ঢাকা, বুধবার, ২০ আগস্ট ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২

৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি: সাড়ে ৫৮ হাজার শিক্ষক পদ এখনো ফাঁকা

শিক্ষা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ আগস্ট ২০ ১৪:২৩:৩৫
৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি: সাড়ে ৫৮ হাজার শিক্ষক পদ এখনো ফাঁকা

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের বহুল প্রত্যাশিত ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এনটিআরসিএ (বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ) এ ধাপে ৪১ হাজার ৬২৭ জন প্রার্থীকে নিয়োগের সুপারিশ করেছে। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, মোট শূন্য পদ ছিল ১ লাখ ৪২টি। অর্থাৎ, নিয়োগ সুপারিশের পরও প্রায় সাড়ে ৫৮ হাজার পদ খালি রয়ে যাচ্ছে।

নিয়োগের প্রক্রিয়া কেমন হলো?

মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে ফলাফল হস্তান্তর করেন এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান। সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়—

প্রাথমিকভাবে চাহিদা ছিল ১,০০,৮২২টি শূন্যপদ।

প্রতিষ্ঠানপ্রধান ও মাউশির অনুরোধে ৭৮০টি পদ বাতিল করা হয়।

অবশিষ্ট ১,০০,০৪২টি পদের বিপরীতে অনলাইনে আবেদন জমা পড়ে ৫৭,৮৪০টি।

আবেদনকারীদের মেধাক্রম ও পছন্দক্রম অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যারের মাধ্যমে চূড়ান্ত হয় ৪১,৬২৭ জন প্রার্থীর নিয়োগ সুপারিশ।

তবে ১২৫ জন প্রার্থী নীতিমালা বহির্ভূত আবেদন করায় তাদের ফলাফলের তালিকায় রাখা হয়নি।

আবেদন ও পরীক্ষার ধাপ

এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় ১৬ জুন। ২২ জুন থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত আবেদন গ্রহণ করা হয়। আবেদনকারীর মধ্যে পুরুষ ছিলেন ৩৩,৮০৪ জন, আর নারী ছিলেন ২৪,০৩৬ জন।

প্রার্থীদের মেধাক্রম নির্ধারণে মূলত লিখিত পরীক্ষার নম্বর বিবেচনায় নেওয়া হয়। সমান নম্বর পাওয়া প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বয়স, এসএসসি ও সমমানের ফলাফল এবং সর্বোচ্চ ডিগ্রির ফলাফল বিবেচনা করে চূড়ান্ত মেধাক্রম তৈরি করা হয়েছে।

কেন এত শূন্য পদ রয়ে গেল?

শিক্ষাবিদদের মতে, এই ধাপে বিপুলসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ হলেও শূন্যপদ এত বেশি থাকায় সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। দেশের বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখনো একাধিক বিষয়ে শিক্ষক নেই, ফলে পাঠদান কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ছাড়া এই সংকট কাটানো কঠিন এবং শিক্ষার মানও ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।

নিবন্ধন পরীক্ষার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

১৮তম নিবন্ধন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় ২০২৩ সালের ২ নভেম্বর। আবেদন করেন ১৮ লাখ ৬৪ হাজার ৭১৯ জন।

প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২০২৪ সালের ১৫ মার্চ; অংশ নেন ১৩ লাখ ৪০ হাজার ৮৩৩ জন, উত্তীর্ণ হন প্রায় ৪ লাখ ৮০ হাজার প্রার্থী।

লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৬৮০ জন, উত্তীর্ণ হন ৮৩ হাজার ৮৬৫ জন।

মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন ৮১ হাজার ২০৯ জন এবং উত্তীর্ণ হন ৬০ হাজার ৬৩৪ জন।

এসব উত্তীর্ণ প্রার্থীর মধ্য থেকেই এবার নিয়োগের সুপারিশ দেওয়া হয়েছে।

সারকথা

এনটিআরসিএর এই নিয়োগ সুপারিশে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন শিক্ষক যোগ হলেও শিক্ষাখাতে সাড়ে ৫৮ হাজার পদ শূন্য রয়ে গেছে। শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, শিক্ষার মান বজায় রাখতে এই বিপুল শূন্যপদ দ্রুত পূরণ করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

আল-আমিন ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ