ঢাকা, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

জাপান গড়ল বিশ্বের দ্রুততম ইন্টারনেটের নতুন রেকর্ড

২০২৫ জুলাই ১২ ১৬:২৬:১৬
জাপান গড়ল বিশ্বের দ্রুততম ইন্টারনেটের নতুন রেকর্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাপান এবার সত্যিই বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিল। দেশের বিজ্ঞানীরা গড়েছেন ইন্টারনেট গতির নতুন বিশ্বরেকর্ড—প্রতি সেকেন্ডে ডেটা ট্রান্সফার হয়েছে এক পয়েন্ট শূন্য দুই পেটাবাইট! এমন গতি আগে শুধু কল্পকাহিনিতে দেখা যেত। এখন বাস্তবেই সম্ভব।

এই রেকর্ড গড়েছে জাপানের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশনস টেকনোলজি (NICT)। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি ঘোষণা দেয়, তারা প্রতি সেকেন্ডে ১০ লাখ ২০ হাজার গিগাবিট তথ্য স্থানান্তর করতে সক্ষম হয়েছে, যা এখন পর্যন্ত বিশ্বের দ্রুততম ইন্টারনেট গতি।

সাধারণ ফাইবার দিয়েই এই অসাধ্য সাধন

এই সাফল্য এসেছে কোনো অতি-উন্নত বা পরীক্ষাগারভিত্তিক সিস্টেমে নয়—গবেষকেরা ব্যবহার করেছেন সাধারণ ফাইবার অপটিক তার, যা বিশ্বব্যাপী ব্যবহৃত হয়। কিন্তু অভিনবত্ব এসেছে ভেতরের প্রযুক্তিগত কাঠামো থেকে। তারা একটিমাত্র ফাইবারের মধ্যে চারটি কোর এবং ৫০টিরও বেশি আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য ব্যবহার করেছেন।

সবচেয়ে চমকপ্রদ বিষয় হলো, এই অভাবনীয় গতি তারা ৫১ কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্বে ধরে রাখতে পেরেছেন, যা প্রমাণ করে এটি বাস্তবে প্রয়োগযোগ্য।

কী কী সম্ভব হবে এই গতির ইন্টারনেটে?

এই গতি পেলে প্রযুক্তি দুনিয়ায় এক বিপ্লবই ঘটে যাবে। যেমন:

একসঙ্গে ১ কোটি ৮কে ভিডিও স্ট্রিমিং সম্ভব হবে

স্টিম বা অন্য প্ল্যাটফর্মের শত শত গেম একসঙ্গে ডাউনলোড করা যাবে কয়েক সেকেন্ডেই

কাউন্টার-স্ট্রাইক ২ থেকে শুরু করে বালদুর’স গেট ৩—সব গেম ১০ সেকেন্ডেরও কম সময়ে নামানো যাবে

১২৭,৫০০ বছরের সমান গান ডাউনলোড করা যাবে মাত্র এক সেকেন্ডে

উইকিপিডিয়ার পুরো তথ্যভাণ্ডার ১০ হাজারবার ব্যাকআপ নেওয়া যাবে এক সেকেন্ডে

এছাড়া, গ্লোবাল এআই সিস্টেম, রিয়েল-টাইম অনুবাদ প্রযুক্তি, স্বয়ংচালিত যান, বৃহৎ ক্লাউড সেবা—সবকিছুই এক নতুন রূপ নিতে পারে এই ইন্টারনেট গতি হাতে পেলে।

তাহলে কি এই ইন্টারনেট বাসায় পাওয়া যাবে?

দুঃখজনকভাবে, এখনই নয়। এই গতি এখনো গবেষণা পর্যায়ে এবং সরকার বা বড় টেলিকম সংস্থাগুলোর পরীক্ষামূলক প্রয়োগে ব্যবহৃত হচ্ছে। টেরাবাইট গতির ইন্টারনেটও এখনো সাধারণ ব্যবহারকারীদের কাছে পৌঁছায়নি। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জাপানের এই অর্জন ভবিষ্যতের ৬জি নেটওয়ার্ক, জাতীয় ব্রডব্যান্ড, ও আন্তর্জাতিক সাবমেরিন কেবল নেটওয়ার্ক গঠনে বড় ভূমিকা রাখবে।

জাপান দেখিয়ে দিয়েছে—ইন্টারনেটের ভবিষ্যৎ কতটা দ্রুতগামী হতে পারে। আর এ গতির পেছনে লুকিয়ে রয়েছে কোটি কোটি মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা। এখন শুধু অপেক্ষা, এই প্রযুক্তি কখন নাগালের মধ্যে আসে।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ