ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট ২০২৫, ৬ ভাদ্র ১৪৩২

বাংলাদেশীদের জন্য সুখবর! ভিসা ও টিকিটের টাকা দেবে মালয়েশিয়া

প্রবাসী ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ আগস্ট ২১ ০৮:৫৯:৪৬
বাংলাদেশীদের জন্য সুখবর! ভিসা ও টিকিটের টাকা দেবে মালয়েশিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক: মালয়েশিয়ায় একটি উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখা লক্ষ লক্ষ বাংলাদেশীর জন্য অবশেষে এলো এক বিশাল সুখবর। এখন থেকে মালয়েশিয়া যেতে কর্মীদের আর নিজেদের পকেট থেকে ভিসা বা বিমানের টিকিটের জন্য টাকা খরচ করতে হবে না। মালয়েশিয়া সরকার এক যুগান্তকারী পদক্ষেপে জানিয়েছে, বাংলাদেশী কর্মীদের অভিবাসনের প্রধান খরচগুলো अब নিয়োগকর্তারাই বহন করবেন।

যেসব খরচ আর কর্মীদের দিতে হবে না

অতীতে মালয়েশিয়ায় যেতে একজন কর্মীকে ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হতো, যা জোগাড় করতে গিয়ে বহু পরিবারকে জমি-জমা বিক্রি করে নিঃস্ব হতে হয়েছে। দালাল চক্রের প্রতারণায় সেই টাকা জলে যাওয়ার ঘটনাও ছিল অহরহ।

কিন্তু সেই দুঃস্বপ্নের দিন শেষ হতে চলেছে। নতুন নিয়মে, মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তারা কর্মীদের জন্য নিম্নলিখিত খরচগুলো প্রদান করতে বাধ্য থাকবেন:

ভিসা প্রসেসিং ফি

মেডিকেল পরীক্ষার খরচ

বিমানের টিকিট

এই সিদ্ধান্তের ফলে কর্মীদের অভিবাসন ব্যয় কার্যত শূন্যে নেমে আসবে। তবে, স্বচ্ছতা ও ব্যবস্থাপনার জন্য কর্মীর প্রথম মাসের বেতন থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সার্ভিস চার্জ কেটে নেওয়া হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

দালালমুক্ত নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া

এই পরিবর্তন সম্ভব হচ্ছে একটি আধুনিক, প্রযুক্তি-নির্ভর এবং দালালমুক্ত নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। মালয়েশিয়া সরকার আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (ILO) নীতিমালা অনুসরণ করে একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) চালিত অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে। কর্মীরা এখন থেকে "ইউনিভার্সাল রিক্রুটমেন্ট প্রসেস (URP)" এবং "ডাইরেক্ট লেবার রিক্রুটমেন্ট (DLR) প্লাস" নামক প্ল্যাটফর্মে সরাসরি নিজেদের নাম নিবন্ধন করতে পারবেন।

এই ডিজিটাল ব্যবস্থার ফলে নিয়োগকর্তারা সরাসরি নিবন্ধিত কর্মীদের তালিকা থেকে যোগ্য প্রার্থী বাছাই করতে পারবেন। এতে কর্মী ও নিয়োগকর্তার মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে এবং মধ্যস্বত্বভোগী বা দালালদের প্রতারণার কোনো সুযোগ থাকবে না।

কূটনৈতিক সাফল্য ও দেশের জন্য বড় অর্জন

এই অভাবনীয় সুযোগ সৃষ্টির পেছনে রয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নিবিড় কূটনৈতিক প্রচেষ্টা। তার এই উদ্যোগের ফলেই মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে বাংলাদেশীদের জন্য এই সম্মানজনক ও নিরাপদ অভিবাসনের পথ খুলেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রক্রিয়া সফল হলে এটি কেবল কর্মীদের আর্থিক সাশ্রয়ই করবে না, বরং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতেও বড় ভূমিকা রাখবে।

সম্ভাবনার বিশাল দুয়ার

মালয়েশিয়া সরকার ইতোমধ্যে কৃষি, নির্মাণ, বাগান এবং সার্ভিস সেক্টরসহ মোট ১৩টি খাতে বাংলাদেশীদের জন্য প্রায় সাড়ে ২৪ লক্ষ কলিং ভিসা উন্মুক্ত করেছে। এই বিশাল সুযোগ কাজে লাগিয়ে, এখন লক্ষ লক্ষ বাংলাদেশী কোনো আর্থিক ঝুঁকি ছাড়াই মালয়েশিয়ায় বৈধভাবে কাজ করার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন।

মো: রাজিব আলী/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ