ঢাকা, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২

আয়েশার পরীক্ষার সুযোগ কি মিলবে? শিক্ষা উপদেষ্টা জানালেন আশার কথা

শিক্ষা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুন ২৭ ১১:২৯:২৮
আয়েশার পরীক্ষার সুযোগ কি মিলবে? শিক্ষা উপদেষ্টা জানালেন আশার কথা

নিজস্ব প্রতিবেদক: এইচএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনেই মর্মান্তিক এক ঘটনার জন্ম হয় রাজধানীর মিরপুরে। মা স্ট্রোক করে হাসপাতালে, আর মেয়ে—আয়েশা—দায়িত্ববোধের তাড়নায় ছুটে যান চিকিৎসকের কাছে। মাকে ভর্তি করে নিজে ছুটে আসেন পরীক্ষাকেন্দ্রে। কিন্তু তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। কেন্দ্রের নিয়ম মেনে আয়েশাকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়নি।

আয়েশা ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী। তার বাবা নেই, মা-ই একমাত্র অভিভাবক। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, পরীক্ষার দিন সকালেই তার মা স্ট্রোক করেন। এমন সংকটময় মুহূর্তে একজন সন্তানের যা করণীয়, আয়েশা তাই করেছে—মাকে হাসপাতালে ভর্তি করে পরে নিজ দায়িত্বে কেন্দ্রে পৌঁছেছে। কিন্তু নিয়মের বেড়াজালে আটকে গেছে তার প্রশ্নপত্র।

এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে তা দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন—“মানবিকতা কি কেবল বইয়ের পাতায়?”

বিষয়টি নজরে আসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়েরও।

এমন অবস্থায় মুখ খুলেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার)। তিনি বলেন,

“মানবিক বিবেচনায় আয়েশার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা নেওয়ার সুযোগ পাবেন কি না, তা পাবলিক পরীক্ষা সংক্রান্ত আইন ও বিধির আলোকে বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমরা তার এই পরিস্থিতিতে সমব্যথী। আয়েশাকে অনুরোধ করছি—সে যেন উদ্বিগ্ন না হয়।”

শিক্ষা উপদেষ্টার এমন আশাব্যঞ্জক বক্তব্যে নতুন করে আশার আলো দেখছেন আয়েশা ও তার পরিবার। একইসঙ্গে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলেও কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে।

আয়েশার খালা গণমাধ্যমকে জানান, “সকালেই ওর মা স্ট্রোক করেন। ওর বাবা নেই। মাকে নিয়ে হাসপাতালে দৌড়াতে দেরি হয়ে যায়। সে একটুও পড়া বাদ দেয়নি, কিন্তু এমন মানবিক ঘটনার পরও তাকে পরীক্ষায় বসতে না দেওয়াটা কষ্টদায়ক।”

এ ঘটনায় অনেকেই বলছেন, শিক্ষা ব্যবস্থা শুধু নিয়মে নয়, সহমর্মিতায়ও উদাহরণ তৈরি করতে পারে। আয়েশার জন্য যদি ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তা হয়তো অনেকের জন্য ভবিষ্যতে একটি মানবিক দৃষ্টান্ত হবে।

এখন অপেক্ষা, শিক্ষা বোর্ডের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের। পরীক্ষার একটি প্রশ্নপত্র হারিয়ে ফেলা মেয়েটি কি আবার পাবেন নিজের প্রাপ্য সেই সুযোগ? শিক্ষা উপদেষ্টার কথায় আশার সুর থাকলেও—সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উত্তরটা এখনো সময়ের হাতে।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ