ঢাকা, শুক্রবার, ৮ আগস্ট ২০২৫, ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২

‘ভোট চুরি না হলে মোদি প্রধানমন্ত্রী হতেন না’ — নির্বাচন কমিশনকে একহাত নিলেন রাহুল গান্ধী

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৭ ১৯:৪৭:৩৭
‘ভোট চুরি না হলে মোদি প্রধানমন্ত্রী হতেন না’ — নির্বাচন কমিশনকে একহাত নিলেন রাহুল গান্ধী

নিজস্ব প্রতিবেদক: কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী দুই দিন আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন, তিনি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বিরুদ্ধে এক ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটাবেন। অবশেষে সেই ঘোষণাই বাস্তবে রূপ পেল। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে, দিল্লির কংগ্রেস সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে রাহুল বিস্ফোরক অভিযোগ করেন— "বিজেপিকে জেতানোর জন্য নির্বাচন কমিশন সরাসরি ভোট চুরিতে যুক্ত হয়েছে।"

তিনি বলেন, “ইসি যদি ভোট চুরি না করত, ২০২৪ সালের নির্বাচনের পর নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন না।” তাঁর দাবি, ৭০-৮০টি আসনে ভোট চুরি হয়েছে। এমনকি ১০-১৫টি আসনেও যদি কারচুপি না হতো, তাহলে মোদি প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন না।

রাহুল জানান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ের বিধানসভা নির্বাচন থেকেই তাঁদের সন্দেহ তৈরি হয়। পরে কর্ণাটক ও মহারাষ্ট্রের ভোটে সেই সন্দেহ নিশ্চিত হয়।

কর্ণাটকের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন:

"বেঙ্গালুরু সেন্ট্রাল লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত মহাদেবপুরা বিধানসভায় এক লাখের বেশি ভোট চুরি হয়েছে। কেবল ওই একটি কেন্দ্রের কারণে আমরা ৩২ হাজার ভোটে আসনটি হেরে যাই। অথচ মহাদেবপুরা ছাড়া বাকি সব বিধানসভা কেন্দ্রেই কংগ্রেস জয়ী হয়েছিল।"

কংগ্রেসের তদন্ত রিপোর্টের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন:

৪০ হাজার ভোটারের ঠিকানা ভুয়া

১২ হাজার ডুপ্লিকেট ভোটার

সাড়ে ১০ হাজার ভোটারের ঠিকানা এক

৪ হাজার ছবিহীন ভোটার কার্ড

ফর্ম-৬ এর অপব্যবহার: ৩৩,৫০০-এর বেশি

রাহুলের দাবি, “কর্ণাটকে ভোট চুরি না হলে কংগ্রেস সেখানে ১৬টি আসনে জয় পেত, অথচ জিতেছে মাত্র ৯টি।”

মহারাষ্ট্র নিয়েও অভিযোগ

মহারাষ্ট্রে লোকসভা ভোটে ইন্ডিয়া জোট ৪৮টির মধ্যে ৩০টি আসনে জয় পেলেও মাত্র পাঁচ মাস পর অনুষ্ঠিত বিধানসভা নির্বাচনে ৫০ আসনও পার হতে পারেনি বিরোধীরা। রাহুল দাবি করেন, পাঁচ মাসে ৪০ লাখ নতুন ভোটারকে তালিকাভুক্ত করা হয়, যেটি কারচুপির জন্য পরিকল্পিত।

রাহুলের অভিযোগ:

"বিজেপি-ইসি যোগসাজশের কারণেই জনমতের বিরুদ্ধে গিয়েও তারা জয় পায়। হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র— একের পর এক রাজ্যে এর প্রমাণ মিলছে। জয়কে বৈধতা দিতে কখনো 'লাডলি বহিন', কখনো 'পুলওয়ামা', কখনোবা 'অপারেশন সিঁদুর' সামনে আনা হয়।"

তিনি আরও অভিযোগ করেন, ইসি তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানায়, এমনকি তথ্য ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। দলগুলোর কাছে ডিজিটাল ভোটার তালিকাও দেওয়া হচ্ছে না, যা পেলে কারচুপি প্রমাণ করা সহজ হতো।

ইসির উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে রাহুল বলেন:

"আপনারা যে পদেই থাকুন না কেন, কাউকে রেয়াত করা হবে না।"

ইসির জবাব এবং রাহুলের প্রতিক্রিয়া:

নির্বাচন কমিশন রাহুলের কর্ণাটক সংক্রান্ত অভিযোগ নাকচ করে তাঁকে শপথ নিয়ে হলফনামা দিতে বলেছে। জবাবে রাহুল বলেন—

"আমি জনতার সামনে যা বলেছি, তা থেকেই সরবো না। সেটাই আমার শপথ। যেসব তথ্য উপস্থাপন করেছি, সবই নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য থেকেই সংগ্রহ করা।"

আল-আমিন ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ