ঢাকা, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২

৬০ কোম্পানির কাছে মূলধন রোডম্যাপ চাইল বিএসইসি

শেয়ারবাজার ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুন ১৬ ০৮:৪১:৫০
৬০ কোম্পানির কাছে মূলধন রোডম্যাপ চাইল বিএসইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে ন্যূনতম মূলধনের শর্ত পূরণ না করা ৬০টি তালিকাভুক্ত কোম্পানির কাছ থেকে রোডম্যাপ চেয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কমিশন বলছে, মূল বোর্ডে তালিকাভুক্ত থাকার জন্য ৩০ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধন থাকা আবশ্যক। এই শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে কোম্পানিগুলোকে বিকল্প ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মে স্থানান্তর করা হবে।

সম্প্রতি এসব কোম্পানিকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে রোডম্যাপ জমা দিতে বলা হয়েছে। কমিশন তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়েছে—সীমিত মূলধনের কোম্পানি বাজারে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগকারী সুরক্ষার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

পরিশোধিত মূলধনের বর্তমান চিত্র

কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এসব ৬০টি কোম্পানির মধ্যে ১১টির পরিশোধিত মূলধন ৫ কোটি টাকার নিচে, ১৫টি কোম্পানির ১০ কোটি টাকার নিচে, ২১টি কোম্পানির ২০ কোটি টাকার নিচে এবং বাকিগুলোর ৩০ কোটি টাকার নিচে অবস্থান করছে।

কমিশন বলছে, স্টক এক্সচেঞ্জের মূল বোর্ডে তালিকাভুক্ত থাকার জন্য নির্ধারিত মূলধনের এই মানদণ্ড দীর্ঘদিন ধরেই বলবৎ রয়েছে। তা সত্ত্বেও বেশিরভাগ কোম্পানি এখনো এই শর্ত পূরণে আগ্রহী নয়।

স্টক ডিভিডেন্ডের মাধ্যমে মূলধন বৃদ্ধি নয়

বিএসইসি স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, স্টক ডিভিডেন্ড ইস্যু করে মূলধন বৃদ্ধিকে তারা গ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচনা করবে না। কারণ এতে কেবল শেয়ারের সংখ্যা বাড়ে, কোম্পানির প্রকৃত আর্থিক সক্ষমতা বাড়ে না। কমিশন চায় কোম্পানিগুলো নগদ তহবিল সংগ্রহের মাধ্যমে নিজেদের আর্থিক ভিত্তি শক্তিশালী করুক।

নিয়ন্ত্রকের অবস্থান ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ

কমিশনের এক কর্মকর্তা জানান, “শেয়ারবাজারে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এবং বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি কমাতে আমরা মূলধন শর্ত পূরণে কঠোরভাবে নজর দিচ্ছি। স্বল্প মূলধনের কোম্পানিগুলো সহজেই কারসাজির লক্ষ্যবস্তু হয়ে ওঠে, যা বাজারের জন্য ক্ষতিকর।”

২০২১ সালেও বিএসইসি ৬৪টি কোম্পানির কাছে একই ধরনের পরিকল্পনা চেয়েছিল। সে সময় একটি মূল্যায়ন কমিটি গঠন করে কোম্পানিগুলোর আর্থিক সক্ষমতা যাচাই করা হয়েছিল। তবে বেশিরভাগ কোম্পানি সে নির্দেশনা বাস্তবায়নে তেমন অগ্রগতি দেখায়নি।

বাজার সংশ্লিষ্টদের মূল্যায়ন

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, কোম্পানিগুলোর উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের অনেকেই মূলধন বাড়ানোর ব্যাপারে সক্রিয় নন। ফলে কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি বাড়ছে। এছাড়া, কিছু কোম্পানির শেয়ারের দর অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাচ্ছে—যা মৌলিক তথ্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয় এবং বাজারে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।

বিএসইসির সর্বশেষ পদক্ষেপ বাজারের মান নিয়ন্ত্রণ ও বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় একটি দৃঢ় উদ্যোগ। তবে এর বাস্তবায়নে সময়মতো মূল্যায়ন, তথ্য যাচাই এবং প্রয়োজনে কোম্পানিগুলোর তালিকা পরিবর্তন বা সরানো—এসব পদক্ষেপ দ্রুত ও কার্যকরভাবে গ্রহণ করাই বাজার স্থিতিশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ