ঢাকা, রবিবার, ৩ আগস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২

বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় বিএসইসির ওপর নতুন ওভারসাইট বডি গঠন নিশ্চিত

শেয়ারনিউজ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৩ ১৩:১৮:৪৪
বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় বিএসইসির ওপর নতুন ওভারসাইট বডি গঠন নিশ্চিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা এবং বাজারে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-এর ওপর একটি নতুন ও শক্তিশালী ওভারসাইট বডি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শেয়ারবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের সুপারিশ অনুযায়ী, এই ওভারসাইট বডির মূল উদ্দেশ্য হবে বিএসইসির কার্যক্রমে তত্ত্বাবধান ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি করা।

নতুন এই ওভারসাইট বডি আইনগতভাবে স্বীকৃত এবং কার্যকর একটি তত্ত্বাবধায়ক কাঠামো হবে, যা কমিশনের নিয়ন্ত্রণে থাকা শেয়ারবাজারে অনিয়ম, দুর্নীতি এবং একতরফাভাবে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো রোধে ভূমিকা রাখবে। ঢাকার বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও টাস্কফোর্সের সদস্য ড. আল-আমিন জানান,

“বিএসইসি দায়িত্বে অবহেলা করলে এই ওভারসাইট বডি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, যাতে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষিত হয়।”

প্রস্তাবিত সাত সদস্যের কমিটিতে থাকবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব এবং শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। তারা বিএসইসির বিভিন্ন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবেন এবং যদি প্রয়োজন মনে হয়, সংশোধনী সুপারিশ করবেন।

শেয়ারবাজারে অতীতে একতরফা সিদ্ধান্ত যেমন মিউচুয়াল ফান্ডের মেয়াদ বাড়ানো, বিতর্কিত আইপিও অনুমোদন এবং ফান্ড ম্যানেজারদের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ফি নেওয়ার ঘটনাগুলো বিনিয়োগকারীদের জন্য বড় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব ঘটনা বিদেশি ও দেশীয় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাজারের প্রতি আস্থা কমিয়েছে। নতুন ওভারসাইট বডি এই ধরনের সমস্যা রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখার প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

টাস্কফোর্স আরও উল্লেখ করেছে, বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের নিয়োগে স্বচ্ছতা আনার জন্য ‘সার্চ কমিটি’ গঠন করা হবে, যেখানে দক্ষতা, সততা এবং বাজারের গভীর জ্ঞান গুরুত্বপূর্ণ হবে। ২০১০ সালের শেয়ারবাজার ধসের পর গঠিত উপদেষ্টা কমিটির কার্যকারিতা না থাকার কারণে এবার একটি স্থায়ী ও প্রভাবশালী ওভারসাইট বডি গঠনের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম বলেন,

“যদি বিএসইসি সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে, তবে অতিরিক্ত কোনো তত্ত্বাবধায়ক বডির প্রয়োজন হবে না। তবে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এই পদক্ষেপটি গুরুত্বপূর্ণ।”

নতুন এই ওভারসাইট বডি গঠন বাস্তবায়িত হলে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা বৃদ্ধি পাবে এবং বাজারের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। তবে এর সফলতা নির্ভর করবে কতটা কার্যকর ও স্বচ্ছভাবে এই বডি কাজ করতে পারে তার ওপর।

FAQ:

প্রশ্ন: নতুন ওভারসাইট বডির প্রধান কাজ কী হবে?

উত্তর: বিএসইসির কার্যক্রমে নজরদারি করা, অনিয়ম রোধ ও বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

প্রশ্ন: ওভারসাইট বডির সদস্যরা কারা থাকবেন?

উত্তর: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক বিভাগ সচিব এবং শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞরা।

প্রশ্ন: কেন বিএসইসির ওপর অতিরিক্ত নজরদারি প্রয়োজন?

উত্তর: অতীতে একতরফাভাবে নেওয়া সিদ্ধান্ত ও তদবিরের কারণে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ক্ষুণ্ণ হওয়ায় এবং বাজারের স্বচ্ছতা বাড়াতে।

প্রশ্ন: বিএসইসির দায়িত্ব কী হবে?

উত্তর: নীতিনির্ধারণে সীমাবদ্ধ থেকে দৈনন্দিন পরিচালনার দায়িত্ব স্টক এক্সচেঞ্জের হাতে দেওয়া হবে।

আল-আমিন ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ