ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ২ কার্তিক ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

৪ শ্রেণির জমির মালিকদের সুখবর দিল সরকার

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১৭ ১১:৩৫:৫২
৪ শ্রেণির জমির মালিকদের সুখবর দিল সরকার

৪ শ্রেণির জমির 'চিরতরে' খাজনা বাতিল: ভূমি উন্নয়ন কর নিয়ে সরকারের যুগান্তকারী ঘোষণা, মালিকদের জন্য বিশাল স্বস্তি!

ভূমি মালিকদের জন্য একটি অত্যন্ত সুখবর দিয়েছে সরকার। দেশের চার ধরনের জমির ওপর থেকে ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা) চিরতরে বাতিলের একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়। নতুন এই বিধানে সংশ্লিষ্ট জমির মালিকদের আর কোনো খাজনা পরিশোধ করতে হবে না, যা তাদের জন্য বিশাল আর্থিক স্বস্তি এনেছে।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে এই চারটি শ্রেণির অব্যাহত জমির ক্ষেত্রে আর কোনো কর আদায় করা হবে না।

খাজনা থেকে অব্যাহতি পেল যে ৪ শ্রেণির সম্পত্তি

ভূমি উন্নয়ন কর থেকে স্থায়ীভাবে অব্যাহতি পাওয়া জমিগুলো হলো:

১. সরকারি বা জাতীয় খালাস জমি: এই শ্রেণির খতিয়ানভুক্ত সম্পত্তির খাজনা সম্পূর্ণরূপে বাতিল করা হয়েছে।

২. ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের জমি: মসজিদ, মন্দির, মঠের মতো ধর্মীয় উপাসনালয়ের সম্পত্তি। তবে এ ক্ষেত্রে একটি শর্ত রয়েছে, তা হলো—এই জমি কোনো বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা যাবে না।

৩. পুনর্বাসন বা আবাসন প্রকল্পের জমি: সরকার কর্তৃক বাস্তবায়িত বিভিন্ন পুনর্বাসন বা আবাসন প্রকল্পের অধীনে পাওয়া জমির খাজনাও স্থায়ীভাবে বাতিল করা হয়েছে।

৪. জরুরি প্রয়োজনে অধিগ্রহণকৃত জমি: সরকার কর্তৃক জরুরি প্রয়োজনে অধিগ্রহণ করা হয়েছে এমন জমির ক্ষেত্রেও এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।

অসচ্ছল জমির মালিক ও কৃষকদের জন্য বিশেষ সুবিধা

ভূমি মন্ত্রণালয়ের নতুন এই স্থায়ী বাতিলের পাশাপাশি প্রান্তিক কৃষক বা অসচ্ছল জমির মালিকদের জন্যও খাজনা মওকুফের একটি বিশেষ সুযোগ রাখা হয়েছে। তারা চাইলে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য খাজনা মওকুফের জন্য জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে আবেদন জানাতে পারবেন। উপযুক্ত তদন্ত সাপেক্ষে সেই মওকুফ মঞ্জুর হতে পারে।

স্মরণ রাখা প্রয়োজন, আইন অনুযায়ী কোনো সাধারণ জমির খাজনা একটানা তিন বছর পরিশোধ না করা হলে সরকার সেই সম্পত্তিকে খাস খতিয়ানভুক্ত করতে পারে। তবে নতুন বিধানে উল্লিখিত অব্যাহতিপ্রাপ্ত জমির ক্ষেত্রে সেই ঝুঁকি আর থাকলো না।

লাইন ধরার দিন শেষ, খাজনা পরিশোধে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম

এই জনস্বার্থমূলক সিদ্ধান্তের পাশাপাশি খাজনা পরিশোধের পদ্ধতিতেও এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। বর্তমানে খাজনা প্রদানের পুরো প্রক্রিয়াটিই সম্পূর্ণ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে রূপান্তরিত হয়েছে। ভূমি অফিসে গিয়ে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর প্রয়োজন এখন আর নেই; নাগরিকরা এখন ভূমি সেবার নিজস্ব ওয়েবসাইট বা মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে খুব সহজে বিকাশ, নগদ, রকেটসহ বিভিন্ন জনপ্রিয় মাধ্যমের মাধ্যমে অনলাইনে খাজনা পরিশোধ করতে পারছেন।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, খাজনা প্রদানের এই ডিজিটাল ব্যবস্থা এবং চারটি শ্রেণির জমির ওপর থেকে কর বাতিলের সিদ্ধান্তের সম্মিলিত প্রভাবে ভূমি অফিসে ঘুষ ও হয়রানির প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে। এটি জনসাধারণের জন্য স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে এবং ভূমি সেবার মান উন্নত করবে।

তানভির ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ