ঢাকা, শুক্রবার, ২২ আগস্ট ২০২৫, ৭ ভাদ্র ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

গুজব না সত্য: যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা হাসিনার পদত্যাগপত্র খুঁজে পায়নি

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ আগস্ট ২২ ১৮:১৯:১৭
গুজব না সত্য: যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা হাসিনার পদত্যাগপত্র খুঁজে পায়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক: সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দাবি করা হয় যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র খুঁজে পায়নি এবং হোয়াইট হাউস তাকে বাংলাদেশের বৈধ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এই দাবির কোনো ভিত্তি নেই এবং ভিডিওটি সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি দেশের ও ভিন্ন প্রসঙ্গের।

ঘটনার সূত্রপাত

ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটিতে দাবি করা হয়, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা শেখ হাসিনার পদত্যাগ সংক্রান্ত কোনো নথি খুঁজে না পাওয়ায় হোয়াইট হাউস তাকেই বাংলাদেশের বৈধ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করেছে। এই খবরটি নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহের সঞ্চার করে এবং তারা এটিকে 'দৈববাণী' হিসেবে প্রচার করতে শুরু করেন। তাদের প্রচারণায় এমনভাবে বিষয়টি উপস্থাপন করা হয় যেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে শেখ হাসিনাকে ফোন করে তার পদে বহাল থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অনুসন্ধানে বেরিয়ে এলো সত্য

অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের তথ্যানুসারে, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউসের কোনো ঘোষণার নয়, বরং এটি অস্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্টের একটি অধিবেশনের দৃশ্য। ভিডিওতে বক্তব্যরত ব্যক্তিটি হলেন অস্ট্রেলিয়ার জ্বালানি ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী ক্রিস বোয়েন। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বক্তব্য রাখছিলেন এবং তার বক্তব্যে শেখ হাসিনা বা বাংলাদেশ সংক্রান্ত কোনো কথাই উল্লেখ করেননি। ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থাগুলোও এই ভিডিওটিকে একটি "নিছক ভুয়া প্রচার" এবং "রাজনৈতিক ভাঁওতাবাজি" বলে চিহ্নিত করেছে।

রাজনৈতিক ভাষ্য

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যখন কোনো রাজনৈতিক দল সত্যের পক্ষে দাঁড়াতে পারে না, তখনই তারা মিথ্যার আশ্রয় নেয়। আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রেও এমনটাই ঘটেছে। তারা এমন একটি ভুয়া ভিডিওর মাধ্যমে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করেছে, যা ক্ষণিকের জন্য চোখ ধাঁধালেও মিলিয়ে গেছে।

এই ঘটনাটি আবারও প্রমাণ করলো যে, রাজনীতিতে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে দীর্ঘ সময় টিকে থাকা সম্ভব নয়। জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসই রাজনীতির মূল ভিত্তি, যা কেবল সত্যের পথেই অর্জন করা সম্ভব। যে রাজনীতিতে ভাঁওতাবাজি ও ছলচাতুরির আশ্রয় নেওয়া হয়, তা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায় না।

আল-আমিন ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ