ঢাকা, বুধবার, ৬ আগস্ট ২০২৫, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২

"আমার কাছে তিনি ফেরেশতা" - কান্নায় ভেঙে পড়ে শহীদের স্ত্রী জানালেন এক অবিশ্বাস্য গল্প!

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৬ ১৪:২১:১৫
"আমার কাছে তিনি ফেরেশতা" - কান্নায় ভেঙে পড়ে শহীদের স্ত্রী জানালেন এক অবিশ্বাস্য গল্প!

নিজস্ব প্রতিবেদক: "আমার কাছে আপনাদের কাছে পিনাকী ভট্টাচার্য কেমন, তা আমি জানি না। কারও কাছে তিনি ভালো, কারও কাছে হয়তো অন্যরকম। কিন্তু আমার কাছে তিনি এককথায় ফেরেশতা ভাইয়া।" - এই কথাগুলো বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন শহীদ নাজমুলের স্ত্রী মারিয়া সুলতানা আঁখি।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার একটি আবেগঘন ভিডিও রীতিমতো ঝড় তুলেছে। যেখানে তিনি তার ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে স্বামীর মৃত্যুর পর এক ভয়াবহ অসহায়ত্বের কথা এবং এক অচেনা মানুষের অবিশ্বাস্য সাহায্যের গল্প শুনিয়েছেন।

যখন সবাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল...

কান্নাভেজা কণ্ঠে মারিয়া বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর চারদিকটা যেন অন্ধকার হয়ে আসে। যাদের পাশে থাকার কথা ছিল, সেই উপদেষ্টারাও পাশে ছিলেন না। মাথার ওপর থেকে ছাদ সরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। বাসা ছেড়ে দেওয়ার নোটিশ পেয়ে তিনি মানসিকভাবে এতটাই ভেঙে পড়েন যে, ছোট্ট মেয়েকে বলছিলেন, "মা, আমাদের আর কোনো বাড়ি নেই।"

সাত সমুদ্রের ওপার থেকে এলো সেই ফোন!

ঠিক তখনই, যখন সব আশা ফুরিয়ে আসছিল, সাত সমুদ্র তের নদীর ওপার ফ্রান্স থেকে এলো একটি ফোন। ফোনের ওপাশের মানুষটিকে মারিয়া চিনতেনও না। তিনি পিনাকী ভট্টাচার্য। মারিয়াকে তিনি শুধু আশ্বাসই দেননি, দিয়েছেন বাবার মতো এক প্রতিশ্রুতি: "বোন, তুমি চিন্তা করো না। আমি যতদিন বাঁচব, তোমার মেয়ে নুজাইরার সব দায়িত্ব আমি নেব।"

শুধু কথা নয়, দুই দিনেই মিলল সমাধান!

মারিয়া সুলতানা জানান, এই ফোনের ঠিক দুই দিনের মাথায় পিনাকী ভট্টাচার্য তাদের জন্য নতুন বাসার ব্যবস্থা করে দেন এবং বাসা ভাড়াসহ সমস্ত দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন।

আবেগে আপ্লুত হয়ে তিনি বলেন, "আমি আল্লাহর কাছে একজন ফেরেশতাকে চাইছিলাম, আর আল্লাহ সম্মানস্বরূপ বাবারূপে ঐ ফেরেশতাকে আমার কাছে পাঠিয়েছেন।"

তিনি আরও যোগ করেন, "আত্মহত্যা মহাপাপ, তাই হয়তো বেঁচে আছি। নইলে আমার মতো পরিস্থিতিতে অনেক মেয়েই হয়তো জীবন শেষ করে দিত।"

মারিয়া জানান, শুধু তিনি নন, পিনাকী ভট্টাচার্য তার মতো আরও অনেক অসহায় পরিবারের দায়িত্ব নিয়েছেন নীরবে-নিভৃতে।

এই ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। নেটিজেনরা মারিয়া ও তার সন্তানের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছেন এবং পিনাকী ভট্টাচার্যের এই মহৎ উদ্যোগের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন।

আল-আমিন ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ