ইতিকাফের উদ্দেশ্যে মসজিদে অবস্থানের সঠিক সময় ও নিয়ম

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইসলামের প্রতিটি বিধানেই রয়েছে অপার রহস্য ও কল্যাণ। আর রমজানের শেষ দশকের ইতিকাফ তার অন্যতম উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। ইতিকাফ হলো এমন এক ইবাদত, যা মানুষকে দুনিয়ার ব্যস্ততা থেকে মুক্ত করে একান্তভাবে আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছে দেয়। এটি আত্মশুদ্ধি, ধ্যান ও ইবাদতের এক অনন্য উপায়।
ইতিকাফের তাৎপর্য ও গুরুত্ব
ইতিকাফ শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো স্থির থাকা, ধ্যান করা বা নিবিষ্ট হওয়া। ইসলামী পরিভাষায়, ইতিকাফ হল আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট সময় মসজিদে অবস্থান করা। এটি সুন্নতে মুয়াক্কাদা আলাল কিফায়া—অর্থাৎ, কেউ পালন করলে সমাজ দায়মুক্ত হয়, আর যদি কেউ না করে, তবে সমগ্র সমাজ গুনাহগার হবে।
পবিত্র কোরআনে ইতিকাফের প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন:
“আমি ইবরাহিম ও ইসমাইলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী ও রুকু-সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র করো।” (সূরা বাকারা, আয়াত : ১২৫)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনে ইতিকাফের এক বিশেষ স্থান ছিল। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) প্রতি রমজানে ১০ দিন ইতিকাফ করতেন। তবে যে বছর তিনি ইন্তেকাল করেন, সে বছর ২০ দিন ইতিকাফ করেছিলেন। (বুখারি, হাদিস : ১৯০৩)
কখন মসজিদে প্রবেশ করবেন?
ইতিকাফ পালনের জন্য সঠিক সময়ে মসজিদে প্রবেশ করা গুরুত্বপূর্ণ। ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালেক, ইমাম শাফেয়ি ও ইমাম আহমাদ (রহ.)-এর মতে, ইতিকাফকারীদের ২০ রমজান বিকেলে সূর্যাস্তের আগে মসজিদে প্রবেশ করা উচিত, যাতে ২১ রমজানের রাত শুরু হওয়ার আগেই ইবাদতে নিজেকে নিমগ্ন করা যায়।
এই নির্দিষ্ট সময় মেনে চলার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে। নবীজি (সা.) শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন, যা বুখারি ও মুসলিম শরিফে বর্ণিত হয়েছে। আর এই সময়ের মধ্যে লাইলাতুল কদর পাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। যেহেতু ২১ রমজানের রাত বেজোড় রাত, তাই এই রাতে ইতিকাফ শুরু করলে লাইলাতুল কদরের সৌভাগ্য লাভের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। (আল-মুগনি ৪/৪৮৯)
ইতিকাফ: আত্মার প্রশান্তি ও পরিশুদ্ধির এক মহা সুযোগ
ইতিকাফ হলো এক বিশেষ সুযোগ, যেখানে মানুষ দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিজেকে উৎসর্গ করে। ইতিকাফকারীরা দিনের বেলায় রোজা রাখেন, রাতভর নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত ও দোয়া-ইস্তেগফারে মগ্ন থাকেন। এতে আত্মা পবিত্র হয়, হৃদয় প্রশান্ত হয় এবং ঈমান মজবুত হয়।
লাইলাতুল কদরের মতো মহিমান্বিত রাতের সন্ধানে যারা ইতিকাফ করেন, তারা সত্যিকারের সৌভাগ্যবান। কেননা, এ রাতের ইবাদত হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও উত্তম।
ইতিকাফ শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এটি এক অন্তরঙ্গ আত্মশুদ্ধির প্রক্রিয়া। যারা আল্লাহর ভালোবাসা, রহমত ও ক্ষমা লাভের আশায় ইতিকাফ করেন, তাদের জন্য এটি এক অপার নেয়ামত। তাই যারা রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করতে চান, তাদের উচিত ২০ রমজান বিকালের মধ্যেই মসজিদে প্রবেশ করা, যেন এই মহান ইবাদতের সর্বোচ্চ ফজিলত ও বরকত অর্জন করা সম্ভব হয়।
আব্দুর রহিম/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- ৫ আগস্ট সরকারি ছুটি: কোন কোন প্রতিষ্ঠান থাকবে বন্ধ, দেখুন এক নজরে
- ৫ আগস্ট ছুটি, জানুন কোন কোন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান থাকবে বন্ধ
- আগামীকাল ৫ আগস্ট সরকারি ছুটি: এক নজরে জানুন বন্ধ থাকবে যে সব প্রতিষ্ঠান
- ৫ আগস্ট সরকারি ছুটি: এক নজরে জেনে নিন বন্ধ থাকবে যে সব প্রতিষ্ঠান
- অনলাইনে নামজারি আবেদন: যা যা লাগবে ও কতদিনে হবে
- SSC Board Challenge Result 2025: কবে ও কোথায় দেখবেন বিস্তারিত
- আগামীকাল ৫ আগস্ট থেকে টানা ৫ দিন ছুটি আপনি পাবেন যেভাবে
- গোপন প্রশিক্ষণ কেলেঙ্কারি: মেজর সাদিকের পরিচয় ফাঁস
- ৫ আগস্ট সরকারি ছুটি: চাকরিজীবীদের জন্য সুখবর, বন্ধ থাকবে যেসব প্রতিষ্ঠান
- কলেজ ভর্তি ২০২৫: আজ আবেদন শুরু, কলেজ পছন্দের নিয়ম জেনে নিন
- এশিয়া কাপ ২০২৫: বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের স্কোয়াড চূড়ান্ত করেছে নির্বাচকরা
- এশিয়া কাপ ২০২৫: বাংলাদেশ স্কোয়াডের ১৪ জন প্রায় নিশ্চিত
- বাজারে শেয়ার ছাড়ছে সরকার, ইউনিলিভার ও সানোফি আলোচনায়
- SSC বোর্ড চ্যালেঞ্জ ২০২৫: ভর্তি নিয়ম ও ফল প্রকাশের তারিখ এক নজরে
- বিনিয়োগকারীদের জন্য সুখবর: শেয়ারবাজারে আসছে ১৫ বড় প্রতিষ্ঠান