ঢাকা, রবিবার, ২৪ আগস্ট ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২

সানরাইজার্সকে হারিয়ে ম্যাচের সেরা হয়ে উচিৎ কথাটাই বললেন শুভমান গিল

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৩ মে ১৬ ১০:৪৯:৫৩
সানরাইজার্সকে হারিয়ে ম্যাচের সেরা হয়ে উচিৎ কথাটাই বললেন শুভমান গিল

আক্রমণাত্মক ক্রিকেট ছাড়া আর কোনো রাস্তা অবলম্বন করার কথা ভাবলেন না গতবারের চ্যাম্পিয়নরা। পক্ষান্তরে ১১ ম্যাচে ৮ পয়েন্টে থাকা সানরাইজার্সের কাছে আজকের ম্যাচ ছিলো ‘মাস্ট উইন।’ প্রতিযোগিতাউ টিকে থাকতে জয় ছাড়া কোনো বিকল্পই খোলা ছিলো না এইডেন মার্করামদের সামনে। আহমেদাবাদের মাঠে হায়দ্রাবাদকে আবার ডোবালো তাদের ব্যাটিং’ই। ম্যাচ খুইয়ে দিল্লীর পর দ্বিতীয় দল হিসেবে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে গেলো তারা।

টসে জিতে প্রথমে বোলিং বেছে নিয়েছিলেন সানরাইজার্স অধিনায়ক এইডেন মার্করাম। প্রথম ওভারেই ঋদ্ধিমান সাহাকে ফিরিয়ে চালকের আসনে হায়দ্রাবাদকে বসিয়েছিলেন ভুবনেশ্বর কুমার। কিন্তু সেই চাপ ধরে রাখতে পারে নি তারা। ব্যাট হাতে রুখে দাঁড়ান শুভমান গিল এবং সাই সুদর্শন। ৫৮ বলে ১০১ রানের ইনিংস খেলেন শুভমান। যোগ্য সঙ্গত করেন সাই সুদর্শনও। ৪৭ করেন তিনি।

১৪৭ রানের জুটি গড়লেন দুই তরুণ ব্যাটার। আজ টাইটান্সবাহিনীর মিডল অর্ডার অবশ্য বিশেষ রান করতে পারে নি। হার্দিক পান্ডিয়া,রশিদ খান, মহম্মদ শামিদের আউট করেন ভুবনেশ্বর কুমার। ৩০ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট নিলেন তিনি। একটা সময় ২০০ পেরোনোর আশা জাগালেও ভুবনেশ্বরের দাপটে ১৮৮ রানেই থেমে যায় গুজরাতের ইনিংস।

রান তাড়া করতে নেমে মহম্মদ শামির আগুনে স্পেলের সামনে পড়তে হয় সানরাইজার্সকে। আনমোলপ্রীত সিং, রাহুল ত্রিপাঠী, এইডেন মার্করামকে দ্রুত সাজঘরের রাস্তা দেখান তিনি। যশ দয়ালের শিকার হন অভিষেক শর্মা। পাওয়ার প্লে’তে শামির আঘাতের পর বল হাতে অরেঞ্জ আর্মিকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেন মোহিত শর্মা। সানবীর সিং, আব্দুল সামাদকে একই ওভারে ফিরিয়ে দেন তিনি। একটা সময় ৫৯ রানের মধ্যে ৭ উইকেট পড়ে গিয়েছিলো সানরাইজার্সের। রুখে দাঁড়ান হেনরিখ ক্লাসেন।

দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটরক্ষক-ব্যাটারের ৬৪ রানের ইনিংস আজ মান বাঁচালো হায়দ্রাবাদের। তাঁর সাথে জুটি বেঁধে ২৭ রান করেন ভুবনেশ্বর কুমারও। শেষ দিকে মায়াঙ্ক মারকণ্ডে ৯ বলে অপরাজিত ১৮ রানের ইনিংস খেললেও যথেষ্ঠ হয় নি তা। ১৫৪ রানের বেশী এগোতে পারে নি সানরাইজার্স। ৩৪ রানে ম্যাচ হেরে দিল্লীর পর দ্বিতীয় দল হিসেবে ছিটকে গেলো তারা। আর অনবদ্য শতরান করে গুজরাতকে শেষ চারের টিকিট অর্জনে সাহায্য করে ম্যাচের সেরা হলেন শুভমান গিল।

আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেটে আহমেদাবাদের মাঠেই প্রথম শতরান করেছিলেন নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে। আইপিএলেও প্রথম শতরানের মঞ্চ হিসেবে নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামকেই বেছে নিলেন শুভমান গিল। ৫৮ বলে ১০১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের বিরুদ্ধে দলকে জয় এনে দিলেন তিনি। দ্বিতীয় আইপিএলের ট্রফির দৌড়ে বেশ খানিকটা এগিয়ে গেলো গুজরাত টাইটান্স। দিনকয়েক আগে সুনীল গাওস্করকে শুভমান জানিয়েছিলেন, “আরও কিছু ম্যাচ বাকি আছে। আশা করছি তার মধ্যে শতরান করতে পারবো।” কথা রাখলেন তিনি। ম্যাচের সেরার পুরষ্কার পেয়ে শুভমান গিল জানালেন, “আইপিএলে অভিষেক হয়েছিলো সানরাইজার্সের বিরুদ্ধে, প্রথম শতরানও এলো তাদের বিপক্ষেই। জীবন একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ করলো।”

এখানেই থামতে চান না শুভমান। বলেন, “আশা করছি আরও অনেক (শতরান) আসবে। এই মরসুমেই আসবে।” সাফল্যের রেসিপি ফাঁস করে শুভমান জানান, “পুরোটাই নির্ভর করে বোলার এবং পরিস্থিতির ওপর।” লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টসের বিরুদ্ধে ৯৪ রান করে অপরাজিত ছিলেন তিনি। ছোঁওয়া হয় নি তিন অঙ্কের মাইলস্টোন। আগের শতক হারানোর যন্ত্রণা কি তাঁকে মরিয়া করে তুলেছিলো? প্রশ্নের উত্তরে শুভমান জানান, “আমি পুরনো ইনিংস নিয়ে ভাবি না। সামনে যে পরিস্থিতি রয়েছে তাতে ফোকাস করাই বেশী গুরুত্বপূর্ণ।”

ঘরোয়া টি-২০ ক্রিকেটে পাঞ্জাবের হয়ে একসাথে ওপেন করেন শুভমান গিল এবং অভিষেক শর্মা। আজ আইপিএলের দ্বৈরথে পরস্পরের মুখোমুখি দুই অভিন্নহৃদয় বন্ধু। ইনিংসে ১৩টি চার এবং ১টি ছক্কা মারেন তিনি। অভিষেক শর্মার বলে মারা সেই ছক্কাটাই তাঁর কাছে স্পেশ্যাল বলে জানিয়েছেন শুভমান। বলেন, “অভিষেক শর্মার বলে ঐ ছক্কাটা আমায় সবচেয়ে বেশী তৃপ্তি দিয়েছে। আমি ওকে বলেইছিলাম যে তুই বল করতে এলে আমি ছক্কা হাঁকাবোই।”

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ