ঢাকা, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

earthquake today: ২৪ ঘণ্টায় ৯১ বার ভূমিকম্প

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৩ ১৯:১৮:১১
earthquake today: ২৪ ঘণ্টায় ৯১ বার ভূমিকম্প

উদ্বেগজনক বার্তা: ঘন ঘন ভূকম্পনকে দেখছেন বড় আঘাতের পূর্বাভাস হিসেবে

ঢাকা, ২৩ নভেম্বর: মাত্র কয়েকদিন আগে ঘটে যাওয়া ৫.৭ মাত্রার বিধ্বংসী ভূমিকম্পের ক্ষত এখনো তাজা। এর মাঝেই বাংলাদেশে ঘন ঘন মৃদু কম্পন অনুভূত হওয়ায় জনমনে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুবাইয়াত কবির শুক্রবার দুপুরে গণমাধ্যমকে একটি বড় মাত্রার ভূমিকম্পের আগাম বার্তা দিয়েছেন।

ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণকারী ওয়েবসাইট ‘আর্থকোয়াকট্র্যাকার ডটকম’-এর তথ্য বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ৯১টি কম্পন নথিভুক্ত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এমন ঘন ঘন ভূকম্পনকে বড় আকারের বিপর্যয়ের সূচনালগ্ন হিসেবে দেখছেন, যা জনসাধারণের মধ্যে বাড়তি সতর্কতা তৈরি করেছে।

৮ ঘণ্টায় তিন দফা কম্পন: ঢাকাকে ঘিরে উদ্বেগের ঘনঘটা

গত শুক্রবারের প্রাণঘাতী ঝাঁকুনির পর, শনিবার (২২ নভেম্বর) রাজধানী ঢাকা ও তার আশেপাশে মাত্র আট ঘণ্টার ব্যবধানে তিন দফা মৃদু কম্পন অনুভূত হয়।

শনিবার সকালে প্রথমবার ঠিক ১০টা ৩৮ মিনিট ১২ সেকেন্ডে ৩.৩ মাত্রার একটি কম্পন আঘাত হানে, যার কেন্দ্র ছিল ঢাকা থেকে ২৯ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে নরসিংদীর পলাশ।

পরবর্তীতে সন্ধ্যায় ৬টা ৬ মিনিট ৪ সেকেন্ডে ৩.৭ মাত্রার এবং তার ঠিক এক সেকেন্ড পরেই ৪.৩ মাত্রার আরও দুটি কম্পন অনুভূত হয়।

রোববার (২৩ নভেম্বর) দুপুরের আপডেটে ‘আর্থকোয়াকট্র্যাকার ডটকম’ জানায়, গত সাত দিনে পৃথিবীজুড়ে মোট ৮৫২টি ভূমিকম্প রেকর্ড হয়েছে।

৫.৭ মাত্রার সেই ট্র্যাজেডি: ভবন হেলে পড়া ও প্রাণহানি

গত শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে অনুভূত হওয়া ৫.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূকম্পন সারাদেশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে। এই দুর্যোগে শিশুসহ মোট দশজনের প্রাণহানি ঘটে এবং ছয় শতাধিক মানুষ আহত হন। নিহতদের মধ্যে নরসিংদীতে পাঁচ, ঢাকায় চার ও নারায়ণগঞ্জে একজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কিত অনেকেই ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে; কিছু কাঠামো হেলে যায় ও ফাটল ধরে, যা ভবনগুলোর দুর্বলতা স্পষ্ট করে তোলে।

দেশের ভূমিকম্প ঝুঁকি: বুয়েট অধ্যাপকের উদ্বেগ

দেশের ভূমিকম্প মোকাবিলায় বিদ্যমান সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ডা. মেহেদী আহমেদ আনসারী। তিনি মনে করিয়ে দেন, বাংলাদেশ অনেক আগে থেকেই ভূমিকম্পের চরম ঝুঁকিতে রয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক মানচিত্র অনুযায়ী, ভূমিকম্পের ঝুঁকির ভিত্তিতে গোটা বাংলাদেশকে তিনটি স্বতন্ত্র অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়েছে:

জোন-১: সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ বা উচ্চঝুঁকিপ্রবণ এলাকা।

জোন-২: মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল।

জোন-৩: তুলনামূলকভাবে কম ঝুঁকিপ্রবণ হিসাবে চিহ্নিত এলাকা।

এই ঘন ঘন ভূমিকম্পের ঘটনা বড় ধরনের ভূকম্পনের পূর্বাভাস হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞ মহল মত দিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে, তারা সাধারণ মানুষকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

তানভির ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ