
Alamin Islam
Senior Reporter
সিমটেক্স লুটেপুটে খাচ্ছে পিকে হালদার চক্র : আইপিওর পরে মুনাফায় ধস

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর থেকেই সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে লুটপাট শুরু করে প্রশান্ত কুমার হালদারের চক্র। যারা কোম্পানিটিকে আরও লুটেপুটে খাওয়ার জন্য বিদেশে পালিয়ে যাওয়া পিকে হালদারের সহযোগি ও সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়াজ রহমান সাকিব দেশে ফিরে পর্ষদে বিতর্কিতভাবে রাতারাতি পরিবর্তন আনেন। এরপর থেকে নিয়মিতভাবে কোম্পানিটিকে ধংসে লুটেপুটে শেষ করে দিচ্ছেন।
ব্যবসা বাড়ানোর লক্ষ্যে ২০১৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ প্রতিটি শেয়ার ২০ টাকা করে ইস্যুর মাধ্যমে ৬০ কোটি টাকা উত্তোলন করে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ৩.৩৩ টাকা মুনাফা দেখিয়ে এই প্রিমিয়ামে টাকা তুলে নেয়। যে কোম্পানিটির আইপিও পূর্ব টানা মুনাফা বাড়লেও এখন নিয়মিত ধস হয়।
আইপিওকালীন ২৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকার পরিশোধিত মূলধন দিয়ে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ১৩৫ কোটি ৯২ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি এবং এ থেকে সব ব্যয় শেষে কোম্পানিটির ৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা নিট মুনাফা দেখানো হয়েছিল।
কিন্তু তালিকাভুক্তির মাধ্যমে কোম্পানিটির পরিশোধিত প্রায় ৩ গুণ বা ৭৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা হলেও মুনাফা এখন আইপিওকালীন সময়ের থেকে কমে এসেছে। অথচ মুনাফা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রিমিয়ামে কোম্পানিটি শেয়ারবাজার থেকে টাকা উত্তোলন করে।
এ কোম্পানিটির সর্বশেষ ৫ অর্থবছরের মধ্যে ২০১৯-২০ অর্থবছরে নিট মুনাফা ৪.৪৫ কোটি টাকা বা ইপিএস হয়েছে ০.৫৬ টাকা। এছাড়া ২০২০-২১ অর্থবছরে নিট মুনাফা ৭.৩১ কোটি টাকা বা ইপিএস ০.৯২ টাকা, ২০২১-২২ অর্থবছরে নিট মুনাফা ৭.৭৩ কোটি টাকা বা ইপিএস ০.৯৭ টাকা, ২০২২-২৩ অর্থবছরে নিট মুনাফা ৬.৫৩ কোটি টাকা বা ইপিএস ০.৮২ টাকা ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে নিট মুনাফা ৬.৮১ কোটি টাকা বা ইপিএস ০.৮৬ টাকা হয়েছে।
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর থেকেই কোম্পানিটিতে লুটপাট শুরু করে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের হোতা পিকে হালদারের সহযোগি সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান ও তার পরিবার। যে কারনে তালিকাভুক্তির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগকারীদের থেকে নিলেও কোম্পানির উন্নতি হয়নি। তবে পিকে হালদারকে সহযোগিতার কারনে সিদ্দিকুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের সিমটেক্সের শেয়ার ও ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করা হয়েছিল। যারা বিচারের মুখোমুখি হওয়ার ভয়ে বিদেশে পালিয়ে যান।
পিকে হালদারের চক্র কোম্পানিটিকে ধংসের পথে নিয়ে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীদের আস্থাও তলানিতে নেমে এসেছে। যে কারনে তালিকাভুক্তির ১০ বছর পরে এসে ২০ টাকা ইস্যু মূল্যের শেয়ারটি এখন ১৫ টাকায় নেমে এসেছে। অথচ বিশ্বের অন্যসব দেশে এতো বছরে বিনিয়োগ কয়েকগুণ হয়ে যেত। কিন্তু বাংলাদেশে সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমানদের মতো লোকজনের কারনে তা হয় না। বরং বিনিয়োগ আরও তলানিতে নেমে আসে।
সিদ্দিকুর রহমান পালিয়ে যাওয়ায় ২০২১ সালে কোম্পানির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন শেয়ারহোল্ডার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব:) মোঃ আনিসুর রহমান। কিন্তু তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পরে বিদেশে থেকেই বিভিন্নভাবে কোম্পানি থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে থাকেন সিদ্দিকুর রহমান। এছাড়া বন্ডের সূতা খোলাবাজারে বিক্রিসহ নানা অনিয়ম করতে থাকেন। যা মেনে নিতে না পেরে এবং কোম্পানি আইন অনুযায়ি চলবে জানিয়ে তাকে চিঠি দেন চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান। এরপরেই ঘটে বিপত্তি।
অথচ সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত একটি কোম্পানি। যার মালিকানায় রয়েছে হাজারো সাধারন বিনিয়োগকারী। যারা সিদ্দিকুর রহমানদের বিশ্বাস করে কোটি কোটি টাকা সিমটেক্সে বিনিয়োগ করেছেন। যে ৭৯ কোটি ৬০ লাখ টাকার পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটিতে সাধারন বিনিয়োগকারীদের মালিকানা ৬৮.৩৫ শতাংশ। অথচ উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা মাত্র ৩১.৬৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক হয়েও পুরো কোম্পানি লুটেপুটে খেতে চায়।
এ বিষয়ে অন্যায়ভাবে পর্ষদ থেকে অপসারন করা চেয়ারম্যান আনিসুর রহমানের অভিযোগ, সিদ্দিকুর রহমানের টাকা সড়িয়ে নেওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে আপত্তি ও আইন অনুযায়ি কোম্পানি চলবে বলে তাকে ২০২২ সালের মে মাসে চিঠি দেই। যেটা তিনি মেনে নিতে পারেননি। এর আলোকে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া তার ছেলে নিয়াজ রহমান সাকিব দেশে আসে। এরপরে তিনি ও তার চক্র মেজর জেনারেল (অব.) মোঃ সারওয়ার হোসেনকে স্বতন্ত্র পরিচালক এবং চেয়ারম্যান করেন।
এরপর থেকে কোম্পানিটি থেকে নানাভাবে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে পিকে হালদারের পেতাত্মারা। যারা এরইমধ্যে কোম্পানির অনেক টাকা সরিয়ে নিয়েছে। যে কোম্পানি এখন বন্ধ হয়ে গেলেও তাদের কোন সমস্যা নেই। কারন তারা এরইমধ্যে তাদের বিনিয়োগের কয়েকগুণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বিভিন্ন অবৈধ উপায়ে।
কোম্পানিটির এক কর্মকর্তা বলেন, এখনতো কোম্পানিতে যা খুশি, তাই হচ্ছে। উপরি মহলের লোকজন যেভাবে পারছে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ কোম্পানিটি খুবই সম্ভাবনাময় ছিল। কিন্তু পিকে হালদারের কবলে পড়ে এখন দূর্বল। তারপরেও থেমে নেই হাতিয়ে নেওয়া। তা না হলে কোম্পানিটি থেকে এখনো শেয়ারহোল্ডারদের ভালো কিছু দেওয়া সম্ভব ছিল। কিন্তু যেভাবে লুটপাট চলছে, তাতে করে কতদিন টিকে থাকবে, সেটা নিয়েই এখন শঙ্কা
আল-আমিন ইসলাম/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- দেশের রাজনীতি নতুন মোড়: সেনাপ্রধানের শঙ্কাই সত্যি হতে চলেছে
- শেষ হলো বাংলাদেশ বনাম নেপালের মধ্যকার ম্যাচ, জানুন ফলাফল
- সেনাবাহিনী প্রধানের নতুন ঘোষণা, যা বললেন তিন বাহিনী প্রধান
- শুরু বাংলাদেশ বনাম নেপাল ম্যাচ: ম্যাচটি লাইভ দেখুন এখানে
- শেষ হলো বাংলাদেশ বনাম পার্থ স্কর্চার্সের মধ্যকার ম্যাচ, জানুন ফলাফল
- প্রকৌশল খাতের ৫ কোম্পানির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি
- টপ এন্ড টি–টোয়েন্টি: বাংলাদেশ বনাম নেপাল ম্যাচ লাইভ দেখার সহজ উপায়
- বিদেশি বিনিয়োগকারীদের চাহিদার শীর্ষে চার কোম্পানির শেয়ার
- রাষ্ট্রপতির ছবি সরানো নিয়ে তোলপাড়, নীরব বিদায়ের ইঙ্গিত?
- ক্রিকেট দুনিয়ায় শোকের কালো ছায়া: মারা গেলেন অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি অধিনায়ক
- বিক্রেতা সংকটে হল্ডেট ৩ কোম্পানি
- বিদায়ী সপ্তাহে ৮ কোম্পানির শেয়ার বছরের সর্বনিম্ন দামে
- কিছুক্ষণ পর বাংলাদেশ বনাম নেপাল লড়াই: ম্যাচটি লাইভ দেখার সহজ উপায়
- ‘বি’ ক্যাটাগরির শেয়ারে চমক
- চলতি সপ্তাহে ৭ কোম্পানির এজিএম অনুষ্ঠিত হবে