ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১

বাংলাদেশের ক্রিকেটে অবসেরে হিড়িক, আরেক ক্রিকেটারের বিদায়

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ মার্চ ১২ ২০:৫৬:২২
বাংলাদেশের ক্রিকেটে অবসেরে হিড়িক, আরেক ক্রিকেটারের বিদায়

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ক্রিকেটের এক অবিচ্ছেদ্য নাম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, এবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে চিরবিদায় জানালেন। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে আগেই সরে দাঁড়িয়েছিলেন, এবার ওয়ানডে ক্রিকেটকেও জানালেন বিদায়। দীর্ঘ ১৬ বছরের ক্রিকেট-অভিযানে তিনি ছিলেন দলের অন্যতম স্তম্ভ, যিনি ব্যাটিং, বোলিং এবং নেতৃত্বগুণে রচনা করেছেন এক অনন্য ইতিহাস।

২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পর থেকেই মাহমুদউল্লাহ ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের এক নির্ভরযোগ্য যোদ্ধা। বিপদের মুহূর্তে শান্ত স্বভাবের এই অলরাউন্ডার দলের হয়ে খেলেছেন অসংখ্য ম্যাচ-জয়ী ইনিংস। ২০১৫ বিশ্বকাপে তার ব্যাটিং যেন এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছিল বাংলাদেশের জন্য। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার ঐতিহাসিক সেঞ্চুরি এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ জেতানো ইনিংস আজও ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে গেঁথে আছে।

বিশেষ করে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এক অনবদ্য ইনিংসে দলকে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিলেন, যদিও ভাগ্য সহায় ছিল না। তবে তার অসাধারণ পারফরম্যান্স বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবে।

ওয়ানডেতে ৫,০০০-এর বেশি রান এবং বল হাতে ৭৬ উইকেট—সংখ্যা হয়তো পুরো গল্পটা বলে না, তবে মাহমুদউল্লাহর অবদান পরিসংখ্যানের বাইরেও বিশাল। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ দলের জন্য এক নির্ভরতার প্রতীক, যার উপস্থিতি সতীর্থদের ভরসা যুগিয়েছে। তার ঠান্ডা মাথা, ম্যাচ পরিস্থিতি পড়ার দক্ষতা এবং ফিনিশার হিসেবে অসংখ্য ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ অবদান তাকে তুলেছে কিংবদন্তির কাতারে।

অবসর ঘোষণার পর মাহমুদউল্লাহ আবেগঘন বার্তায় ভক্ত, সতীর্থ ও কোচিং স্টাফদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি লেখেন, “বাংলাদেশের হয়ে খেলা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় গর্ব। এই দীর্ঘ পথচলায় যারা পাশে থেকেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই বাংলাদেশ ক্রিকেটকে আজকের অবস্থানে নিয়ে এসেছে।”

তার বিদায়ে ভক্তদের মনে নস্টালজিয়া ও আবেগের স্রোত বইছে। সতীর্থ ও ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা তাকে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার হিসেবে অভিহিত করেছেন।

যদিও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জার্সি খুলে রাখলেন, তবু ক্রিকেটের প্রতি তার ভালোবাসা হয়তো নতুন কোনো ভূমিকায় ফিরিয়ে আনবে। কোচিং, মেন্টরিং বা বিশ্লেষকের ভূমিকায় তার মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারকে দেখতে পারাটা দেশের ক্রিকেটের জন্যই মঙ্গলজনক হবে।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ কেবল একজন ক্রিকেটার নন, তিনি এক অধ্যায়। তার সংগ্রামী মনোভাব, নির্ভরযোগ্য ব্যাটিং, এবং শান্ত অথচ দৃঢ় নেতৃত্বের জন্য তিনি চিরকাল ক্রিকেটপ্রেমীদের হৃদয়ে অমর হয়ে থাকবেন। তার বিদায় এক যুগের সমাপ্তি, কিন্তু তার স্মৃতির পাতাগুলো চিরদিন উজ্জ্বল হয়ে থাকবে।

রাজিব আলী/

খেলা - এর সব খবর

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ