ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২

২০২৫ সালের হজ: সৌদি আরবের নতুন নির্দেশনা, প্রস্তুতিতে জোর

ধর্ম ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১৬ ১২:০২:২৬
২০২৫ সালের হজ: সৌদি আরবের নতুন নির্দেশনা, প্রস্তুতিতে জোর

আগামী বছরের পবিত্র হজ সুষ্ঠু ও সুচারুভাবে পালনের লক্ষ্যে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি নির্দেশনা জারি করেছে। গত বুধবার (১৫ অক্টোবর) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এজেন্সিগুলোকে এই নির্দেশনাগুলো সম্পর্কে অবহিত করেছে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে, ২০২৫ সালের ২৬ মে সৌদি আরবে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। এই বছর বাংলাদেশের হজযাত্রীর কোটা ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন নির্ধারণ করা হয়েছে এবং ১৬ অক্টোবর প্রাথমিক নিবন্ধন শেষ হচ্ছে।

সৌদি সরকারের ৬টি নির্দেশনা, যা হজ ব্যবস্থাপনায় আনবে নতুনত্ব:

১. হজ চুক্তির জন্য জরুরি তথ্য: হজ চুক্তির খসড়া দ্রুত প্রণয়নের সুবিধার্থে, বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতের হজযাত্রীর সংখ্যা এবং জেদ্দা ও মদিনা বিমানবন্দর দিয়ে যাতায়াতকারী হজযাত্রীর সুনির্দিষ্ট তথ্য সৌদি কর্তৃপক্ষকে জরুরি ভিত্তিতে পাঠাতে হবে।

২. আবাসনে কঠোর নিয়ন্ত্রণ, লঙ্ঘন করলে কালো তালিকাভুক্তি: হজযাত্রীদের এক ভবন থেকে অন্য ভবনে স্থানান্তর, 'মাসার সিস্টেম'-এ ভুল তথ্য দিয়ে আবাসন নিশ্চিত করা বা অননুমোদিত ভবনে থাকার ব্যবস্থা করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় এ ধরনের কোনো অনিয়মের প্রমাণ পেলে সংশ্লিষ্ট এজেন্সি ও এর প্রধানকে কালো তালিকাভুক্ত করবে এবং সৌদি আরবে তাদের প্রবেশ স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করা হবে।

৩. গত বছরের কালো তালিকাভুক্ত এজেন্সিদের নিষেধাজ্ঞা: যেসব এজেন্সি ২০২৫ সালের হজ মৌসুমে কালো তালিকাভুক্ত হয়েছিল, তারা ২০২৬ সালের হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে না।

৪. হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে তথ্য বিনিময়ের বাধ্যবাধকতা: কার্যকর যোগাযোগের জন্য একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হচ্ছে। এই গ্রুপে যোগ্য এজেন্সিগুলোর নাম ও বিবরণসহ তালিকা তাৎক্ষণিকভাবে জমা দিতে হবে। এছাড়া, ২০২৬ সালের হজ মৌসুমে বাংলাদেশের মোট হজযাত্রীর সংখ্যা (সরকারি ও বেসরকারি), তাঁবু বুকিং সংক্রান্ত তথ্য, মনোনীত লিড এজেন্সির তালিকা ও তাদের হজযাত্রীর সংখ্যা, লিড এজেন্সির 'ওয়ালেটে' অর্থ আনয়ন সংক্রান্ত তথ্য, লিড এজেন্সির আইবিএএন নম্বর এবং বাংলাদেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত তথ্য দ্রুত আপলোড করতে হবে।

৫. স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও 'হজ অ্যাফেয়ার্স সার্টিফিকেট' বাধ্যতামূলক: সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক চিহ্নিত ৯ ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তি হজ পালনের জন্য সৌদি আরবে যেতে পারবেন না। প্রত্যেক হজযাত্রীর জন্য 'হজ অ্যাফেয়ার্স সার্টিফিকেট' থাকা বাধ্যতামূলক। এই সার্টিফিকেট প্রাপ্তিসাপক্ষেই ভিসা ইস্যু করা হবে। যদি সার্টিফিকেট প্রদান প্রক্রিয়ায় কোনো ত্রুটি ধরা পড়ে, তবে মেডিকেল টিমের প্রধানকে সৌদি আরবে নিষিদ্ধ করা হবে এবং ভবিষ্যতে মেডিকেল সেন্টার স্থাপন ও স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে। একই সাথে, হজ অ্যাফেয়ার্স অফিসের প্রধানকে নিষিদ্ধ করা হবে এবং পরবর্তী বছরের হজযাত্রী কোটায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

৬. নুসুক কার্ড বিতরণে নতুন পদ্ধতি ও নির্ভুল তথ্যের গুরুত্ব: ২০২৬ সালের হজ মৌসুমে হজযাত্রীদের 'নুসুক কার্ড' সরাসরি সৌদি আরবের বিমানবন্দর থেকে হোটেলে পরিবহনকারী বাসে বিতরণ করা হবে। এই উদ্দেশ্যে, প্রতিটি হজ পরিচালনাকারী সংস্থাকে হজযাত্রীদের মক্কা ও মদিনার হোটেলের নাম, ঠিকানা, কক্ষ নম্বর এবং বেড নম্বর নির্ভুল ও সম্পূর্ণভাবে আগে থেকেই সরবরাহ করতে হবে, যা নুসুক কার্ডে সন্নিবেশিত হবে।

ধর্ম মন্ত্রণালয় এই নির্দেশনাগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ জানিয়েছে, যাতে আগামী বছরের হজ আরও সুশৃঙ্খল ও নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়।

তানভির ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ