়ী দল গড়ে ওঠার পেছনে আইমারের ফুটবলদর্শন দারুণ ভূমিকা পালন করেছে।

তবে ম্যাক অ্যালিস্টার-ফার্নান্দেজদের বাইরে আরও এমন অনেক নাম আছে, যাঁরা ব্যাটনটাকে এগিয়ে নিতে প্রস্তুত হচ্ছেন। আর্জেন্টাইন ফুটবলের এই ভবিষ্যতের সারথিরা যেমন দেশের ফুটবল কাঠামোর ভেতর প্রস্তুত হচ্ছেন, তেমনি ইউরোপের বিভিন্ন ক্লাবেও তাঁদের অঙ্কুরোদ্‌গম হচ্ছে।

বর্তমান সময়ের তারুণ্যের খোঁজ নেওয়ার আগে সাম্প্রতিক অতীতে আর্জেন্টাইন ফুটবলের চিত্রটা কেমন ছিল, তা একটু দেখে নেওয়া যাক। ১৯৯১ সালের যুব বিশ্ব চ্যাম্পয়িনশিপের ম্যাচে গণ্ডগোল বাঁধিয়ে ফিফার নিষেধাজ্ঞায় পড়ে আর্জেন্টিনা। এরপর ১৯৯৪ সালে ম্যারাডোনার ডোপ কেলেঙ্কারি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।

তবে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া পরিস্থিতিতে দলকে জাদুকরি শক্তিতে বদলে দেন হোসে পেকারম্যান। সুনিপুণভাবে ফুটবলার খুঁজে বের করার কাজটি শুরু করেন এই কোচ। তাঁর অধীনে ১৯৯৫ সালে ব্রাজিলকে হারিয়ে যুব চ্যাম্পিয়নশিপ জেতে আর্জেন্টিনা। মজার ব্যাপার হচ্ছে, সেটিও ছিল কাতারে।

দুই বছর পর আবারও চ্যাম্পিয়নশিপের ট্রফি জেতে আর্জেন্টাইন যুবারা। আর এই যুবদল থেকে বেরিয়ে আসেন পাবলো আইমার, এস্তেবান ক্যাম্বিয়াসো, হুয়ান রিকেলমের মতো তারকারা। আর এভাবেই আর্জেন্টিনার নতুন একটি প্রজন্মের ভিত তৈরি হয়। দলটি বিশ্বমঞ্চে হয়তো সেভাবে সাফল্য পায়নি, তবে খেলোয়াড় তৈরির যে ধারা সেটিকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করেছে। অন্যদিকে পেকারম্যানের দাঁড় করানো ভিতেই মূলত নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে এগিয়ে গেছে আর্জেন্টিনার ফুটবল।

পেকারম্যান নিজেও পরবর্তী সময়ে জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব পান। ২০০৫ সালে লিওনেল মেসির আগমনী বার্তাও কিন্তু এই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে পাওয়া গিয়েছিল। ফাইনালে জোড়া গোল করে নাইজেরিয়াকে হারিয়ে পঞ্চম শিরোপা এনে দেন মেসিই। আর সবার প্রিয় সেই ছোট্ট লিও অনেক লম্বা পথ পেরিয়ে এখন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। আর মেসির এক সময়ের সতীর্থ হ্যাভিয়ের মাচেরানো এখন যুবদলের কোচ। তাঁর অধীনেই জাতীয় দলের ভবিষ্যতের খেলোয়াড়েরা নিজেদের পথ গড়ে নিচ্ছেন।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ