ঢাকা, শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

অবশেষে নির্বাচনের দিন তারিখ জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুন ০৬ ১৯:৪২:৩২
অবশেষে নির্বাচনের দিন তারিখ জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক: অবশেষে অপেক্ষার অবসান। জানিয়ে দেওয়া হলো সেই কাঙ্ক্ষিত দিনটির সময়কাল—যেদিন জাতি হাতে তুলে নেবে ভবিষ্যতের কলম, আর ব্যালটেই লেখা হবে ‘নতুন বাংলাদেশ’-এর রূপরেখা। শুক্রবার (৬ জুন) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ঐতিহাসিক ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা দিলেন—২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন।

ঐক্যমতের ভিত্তিতে নির্বাচন

জাতীয় স্বার্থে ঐক্য, আলোচনার টেবিলে প্রতিটি পক্ষের কণ্ঠস্বর শোনা এবং দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর পর্যালোচনার পরেই এই সিদ্ধান্ত এসেছে বলে জানান ড. ইউনূস। তার ভাষায়,

"অবাধ, সুষ্ঠু, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে আমরা নিরন্তর কাজ করেছি। বিচার ও নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারের অগ্রগতি পর্যালোচনা করে আজ আমি জাতির কাছে এই গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিচ্ছি।"

তিনি জানান, এই ঘোষণা নির্বাচনের দিন নির্ধারণের সূচনা মাত্র। বিস্তারিত রোডম্যাপ খুব শিগগিরই দেবে নির্বাচন কমিশন।

শহীদদের আত্মার শান্তির জন্য একটি নির্বাচন

প্রধান উপদেষ্টার কণ্ঠে ছিল আবেগ ও প্রত্যয়ের মিশেল। তিনি বলেন,

"আমরা এমন একটি নির্বাচন চাই, যা দেখে শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে। চাই এ নির্বাচন হোক সবচেয়ে বেশি ভোটার, সবচেয়ে বেশি প্রার্থী এবং সবচেয়ে বেশি রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে এক মহা-গণতান্ত্রিক উৎসব।"

তিনি আরও বলেন, দেড় দশকের বেশি সময় পর এই নির্বাচন গড়ে দেবে একটি সত্যিকারের জনপ্রতিনিধিত্বশীল সংসদ, যেখানে তরুণ প্রজন্ম প্রথমবারের মতো ভোট দিয়ে নিজেদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে অংশ নেবে।

ভোটারদের প্রতি দায়িত্বশীলতার আহ্বান

ভাষণে ভোটারদেরও স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় তাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বের কথা। ড. ইউনূস বলেন,"আপনারা নিজেদের এলাকার প্রার্থীদের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি আদায় করে নেবেন—তারা যেন এক বিন্দুও বিচ্যুত না হন জাতির ঐকমত্যে পৌঁছানো সংস্কার এজেন্ডা থেকে।"

তিনি আরও বলেন, "তাদের কাছে আপনারা অঙ্গীকার নেবেন—দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, ও গণতান্ত্রিক অধিকার কখনও বিকিয়ে দেবেন না তারা। দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজির মতো গণবিরোধী সব কাজ থেকে নিজেদের মুক্ত রাখবেন।"

পুরোনো প্রতীক, নতুন ভাবনা

এবারের নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য ছিল তাৎপর্যপূর্ণ:

"চেনা প্রতীক থাকবে, পরিচিত দলগুলোও থাকবে। কিন্তু ভোট দিতে হবে ভিন্ন চোখে—কে ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়তে কতটা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, সেটাই হবে বিচারের মানদণ্ড।"

এটাই শুধু একটি নির্বাচন নয়—এটা এক নতুন শুরুর নির্বাচন। এটি একটি সুযোগ, যেখানে জনগণই স্থাপন করবে ন্যায়বিচার, স্বচ্ছতা, গণতন্ত্র এবং জনগণের অধিকারকে নতুন উচ্চতায়।

২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন—ঘোষণা এসেছে, প্রস্তুতির ডাকও বেজে উঠেছে। এবার ভোট শুধু ভোট নয়, এটি দায়িত্ব, এটি স্বপ্ন, এটি দেশ গড়ার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। প্রশ্ন একটাই: কে তৈরি আগামী দিনের বাংলাদেশ গড়তে?

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ