ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫ আশ্বিন ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফোন ডেটা ফাঁস, চাঞ্চল্যকর তথ্য উন্মোচন

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ৩০ ১৪:৫০:২১
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফোন ডেটা ফাঁস, চাঞ্চল্যকর তথ্য উন্মোচন

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফোন ডেটা মুছে ফেলার এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে, যা দেশের রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। গত বছরের ৫ আগস্ট, সাবেক প্রধানমন্ত্রী যখন ভারতের দিল্লিতে অবস্থান করছিলেন, ঠিক সেই সময়ে ন্যাশনাল টেলিযোগাযোগ মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি)-এর তৎকালীন মহাপরিচালক জিয়াউল আহসানের নির্দেশে তার ব্যক্তিগত কল রেকর্ড মুছে ফেলা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।

গুরুত্বপূর্ণ কল রেকর্ড মুছে ফেলার নজিরবিহীন ঘটনা:

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিশেষ তদন্ত সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, সেদিন সন্ধ্যায় এনটিএমসির সার্ভার থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চারটি ফোন নম্বরের মালিকানার তথ্যসহ প্রায় এক হাজার কল রেকর্ড রহস্যজনকভাবে গায়েব করে দেওয়া হয়। এই ঘটনাকে নজিরবিহীন বলে আখ্যা দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা ও প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহা। তিনি যুগান্তরকে বলেন, "৫ আগস্ট সন্ধ্যায় এনটিএমসির সার্ভার থেকে কলরেকর্ড মুছে ফেলার ঘটনা অভূতপূর্ব। সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসানের নির্দেশে এনটিএমসির কিছু চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তা এই ডিজিটাল আলামতগুলো মুছে ফেলেন। আমরা এসব মুছে ফেলা কলরেকর্ড পুনরুদ্ধারের সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি।"

সাবেক আইজিপি ও মন্ত্রীর ডেটাও লক্ষ্যবস্তু:

তদন্তে আরও বেরিয়ে এসেছে যে, কেবল সাবেক প্রধানমন্ত্রী নন, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন এবং একজন তৎকালীন পরিকল্পনা মন্ত্রীর কল রেকর্ডও একই সময়ে মুছে ফেলা হয়েছিল। এই তথ্য ঘটনার পেছনে আরও গভীর ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

জুলাই আন্দোলনের ফোনালাপ: মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ?

তানভীর জোহা জানান, গত বছরের জুলাই আন্দোলনের সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কিছু ফোনালাপ উদ্ধার করা হয়েছিল। এই ফোনালাপগুলোতে মারণাস্ত্র ব্যবহার এবং হেলিকপ্টার থেকে গুলি ছোড়ার মতো সংবেদনশীল নির্দেশনার বিষয়ে আলোচনা শোনা যায়। জোহা আরও উল্লেখ করেন, "জুলাই আন্দোলন দমনে এবং হতাহতের তথ্য গোপন করতে তখন ইন্টারনেট সংযোগ প্রায়শই বন্ধ করে দেওয়া হতো। বাধ্য হয়েই শেখ হাসিনাকে ফোনে কথা বলতে হতো। এই ইন্টারনেট বন্ধ থাকা মুহূর্তগুলোতে তার কথোপকথনগুলো গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে কাজ করছে।"

তদন্তের অগ্রগতি ও দেশজুড়ে প্রতিক্রিয়া:

এই গুরুতর ডেটা মুছে ফেলার ঘটনাকে ঘিরে দেশজুড়ে তীব্র আলোচনা ও সমালোচনা চলছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিশেষ তদন্ত সংস্থা বর্তমানে এই ঘটনার গভীরে প্রবেশ করে প্রকৃত জড়িতদের চিহ্নিত করতে এবং মুছে ফেলা ডেটা পুনরুদ্ধার করতে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য না এলেও, বিষয়টি দেশের নিরাপত্তা ও ডিজিটাল তথ্যের সুরক্ষায় বড় প্রশ্ন তুলেছে।

আল-মামুন/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ