ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট ২০২৫, ১১ ভাদ্র ১৪৩২

ফিক্সিংয়ের কালো ছায়া: সাব্বিরকে ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ করলো আকু

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ আগস্ট ২৬ ০৮:৪২:৪০
ফিক্সিংয়ের কালো ছায়া: সাব্বিরকে ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ করলো আকু

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের ময়দান আবারও কলঙ্কিত হলো ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) ম্যাচ পাতানোর গুরুতর অভিযোগ ওঠায় শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের ব্যাটার মিনহাজুল আবেদিন সাব্বিরের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) অ্যান্টি-করাপশন ইউনিট (আকু) কমপক্ষে পাঁচ বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করেছে। এই ঘটনা দেশের ক্রিকেট অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

আকুর তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাব্বির বিসিবির দুর্নীতি দমন কোডের একাধিক ধারা লঙ্ঘন করেছেন। মূলত, ডিপিএল চলাকালীন তিনি একটি সন্দেহভাজন বিদেশি নম্বরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করতেন, যা আন্তর্জাতিক বুকমেকার চক্রের অংশ বলে মনে করা হচ্ছে। এই ঘটনার গভীরতা আঁচ করতে পেরে তদন্তকারী কর্মকর্তারা এতে একটি আন্তর্জাতিক সিন্ডিকেটের জড়িত থাকার আশঙ্কা করছেন এবং প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) গ্লোবাল আকু ও ইন্টারপোলের সাহায্য নেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে।

এই ফিক্সিং বিতর্কের সূত্রপাত হয় গুলশানের বিপক্ষে শাইনপুকুরের একটি ম্যাচের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর। ভিডিওতে দেখা যায়, ম্যাচের ৩৬তম ওভারে শাইনপুকুরের ওপেনার রাহিম আহমেদ অবিশ্বাস্যভাবে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে আউট হন। তবে সবচেয়ে বেশি চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে ৪৪তম ওভারে সাব্বিরের নিজের আউট হওয়ার ভঙ্গি। প্রায় কোনো প্রতিরোধ না গড়ে সরাসরি উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি, যা ম্যাচ পাতানোর সন্দেহকে বহুলাংশে বাড়িয়ে দেয়।

সাব্বিরের ঘটনাকে হালকাভাবে নিচ্ছে না আকু। তাদের প্রতিবেদনে মোহাম্মদ আশরাফুলের উদাহরণ টেনে এনে বলা হয়েছে, এই ধরনের অপরাধের জন্য কঠোর শাস্তিই একমাত্র পথ। ২০১৩ সালে আশরাফুলকে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের দায়ে আট বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। আকুর সুপারিশে বলা হয়েছে, সাব্বিরের অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ৮-১০ বছর পর্যন্তও বাড়ানো যেতে পারে।

ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়াতে আকু একগুচ্ছ সুপারিশ পেশ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে—ড্রেসিংরুমে যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ, গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোতে অ্যান্টি-করাপশন পর্যবেক্ষক নিয়োগ, বেটিং মার্কেটের ওপর সার্বক্ষণিক নজরদারি এবং খেলোয়াড়দের জন্য সন্দেহজনক যোগাযোগের তথ্য রিপোর্ট করা বাধ্যতামূলক করা।

এখন পুরো বিষয়টি বিসিবির চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। সাব্বিরের বিরুদ্ধে আকুর এই সুপারিশ গৃহীত হলে তা বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে এবং ভবিষ্যতের জন্য একটি কঠোর বার্তা দেবে। ক্রিকেটপ্রেমীরা এখন বোর্ডের রায়ের দিকেই তাকিয়ে আছেন।

আল-আমিন ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ