ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট ২০২৫, ২৯ শ্রাবণ ১৪৩২

MD Zamirul Islam

Senior Reporter

টানা ৭ দিন দরপতন শেয়ারবাজারে, তবুও আশা দেখাচ্ছে ব্লু-চিপ শেয়ার

শেয়ারনিউজ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৪ ০০:০৯:১৩
টানা ৭ দিন দরপতন শেয়ারবাজারে, তবুও আশা দেখাচ্ছে ব্লু-চিপ শেয়ার

সতর্ক বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তুলে নিচ্ছেন, তবে লেনদেন ৭০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। বাজার বিশ্লেষকরা আগামী সপ্তাহে ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা দেখছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা: টানা সপ্তম দিনের মতো দরপতন দিয়ে শেষ হলো ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন। সতর্ক বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তুলে নিয়ে তাদের বিনিয়োগ সম্ভাবনাময় ও অবমূল্যায়িত শেয়ারে সরিয়ে নেওয়ায় এই পতন অব্যাহত রয়েছে।

গত সাত কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স প্রায় ২২২ পয়েন্ট হারিয়েছে। আজ (১৩ আগস্ট) সূচকটি আরও ১ পয়েন্ট কমে ৫,৩১৪ পয়েন্টে স্থির হয়েছে। তবে বাজারের এই পতনের মধ্যেও ভালো অবস্থানে ছিল ব্লু-চিপ বা মৌলভিত্তির শেয়ারগুলো। বাছাই করা ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ৬ পয়েন্ট বেড়ে ২,০৫৭ পয়েন্টে এবং শরিয়াহ্ সূচক ৩ পয়েন্ট বেড়ে ১,১৫৬ পয়েন্টে দিন শেষ করেছে।

এদিকে, আগের দিনের চেয়ে লেনদেন বেড়েছে ৫.৭%। দিনশেষে মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭০৫ কোটি টাকা, যা আগের দিন ছিল ৬৬৭ কোটি টাকা। লেনদেন হওয়া ৩৯৮টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১২১টির, কমেছে ২০৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৭৪টির শেয়ারের দাম।

ব্লু-চিপ শেয়ারে ভরসা

বাজারের পতনের দিনেও ডিএস-৩০ সূচককে টেনে তুলতে বড় ভূমিকা রেখেছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, ওরিয়ন ইনফিউশন এবং তিতাস গ্যাসের মতো বড় কোম্পানিগুলো।

কেন এই দরপতন এবং সামনে কী?

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি সপ্তাহজুড়ে এই প্রবণতা চলতে পারে, তবে আগামী সপ্তাহে বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে বিনিয়োগকারীরা চলমান বাজার সংশোধনের মধ্যে তাদের পোর্টফোলিও নতুন করে সাজাচ্ছেন এবং বিনিয়োগ পরিকল্পনা সমন্বয় করছেন।

বাজারে ফিরছে আস্থা, কারণ একাধিক

শেয়ারবাজারের জন্য একটি ইতিবাচক দিক হলো সরকারি বন্ডের ইল্ড বা সুদহার কমে যাওয়া, যা আগামীতে আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে শেয়ারবাজার থেকে ১০ শতাংশের বেশি রিটার্ন পাওয়া যাচ্ছে, যা বন্ডের চেয়ে অনেক বেশি আকর্ষণীয়।

এছাড়াও, বেশ কিছু সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচক বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে সাহায্য করছে:

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ: রিজার্ভ স্থিতিশীল হয়ে আবার বাড়তে শুরু করেছে, যা আগের উদ্বেগ কমিয়েছে।

ব্যাংকিং খাত: দুর্বল ব্যাংকগুলোকে একীভূত করার সরকারি পরিকল্পনা বাজারে ইতিবাচক বার্তা দিয়েছে।

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা: জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা কমে আসায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।

অনেক ভালো কোম্পানির শেয়ারের দাম এখনও অবমূল্যায়িত থাকায় সেগুলোর প্রতি নতুন করে ক্রেতাদের আগ্রহ বাড়ছে। সব মিলিয়ে, অর্থনৈতিক উদ্বেগ কমা, সহায়ক নীতি এবং আকর্ষণীয় মূল্যায়নের কারণে শেয়ারবাজার ধীরে ধীরে আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে।

খাতভিত্তিক লেনদেন

আজ খাতভিত্তিক লেনদেনে শীর্ষে ছিল ঔষধ খাত, যা মোট লেনদেনের ১৭.৫%। এরপরই ছিল ব্যাংক খাতের ১৩.২% এবং বস্ত্র খাতের ১০.৪% অবদান। বেশিরভাগ খাতেই ইতিবাচক রিটার্ন দেখা গেছে, যার মধ্যে পাট খাতে ৫.৬%, ট্যানারি খাতে ১.৩% এবং পেপার খাতে ০.৮% প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

এদিকে, বন্দরনগরীর স্টক এক্সচেঞ্জ চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের পতন দেখা গেছে। সিএসসির প্রধান সূচক সিএসসিএক্স ৫.৮ পয়েন্ট এবং সিএএসপিআই ১৫ পয়েন্ট কমেছে।

আরও পড়ৃন:

রহিমা ফুডের অস্বাভাবিক শেয়ার দাম উল্লম্ফন, হঠাৎ কারখানা বন্ধ

‘জেড’ ক্যাটাগরির দুই কোম্পানির শেয়ারে বাজিমাত

জামিরুল ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ