ঢাকা, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে শেষ হলো রংপুর রাইডার্স ও গায়ানা অ্যামাজনের ম্যাচ

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুলাই ১১ ০৯:৪২:৪১
রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে শেষ হলো রংপুর রাইডার্স ও গায়ানা অ্যামাজনের ম্যাচ

নিজস্ব প্রতিবেদক: গ্লোবাল সুপার লিগের দ্বিতীয় ম্যাচে দুর্দান্ত এক লড়াইয়ে গায়ানা অ্যামাজন ওয়ারিয়র্সকে ৮ রানে পরাজিত করেছে রংপুর রাইডার্স। ম্যাচজুড়েই চলে উত্তেজনার রোমাঞ্চ, তবে শেষ হাসি হেসেছে বাংলাদেশের দল রংপুর। ম্যাচের নায়ক খালেদ আহমেদ, যিনি ৪ ওভারে ৩৬ রান খরচায় শিকার করেন ৪টি মূল্যবান উইকেট। ম্যাচ শেষে তাকেই ঘোষণা করা হয় ম্যাচ সেরা এবং ক্রিকইনফোর সর্বোচ্চ মূল্যবান খেলোয়াড় (MVP) হিসেবে।

প্রথমে ব্যাট করে লড়াকু সংগ্রহ গড়ে রংপুর

টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে রংপুর রাইডার্স। নির্ধারিত ২০ ওভারে তারা ৫ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করে ১৬২ রান। দলের হয়ে ইনিংস গুছিয়ে নেন ওপেনার সৌম্য সরকার ও কাইল মায়ার্স। সৌম্য করেন ৩৫ রান ৩৬ বলে, ৫টি চারের সাহায্যে। তার ইনিংসটি ছিল ধীরস্থির, তবে গুরুত্বপূর্ণ। অপরদিকে কাইল মায়ার্স ছিলেন আগ্রাসী মেজাজে, মাত্র ৩১ বলে ৪৪ রান করে অপরাজিত থাকেন, যেখানে ছিল ৩টি চার ও ২টি ছক্কা।

দলের অধিনায়ক নুরুল হাসান ১০ বলে করেন ১৮ রান এবং শেষ দিকে ইফতিখার আহমেদ মাত্র ২১ বলে করেন ৩৪ রান, যা দলকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে যেতে সহায়তা করে। রংপুরের ইনিংসে অতিরিক্ত রান আসে ১০।

গায়ানার বোলারদের মধ্যে তুলনামূলক সফল ছিলেন ইমরান তাহির ও গুডাকেশ মোটি। তাহির ৪ ওভারে মাত্র ২১ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট, অন্যদিকে মোটি ৪ ওভারে ৩২ রান খরচায় পান ২টি উইকেট।

জয়ের জন্য গায়ানার লক্ষ্য ছিল ১৬৩

জবাবে ব্যাট করতে নেমে গায়ানা অ্যামাজন ওয়ারিয়র্স শুরুটা ভালোই করে। পাওয়ারপ্লের মধ্যেই তারা তোলে ৪৯ রান। জনসন চার্লস ২৮ বলে করেন ৪০ রান এবং তার সঙ্গে মঈন আলি করেন ১৮ বলে ২৭ রান। তাদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে এক সময় মনে হচ্ছিল জয় পেতে পারে গায়ানা।

কিন্তু মিডল অর্ডারে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় দলটি। শিমরন হেটমায়ার ১৩ বলে ১৮ রান করে ধীরগতির ইনিংস খেলেন। শারফেন রাদারফোর্ড ১৯ রান ও ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস ১৪ রান করলেও দলের হাল ধরতে ব্যর্থ হন।

খালেদ আহমেদের স্পেলে ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়

রংপুরের বোলিং আক্রমণে নেতৃত্ব দেন পেসার খালেদ আহমেদ। শিমরন হেটমায়ার, শারফেন রাদারফোর্ড, ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস ও শামার স্প্রিংগারকে আউট করে প্রতিপক্ষের ইনিংসে বড় ধাক্কা দেন তিনি। মাত্র ৪ ওভারে ৪ উইকেট শিকার করে ম্যাচের সবচেয়ে বড় পার্থক্য গড়ে দেন তিনি।

তাকে সঙ্গ দেন আফগান অলরাউন্ডার আজমাতুল্লাহ ওমরজাই, যিনি ৩.১ ওভারে ১৩ রানে ২ উইকেট নেন। স্পিনার তাবরাইজ শামসিও ছিলেন কার্যকরী, ৪ ওভারে মাত্র ২৪ রান দিয়ে নেন ২টি উইকেট।

শেষ ১০ বলে দরকার ছিল মাত্র ৯ রান, হাতে ছিল এক উইকেট। কিন্তু ১৮.৫ ওভারে প্রিটোরিয়াস এবং পরের বলেই স্প্রিংগার আউট হয়ে গেলে ১৯.১ ওভারে ১৫৪ রানেই গুটিয়ে যায় গায়ানার ইনিংস।

ম্যাচের পরিসংখ্যান:

রংপুর রাইডার্স: ১৬২/৫ (২০ ওভার)

কাইল মায়ার্স ৪৪* (৩১ বল)

সৌম্য সরকার ৩৫ (৩৬ বল)

ইফতিখার আহমেদ ৩৪* (২১ বল)

ইমরান তাহির: ৪-০-২১-২

গুডাকেশ মোটি: ৪-০-৩২-২

গায়ানা অ্যামাজন ওয়ারিয়র্স: ১৫৪ অলআউট (১৯.১ ওভার)

জনসন চার্লস ৪০ (২৮ বল)

মঈন আলি ২৭ (১৮ বল)

খালেদ আহমেদ: ৪-০-৩৬-৪

আজমাতুল্লাহ ওমরজাই: ৩.১-০-১৩-২

তাবরাইজ শামসি: ৪-০-২৪-২

ম্যাচ সেরা: খালেদ আহমেদ (রংপুর রাইডার্স)

জয়ী দল: রংপুর রাইডার্স জয়ী ৮ রানে

এই জয়ে টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত সূচনা করলো রংপুর রাইডার্স। বিশেষ করে দলের বোলিং ইউনিট যেভাবে চাপের মধ্যে থেকেও ম্যাচ বের করে আনলো, তা প্রশংসাযোগ্য। খালেদ আহমেদের মতো পেসাররা তাদের সামর্থ্যের প্রমাণ রাখছেন আন্তর্জাতিক মানের প্রতিযোগিতায়।

পরবর্তী চ্যালেঞ্জ

এখন রংপুর রাইডার্সের লক্ষ্য থাকবে পরবর্তী ম্যাচগুলোতেও এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখা। দলের ব্যাটিং কিছুটা ধীর গতির হলেও বোলিং ইউনিট তাদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দিয়ে সেই ঘাটতি পুষিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে গায়ানা অ্যামাজন ওয়ারিয়র্সকে নিজেদের ব্যাটিং লাইনআপ নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে, বিশেষ করে মিডল ও লোয়ার অর্ডারে চাপ মোকাবেলার কৌশল নিয়েই।

গ্লোবাল সুপার লিগে প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। এই জয়ে রংপুর রাইডার্স প্রথম থেকেই পয়েন্ট তালিকায় ভালো অবস্থানে চলে গেল।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ