ঢাকা, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

ছেঁড়া-ফাটা নোট বদল করবেন? পুরো মূল্য পাওয়ার শর্ত জানুন

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৭ ১৪:২২:৫৯
ছেঁড়া-ফাটা নোট বদল করবেন? পুরো মূল্য পাওয়ার শর্ত জানুন

আর্থিক লেনদেনে সাধারণের নিত্যদিনের ভোগান্তি কমাতে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিল বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি)। জীর্ণ, দগ্ধ কিংবা অন্য কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংক নোটের বিনিময়ে গ্রাহককে তার প্রাপ্য মূল্য ফিরিয়ে দিতে নতুন একটি নীতিমালা কার্যকর করেছে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই সিদ্ধান্তের ফলে এখন থেকে ছেঁড়া-ফাটা নোট নিয়ে দোকানে কেনাকাটা বা ব্যাংক কাউন্টারে নাকচ হওয়ার ঝুঁকি কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনে এই বিষয়ে দেশের সমস্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের অবহিত করা হয়েছে। সার্কুলারে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে এই নতুন বিধান অবিলম্বে কার্যকর করতে হবে।

৯০ শতাংশ অক্ষত থাকলেই মিলবে সম্পূর্ণ মূল্য

গ্রাহক সুরক্ষার জন্য প্রণীত এই প্রবিধান অনুসারে, কোনো নোটের যদি অন্তত ৯০ শতাংশ অংশ অক্ষত থাকে, তবে তার সমমূল্যের সম্পূর্ণ অর্থ গ্রাহককে পরিশোধ করা হবে। আগে ছেঁড়া ও পোড়া নোট বিনিময়ের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট বিধিবিধানের ঘাটতি ছিল, যার কারণে ব্যাংকগুলো প্রায়শই নোট গ্রহণে অস্বীকৃতি জানাত।

বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বিভিন্ন শাখা থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত নোট বদল করে নেওয়া যাবে। ৯০ শতাংশের বেশি অংশ অক্ষত থাকা নোটগুলো সাধারণত তাৎক্ষণিকভাবেই বদলে দেওয়া হবে। অন্যান্য জীর্ণ নোটও নিয়ম মেনে তাৎক্ষণিকভাবে বদল করার সুযোগ থাকছে।

নতুন প্রবিধান ২০২৫ কার্যকর

উল্লেখ্য, এই সার্কুলারটি 'বাংলাদেশ ব্যাংক নোট প্রত্যর্পণ প্রবিধান ২০২৫' নামে পরিচিত হবে। এর মাধ্যমে পুরোনো 'বাংলাদেশ ব্যাংক নোট রিফান্ড রেগুলেশনস ২০১২' বাতিল হয়ে গেল। নতুন বিধিমালায় নোটের কতটুকু অংশ অবশিষ্ট থাকলে কত টাকা মূল্য পাওয়া যাবে, তা এবার স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা হলো।

দ্বিখণ্ডিত নোট জোড়া লাগানোর পদ্ধতি

দ্বিখণ্ডিত নোট গ্রহণের ক্ষেত্রেও একটি স্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যদি কোনো নোট দুটি টুকরায় বিভক্ত হয়, তবে নিশ্চিত করতে হবে যে বিচ্ছিন্ন অংশদ্বয় একই নোটের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

ব্যাংকে জমা দেওয়ার সময়, মূল নোটের শনাক্তকরণে যেন কোনো সমস্যা না হয়, সেজন্য টুকরোগুলির বিপরীত দিকে সরু, হালকা সাদা কাগজ ব্যবহার করে জোড়া লাগাতে হবে। একইভাবে, অতিরিক্ত জীর্ণ নোট যা পরীক্ষার সময় নাড়াচাড়া করলে ভেঙে যেতে পারে, সেগুলির ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা নিয়ে হালকা কাগজ সংযুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ নিষ্পত্তির সুসংগঠিত প্রক্রিয়া

গ্রাহকের জন্য অভিযোগ জানানোর একটি সুসংগঠিত প্রক্রিয়া নির্ধারণ করা হয়েছে। যদি কোনো ব্যাংক শাখা ক্ষতিগ্রস্ত নোটের বিনিময় মূল্য প্রদানে সমস্যা সৃষ্টি করে, তবে গ্রাহক প্রথমে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আবেদন করতে পারবেন। সেখানেও যদি সমাধান না হয়, তবে চূড়ান্ত নিষ্পত্তির জন্য বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠানো হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক এই আবেদন প্রাপ্তির আট সপ্তাহের (আট সপ্তাহ) মধ্যে মূল্য পরিশোধের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে। মূল্য প্রদেয় হলে সেই অর্থ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে সমন্বয় করা হবে।

সেবা প্রদানে অনীহা দেখালে কঠোর ব্যবস্থা

সুষ্ঠু নগদ লেনদেনের প্রবাহ অক্ষুণ্ণ রাখতে ব্যাংকের বিধি মোতাবেক ত্রুটিপূর্ণ, ময়লাযুক্ত ও দাবিযোগ্য নোটের বিনিময় মূল্য নিয়মিতভাবে প্রদান করতে সব শাখাকে কঠোরভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই পরিষেবা দিতে কোনো বাণিজ্যিক ব্যাংক শাখা অনিচ্ছা প্রকাশ করলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে সুস্পষ্ট সতর্কতা দেওয়া হয়েছে।

আল-মামুন/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ