ঢাকা, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪ আশ্বিন ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

হামী ইন্ডাষ্ট্রিজের টিকে থাকার শেষ ভরসা কি শুধু ভাড়া?

শেয়ারনিউজ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৯ ১২:৩০:৫৮
হামী ইন্ডাষ্ট্রিজের টিকে থাকার শেষ ভরসা কি শুধু ভাড়া?

এক সময়ের উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান হামী ইন্ডাষ্ট্রিজ (Hameem Industries) এখন নিজেদের কারখানার অব্যবহৃত সম্পত্তি ভাড়ার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে, যা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তৈরি করেছে। ধারাবাহিক এই ঘটনা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, কোম্পানিটি তার মূল উৎপাদন কার্যক্রমের পরিবর্তে এখন সম্পত্তি ইজারার মাধ্যমে টিকে থাকার চেষ্টা করছে।

ভাড়ার ওপর ক্রমবর্ধমান নির্ভরতা

আজ সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রকাশিত ঘোষণা অনুযায়ী, হামী ইন্ডাষ্ট্রিজ তাদের চট্টগ্রামের পাহাড়তলী এলাকার কারখানার মোট ৩৫ হাজার বর্গফুট অব্যবহৃত জায়গার মধ্যে ২৩ হাজার ১০০ বর্গফুট জায়গা বিভিন্ন মেয়াদে তিনটি পৃথক চুক্তির মাধ্যমে ইজারা দিয়েছে।

সর্বশেষ চুক্তি অনুযায়ী, কোম্পানিটি তাদের কারখানার ১৪ হাজার বর্গফুট জায়গা আরকেএম অ্যাপারেলস লিমিটেড-কে পাঁচ বছরের জন্য প্রতি বর্গফুট ১৪ টাকা হারে ভাড়া দিয়েছে, যা ২০২৫ সালের ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে।

এর আগে, সুইফট নেক্সাস কর্পোরেশন-কে ২ হাজার ৩৫০ বর্গফুট এবং লুব্রিক্যান্ট এশিয়া লিমিটেড-কে ৬ হাজার ৭৫০ বর্গফুট জায়গা যথাক্রমে আট মাস ও দুই বছরের জন্য প্রতি বর্গফুট ২০ টাকা হারে ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। এই চুক্তিগুলোও কোম্পানির উৎপাদনহীনতারই ইঙ্গিত বহন করে।

বিশ্লেষকদের উদ্বেগ: মূল ব্যবসা সংকোচনের ইঙ্গিত

আর্থিক বিশ্লেষকদের মতে, একটি উৎপাদনমুখী কোম্পানি যখন তার বিশাল কারখানার দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি জায়গা ভাড়া দিতে বাধ্য হয়, তখন তা কোম্পানির মূল ব্যবসা সঙ্কুচিত হওয়ার স্পষ্ট ইঙ্গিত বহন করে। তারা বলছেন, এটি কেবল অব্যবহৃত জায়গা ভাড়া দেওয়া নয়, বরং একটি টেকসই ব্যবসায়িক মডেল থেকে সরে আসার লক্ষণ।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যদি হামী ইন্ডাষ্ট্রিজ তার মূল উৎপাদন কার্যক্রমে ফিরে আসতে না পারে এবং স্থায়ীভাবে ভাড়ার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে, তবে দীর্ঘমেয়াদে এটি শেয়ারবাজারে কোম্পানির ভাবমূর্তি ও প্রবৃদ্ধি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।বিনিয়োগকারীদের আশঙ্কা: পুনর্গঠন নাকি গুটিয়ে নেওয়ার পদক্ষেপ?

এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। তারা আশঙ্কা করছেন যে, হামী ইন্ডাষ্ট্রিজের এই পদক্ষেপ হয়তো কোম্পানির পুনর্গঠনের পথ নয়, বরং নিজেদের মূল কার্যক্রম গুটিয়ে নেওয়ারই একটি প্রাথমিক পদক্ষেপ। উৎপাদন খাতের একটি শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি হিসেবে হামী ইন্ডাষ্ট্রিজের এই পরিবর্তন দেশের শিল্পখাতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

কোম্পানিটির ভবিষ্যৎ কৌশল এবং উৎপাদন কার্যক্রমে ফিরে আসার পরিকল্পনা কী, তা নিয়ে বিনিয়োগকারী ও বাজার বিশ্লেষকদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। হামী ইন্ডাষ্ট্রিজ কি কেবল ভাড়ার ওপর নির্ভর করে টিকে থাকবে, নাকি আবারও উৎপাদনমুখী কার্যক্রমে ফিরে আসবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

আব্দুর রহিম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ