ঢাকা, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১ ভাদ্র ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

সতর্ক! ১১ কোম্পানির শেয়ার ডুবছে বিনিয়োগকারীরা, বিনিয়োগে ঝুঁকি?

শেয়ারনিউজ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৫ ২২:৪১:১৫
সতর্ক! ১১ কোম্পানির শেয়ার ডুবছে বিনিয়োগকারীরা, বিনিয়োগে ঝুঁকি?

দেশের শেয়ারবাজার যখন ধীর গতিতে উন্নতির মুখ দেখছে এবং অনেক কোম্পানির শেয়ারের দাম আকাশ ছুঁয়েছে, ঠিক তখনই কিছু কোম্পানির শেয়ার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। কারণ, ১১টি শেয়ার বর্তমানে তাদের এক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন মূল্যে লেনদেন হচ্ছে, যা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।

এই শেয়ারগুলো হলো: ফ্যামিলি টেক্স, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, ফাস ফাইন্যান্স, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, জিএসপি ফাইন্যান্স, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, পিপলস লিজিং, প্রিমিয়ার লিজিং এবং ইউনিয়ন ব্যাংক।

তলানিতে ঠেকেছে যে শেয়ারগুলো:

বিনিয়োগকারীদের জন্য চরম উদ্বেগের বিষয় হলো, এই কোম্পানিগুলোর শেয়ারমূল্য অপ্রত্যাশিতভাবে কমে গেছে। ফ্যামিলি টেক্সের শেয়ার দর প্রায় ৪৭ শতাংশ কমে ১ টাকা ৯০ পয়সায় নেমে এসেছে। ফারইস্ট ফাইন্যান্সের ক্ষেত্রে পতন আরও ভয়াবহ, প্রায় ৬৯ শতাংশ দর হারিয়ে এখন ১ টাকা ৬০ পয়সায় লেনদেন হচ্ছে। ফাস ফাইন্যান্স ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক যথাক্রমে ৬৫ শতাংশ ও ৬১ শতাংশ কমে ১ টাকা ৫০ পয়সা এবং ১ টাকা ৬০ পয়সায় ঠেকেছে। গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দর ৬৬ শতাংশ কমে ২ টাকা ৩০ পয়সায় পৌঁছেছে।

অনুরূপভাবে, জিএসপি ফাইন্যান্সের শেয়ার মূল্য ৭৩ শতাংশ কমে ৩ টাকা ১০ পয়সায়, আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের ৩১ শতাংশ কমে ২ টাকা ৪০ পয়সায়, ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের ৬১ শতাংশ কমে ১ টাকা ৮০ পয়সায়, পিপলস লিজিংয়ের ৬৫ শতাংশ কমে ১ টাকা ৩০ পয়সায়, প্রিমিয়ার লিজিংয়ের ৬২ শতাংশ কমে ১ টাকা ৮০ পয়সায় এবং ইউনিয়ন ব্যাংকের ৬৬ শতাংশ কমে ২ টাকা ৩০ পয়সায় নেমে এসেছে।

কেন এই পতন? বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ:

বাজার বিশ্লেষকরা এই ভয়াবহ পতনের পেছনে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ উল্লেখ করেছেন। তাদের মতে, ব্যাংক ও আর্থিক খাতের ক্রমবর্ধমান খেলাপি ঋণ এবং সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর অভ্যন্তরীণ দুর্বলতাই এই দরপতনের প্রধান অনুঘটক। এছাড়া, অনেক ব্যাংক একীভূতকরণ প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে এবং কিছু আর্থিক কোম্পানি বন্ধ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমিয়ে দিয়েছে। ফলস্বরূপ, একসময় ১০ টাকা মূল্যের শেয়ারগুলো এখন মাত্র কয়েক টাকায় কেনাবেচা হচ্ছে।

বিনিয়োগকারীদের করণীয় ও ভবিষ্যতের ভাবনা:

এই কঠিন সময়ে বিনিয়োগকারীরা একদিকে যেমন বাজারে ইতিবাচক গতি দেখতে চান, অন্যদিকে এমন ধারাবাহিক দরপতন তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন করে তুলছে। বিশেষ করে আর্থিক খাতের শেয়ারগুলো দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জন্য উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে।

তবে বিশ্লেষকরা মনে করেন, যদি সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা কার্যকর পদক্ষেপ নেয় এবং আর্থিক সংস্কারের উদ্যোগগুলো সফল হয়, তাহলে শেয়ারবাজার আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারে। বর্তমানের এই দরপতন দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগকারীদের জন্য সঠিক মূল্যায়নের সুযোগও তৈরি করতে পারে। বিনিয়োগকারীদের জন্য মূল পরামর্শ হলো: সতর্ক থাকা, বাজারকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা এবং কেবল দীর্ঘমেয়াদি সম্ভাবনা বিবেচনা করে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া।

তানভির ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ