ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

এইচএসসি বোর্ড চ্যালেঞ্জ ২০২৫: এক নজরে জানুন আবেদন প্রক্রিয়া

শিক্ষা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১৬ ১১:২৭:৩৮
এইচএসসি বোর্ড চ্যালেঞ্জ ২০২৫: এক নজরে জানুন আবেদন প্রক্রিয়া

উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলে এবার এক নজিরবিহীন বিপর্যয় দেখছে দেশ। গত বছরের তুলনায় পাসের হার প্রায় ১৯ শতাংশ কমে যাওয়ায় শিক্ষা মহলে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় গড় পাসের হার মাত্র ৫৮.৮৩ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে।

আজ সকাল ১০টায় সারা দেশের সব শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট, সংশ্লিষ্ট পরীক্ষাকেন্দ্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও এসএমএসের মাধ্যমে একযোগে এই ফলাফল প্রকাশিত হয়।

পাসের হারে ব্যাপক ধস: কারণ ও প্রতিক্রিয়া

এই বছর মোট ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র ৫৮.৮৩ শতাংশ উত্তীর্ণ হতে পেরেছেন। অর্থাৎ, গত বছরের তুলনায় প্রায় ১৮.৯৫ শতাংশ কম শিক্ষার্থী এবার কৃতকার্য হয়েছেন। শিক্ষার্থীদের এই বিশাল সংখ্যক অনুত্তীর্ণ হওয়া দেশের সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থায় বড় ধরনের প্রশ্ন তৈরি করেছে। হঠাৎ করে পাসের হার এতটা কমে যাওয়ার পেছনের কারণ এবং এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব কী হতে পারে, তা নিয়ে ইতোমধ্যে বিশদ আলোচনা শুরু হয়েছে।

শিক্ষাবিদ ও অভিভাবক মহল এই ফলাফলে চরম হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং এর নেপথ্যের কারণ অনুসন্ধানের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।`এইচএসসি খাতা চ্যালেঞ্জ ২০২৫: নতুন অনলাইন পদ্ধতি

যে সকল শিক্ষার্থী তাদের প্রকাশিত ফলাফল নিয়ে সন্তুষ্ট নন অথবা প্রত্যাশা অনুযায়ী ফল পাননি, তাদের জন্য পুনঃনিরীক্ষণ বা খাতা চ্যালেঞ্জের সুযোগ রেখেছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। তবে এবার এই আবেদনের নিয়মে এসেছে আমূল পরিবর্তন, যা শিক্ষার্থীদের জন্য জানা অত্যন্ত জরুরি।

আগের পদ্ধতি বাতিল:

পূর্বে টেলিটক সিম ব্যবহার করে এসএমএসের মাধ্যমে খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন করা হতো। যেখানে ফিরতি এসএমএসে পিন নম্বর এবং ফি বাবদ টাকার পরিমাণ জানানো হতো, যা পরবর্তীতে মোবাইল ব্যালেন্স থেকে কেটে নেওয়া হতো। এই পদ্ধতিটি এখন আর কার্যকর নেই।

নতুন অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া (ধাপে ধাপে):

শিক্ষার্থীদের এখন সম্পূর্ণরূপে অনলাইনে পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করতে হবে।

ওয়েবসাইটে প্রবেশ: প্রথমে আপনাকে শিক্ষা বোর্ডের নির্ধারিত পুনঃনিরীক্ষণ পোর্টালে(https://rescrutiny.eduboardresults.gov.bd/) প্রবেশ করতে হবে।

প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ: ওয়েবসাইটে আপনার রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর এবং আপনার সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ড ড্রপ ডাউন মেন্যু থেকে নির্বাচন করুন।

মোবাইল নম্বর সংযুক্ত করুন: এরপর 'সাবমিট' বাটনে ক্লিক করে একটি সক্রিয় মোবাইল নম্বর প্রদান করুন। পুনঃনিরীক্ষণের ফলাফল এই নম্বরে এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে।

বিষয়ভিত্তিক ফলাফল দর্শন ও নির্বাচন: পরবর্তী স্ক্রিনে আপনার বিষয়ভিত্তিক ফলাফল প্রদর্শিত হবে। যে সকল বিষয়ে আপনি পুনঃনিরীক্ষণ করতে ইচ্ছুক, সেগুলো সতর্কতার সাথে নির্বাচন করুন।

পুনঃনিরীক্ষণ ফি ও পরিশোধের নিয়ম:

ফি নির্ধারণ: নির্বাচিত প্রতিটি পত্রের জন্য ১৫০ টাকা হারে ফি পরিশোধ করতে হবে। দ্বিপত্র বিশিষ্ট বিষয়গুলির (যেমন: বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র) ক্ষেত্রে উভয় পত্রের জন্য আবেদন করতে হবে।

ফি পরিশোধের মাধ্যম: বিকাশ, নগদ, সোনালি সেবা, ডিডিবিএল রকেট এবং টেলিটক মোবাইল সিমের মাধ্যমে এই ফি পরিশোধ করা যাবে।

বিস্তারিত নির্দেশিকা: ফি পরিশোধের বিস্তারিত ধাপগুলো পোর্টালে থাকা 'হেল্প' বাটনে ক্লিক করে দেখে নেওয়া সম্ভব।

গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা:

আবেদন চূড়ান্তকরণ: ফি পরিশোধ সম্পন্ন হলে আবেদনের পোর্টালে ফিরে এসে 'জমা দিন' বাটনে ক্লিক করে আবেদন চূড়ান্ত করতে হবে।

অতিরিক্ত বিষয় যোগ: একবার আবেদন জমা দেওয়ার পরেও যদি আপনি অতিরিক্ত কোনো বিষয়ে আবেদন করতে চান, তাহলে একই প্রক্রিয়ায় তা করতে পারবেন। এক্ষেত্রে নতুন করে মোবাইল নম্বর দেওয়ার প্রয়োজন হবে না।

পরিবর্তন/বাতিল: ফি পরিশোধ করার আগে আপনি 'মুছে ফেলুন' বাটনে ক্লিক করে নির্বাচিত বিষয়গুলো পরিবর্তন বা বাতিল করতে পারবেন। তবে, একবার ফি জমা দেওয়া হয়ে গেলে আবেদন করা বিষয়গুলো আর বাতিল করা সম্ভব নয়।

এই ফলাফল বিপর্যয় এবং পরিবর্তিত আবেদন পদ্ধতি এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। তবে শিক্ষা বোর্ড আশা করছে, নতুন এই অনলাইন প্রক্রিয়া শিক্ষার্থীদের জন্য আবেদন প্রক্রিয়াকে আরও সহজ ও দ্রুত করবে।

তানভির ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ