ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট ২০২৫, ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২

আনোয়ার ইব্রাহিমের বাংলাদেশ সফর প্রেরণার প্রতীক: অধ্যাপক ইউনূস

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৪ ২২:২০:৫৪
আনোয়ার ইব্রাহিমের বাংলাদেশ সফর প্রেরণার প্রতীক: অধ্যাপক ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবেদক: মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের ২০২৪ সালের ঢাকা সফর বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার পর দেশের মানুষের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মানসিক প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বারনামাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন।

“আনোয়ার ইব্রাহিমের সফর কঠিন সময়ে আমাদের দেশের জনগণের মধ্যে আশা ও আত্মবিশ্বাস জাগিয়েছে,” বলেছেন অধ্যাপক ইউনূস। সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেন বারনামার প্রধান সম্পাদক আরুল রাজুর নেতৃত্বে সাংবাদিকরা।

গণ–অভ্যুত্থান ও দেশের অনিশ্চয়তা

অধ্যাপক ইউনূস স্মরণ করেন, ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট থেকে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশের ছাত্র ও জনতার নেতৃত্বে জুলাই গণ–অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়। এর ফলে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হন।

তিনি বলেন, “তৎপরবর্তী পরিস্থিতি এমন ছিল যেন ম্যাগনিচিউড ৯-এর ভূমিকম্প এসে ধ্বংস করেছে সবকিছু। বিশৃঙ্খলা নেমে এসেছে, কিছুই স্বাভাবিকভাবে চলছিল না—শুধু ক্ষোভ ফুঁসে উঠছিল।”

অধ্যাপক ইউনূস আরও যোগ করেন, “এমন কঠিন সময়ে দেশ চালানোর দায়িত্ব নেওয়া সহজ ছিল না। শুধু বিশৃঙ্খলা দূর করতে নয়, সবকিছু নতুনভাবে গড়ে তুলতে হয়েছিল। ঠিক তখনই সুখবর এল—মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আমাদের দেশে আসছেন।”

আনোয়ার ইব্রাহিমের সফর: আশা ও উৎসাহ

নোবেলজয়ী অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আনোয়ার ইব্রাহিম ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে বাংলাদেশ সফর করেন। এটি ছিল নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র দুই মাসের মধ্যেই প্রথম গুরুত্বপূর্ণ বিদেশি সফর।

“সফরটি জনগণের মধ্যে বিপুল উচ্ছ্বাস তৈরি করেছে। মালয়েশিয়া বাংলাদেশের মানুষের কাছে পরিচিত দেশ—এখানে বহু বাংলাদেশি বসবাস করেন। প্রধানমন্ত্রী এসে বললেন, ‘হ্যাঁ, আমরা তোমাদের পাশে আছি’—এটি জনগণের জন্য অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক ও অনুপ্রেরণাদায়ক ছিল,” বলেন অধ্যাপক ইউনূস।

মালয়েশিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্ক ও দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা

অধ্যাপক ইউনূস ১১–১৩ আগস্ট মালয়েশিয়ায় তিন দিনের সরকারি সফর করেন। এই সফরে তিনি বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শ্রম, শিক্ষা, পর্যটন ও প্রতিরক্ষা খাতসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক স্বার্থের বিষয় নিয়ে আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে বৈঠক করেন।

তিনি বলেন, “সফরটি অত্যন্ত সফল হয়েছে। আমরা যেসব কর্মকর্তা, নেতা ও ব্যবসায়ীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম, সবাই উদারভাবে এগিয়ে এসেছেন। এটি দুই দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার করবে এবং পারস্পরিক উপকারী ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্প্রসারিত করবে।”

দক্ষিণ এশিয়ায় মালয়েশিয়া বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার ও রপ্তানি গন্তব্য। প্রধান রপ্তানি পণ্য হলো পেট্রোলিয়ামজাত দ্রব্য, পাম তেল ও রাসায়নিক দ্রব্য, আর আমদানি পণ্য হলো টেক্সটাইল, জুতা ও প্রস্তুত পণ্য। ২০২৪ সালে দুই দেশের বাণিজ্য ৫.১% বৃদ্ধি পেয়ে ১৩.৩৫ বিলিয়ন রিঙ্গিত (২.৯২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) হয়েছে।

আল-আমিন ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ