ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি: ৩৫ কলেজে একজনও পাশ করেনি

শিক্ষা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১৬ ১৮:৫৭:২৭
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি: ৩৫ কলেজে একজনও পাশ করেনি

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে সদ্য প্রকাশিত এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে এক নজিরবিহীন বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। গত বছরের তুলনায় পাসের হারে ২১.৮৪ শতাংশের এক বিশাল পতন ঘটেছে, যা শিক্ষামহল এবং অভিভাবকদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। যেখানে ২০২৪ সালে পাসের হার ছিল ৮১.২৪ শতাংশ, সেখানে চলতি বছর তা নেমে এসেছে ৫৯.৪০ শতাংশে। এই ফলাফলে বোর্ডের অধীনে থাকা ৩৫টি কলেজে একজন পরীক্ষার্থীও পাশ করতে পারেনি, যা শিক্ষার মান নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।

জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতেও ভয়াবহ চিত্র:

পাসের হারের এই পতনের পাশাপাশি জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যাতেও নেমে এসেছে এক ভয়াবহ ধস। গত বছর ২৪,৯০২ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ অর্জন করলেও, এবার সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১০,১৩৭ জনে। অর্থাৎ, ১৪,৭৬৫ জন কম শিক্ষার্থী এবার সর্বোচ্চ এই ফলাফল অর্জন করতে পেরেছেন। এই পরিসংখ্যান বোর্ডের সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থার দুর্বলতাকেই যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। মোট ৫৬,৪০৯ জন পরীক্ষার্থী এবার পরীক্ষায় ফেল করেছেন।

মেয়েরা আশার আলো দেখালেও, ছেলেদের ফলাফল হতাশাজনক:

তবে এই সামগ্রিক হতাশাজনক চিত্রের মধ্যেও কিছুটা আশার আলো দেখিয়েছেন ছাত্রীরা। জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের মধ্যে ৫,৬৮২ জন ছাত্রী এবং ৪,৪৫৫ জন ছাত্র। শুধু তাই নয়, পাসের হারেও মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে অনেক এগিয়ে। ছাত্রীদের পাসের হার ৬৮.৬৯ শতাংশ, যেখানে ছাত্রদের পাসের হার মাত্র ৫০.৬৯ শতাংশ। এই ফলাফল আবারও প্রমাণ করে, প্রতিকূলতার মাঝেও মেয়েরা শিক্ষাক্ষেত্রে তাদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে চলেছে।

অংশগ্রহণ ও পাশ করা শিক্ষার্থীর পরিসংখ্যান:

চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আটটি জেলায় মোট ১,৩৪,১৪৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন। এর মধ্যে পাশ করতে পেরেছেন ৭৭,৭৪২ জন। বোর্ডের অধীনে মাত্র ১৮টি কলেজ শতভাগ পাশ দেখাতে সক্ষম হয়েছে, যা ৩৫টি কলেজের শতভাগ ফেলের বিপরীতে একটি ক্ষুদ্র সাফল্যের চিত্র।

শিক্ষাবিদ ও অভিভাবকদের প্রতিক্রিয়া:

এই ফলাফলে রাজশাহী অঞ্চলের শিক্ষাবিদ এবং অভিভাবক মহল গভীরভাবে হতাশ। তাদের মতে, ৩৫টি কলেজের শতভাগ ফেলের ঘটনাটি স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অবকাঠামো, শিক্ষকের মান এবং পাঠদান পদ্ধতির ওপর প্রশ্নচিহ্ন সৃষ্টি করেছে। অনেক অভিভাবকই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিক্ষার মান নিয়ে শঙ্কিত এবং এ বিষয়ে শিক্ষা বোর্ডের দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন। এই ফলাফল বোর্ডের নীতিনির্ধারকদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখানে শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং এমন বিপর্যয় রোধে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তানভির ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ