ঢাকা, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১২ কার্তিক ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

বাংলাদেশ বনাম থাইল্যান্ড: গোল বন্যায় শেষ হলো ম্যাচ, জানুন ফলাফল

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৭ ১৯:০৫:২১
বাংলাদেশ বনাম থাইল্যান্ড: গোল বন্যায় শেষ হলো ম্যাচ, জানুন ফলাফল

থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল স্বাগতিক থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ৫-১ গোলের বড় ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে। প্রথম ম্যাচে ৩-০ গোলে হারের পর এই দ্বিতীয় ম্যাচেও বড় ব্যবধানে হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হলো কোচ পিটার বাটলারের শিষ্যদের।

বাংলাদেশ দলের জন্য এই সিরিজটি ছিল এশিয়ান ফুটবলের শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নিজেদের যাচাই করে নেওয়ার সুযোগ। তবে, ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে ৫১ ধাপ এগিয়ে থাকা থাইল্যান্ড, যারা দুইবার বিশ্বকাপ খেলেছে, তাদের শক্তিমত্তার প্রমাণ আবারও মিলল।

প্রথমার্ধে ভুলের মাশুল, একমাত্র স্বস্তির গোল

প্রথম ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও শুরুতেই থাইল্যান্ড লিড নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। মাত্র দুই মিনিটের মধ্যেই বাম প্রান্ত থেকে আসা এক ক্রসে বাংলাদেশের ডিফেন্ডাররা পরাস্ত হন। যদিও গোলরক্ষক রুপ্না চাকমা বল গ্রিপে নিতে ব্যর্থ হন এবং ফাঁকা পোস্ট পেয়েও থাইল্যান্ডের ফরোয়ার্ড বল জালে পাঠাতে পারেননি, যা ছিল বাংলাদেশের জন্য বড় স্বস্তি।

কিন্তু সেই স্বস্তি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ম্যাচের ১২তম মিনিটে থাইল্যান্ডের অধিনায়ক সাওয়ালক গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। এই গোলের মূল কারণ ছিল বাংলাদেশের 'হাই লাইন ডিফেন্স' কৌশল। সেন্টার লাইনের উপরে ডিফেন্স করার সুযোগ নিয়ে সাওয়ালক বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দ্রুত এগিয়ে যান। রুপ্না চাকমা পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এলেও, থাই অধিনায়ক তার পায়ের ফাঁক দিয়ে বল জালে পাঠান।এর ধারাবাহিকতায় ২৩তম মিনিটে থাইল্যান্ড ব্যবধান দ্বিগুণ করে (২-০)। আবারও বাংলাদেশের ডিফেন্স লাইনের উপরে থাকার সুযোগ নিয়ে থাই ফরোয়ার্ড জিরাপরান সহজেই সুযোগ তৈরি করেন এবং গোলরক্ষক রুপ্না এগিয়ে আসার আগেই তার মাথার ওপর দিয়ে বল জালে পাঠান।

দুই গোলে পিছিয়ে থাকা অবস্থায় বাংলাদেশ ম্যাচে ফেরার দারুণ ইঙ্গিত দেয়। ২৯তম মিনিটে মারিয়া মান্দার কর্ণার থেকে লাফিয়ে উঠে শামসুন্নাহার দুর্দান্ত হেডে গোল করেন। বল সাইড পোস্টে লেগে জালে জড়ালে বাংলাদেশ খেলায় ফেরে এবং স্কোরলাইন দাঁড়ায় ২-১। এটি ছিল বাংলাদেশের জন্য এই সিরিজের একমাত্র স্বস্তির মুহূর্ত।

তবে বাংলাদেশের উল্লাস দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। মাত্র পাঁচ মিনিট পর থাইল্যান্ড আবারও একই কৌশলে গোল করে প্রথমার্ধে ব্যবধান ৩-১ করে। বাংলাদেশের ডিফেন্স লাইন উপরে থাকায় থাই ফরোয়ার্ডরা পরাস্ত হন এবং রুপ্না এগিয়ে এসেও গোলটি রক্ষা করতে পারেননি।

দ্বিতীয়ার্ধে থাই আধিপত্য এবং ম্যাচের সমাপ্তি

দ্বিতীয়ার্ধে কোচ পিটার বাটলারের দল ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও, থাইল্যান্ড তাদের চাপ বজায় রাখে। দ্বিতীয়ার্ধে স্বাগতিকরা আরো দুটি গোল করে, যার ফলে ৯০ মিনিটের খেলা শেষে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৫-১। বাংলাদেশের ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলার ম্যাচের আগে বলেছিলেন যে, থাইল্যান্ডের বেঞ্চের গভীরতা খুবই বেশি এবং দলটি অত্যন্ত শক্তিশালী, যা আজকের খেলায় প্রমাণিত হলো।

কোচের মূল্যায়ন

ম্যাচের ফলাফল যাই হোক না কেন, বাংলাদেশ দলের জন্য এই সিরিজটি ছিল শিক্ষামূলক। কোচ বাটলারের মতে, থাইল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের মেয়েদের শক্তির পার্থক্যটা এখনও বিদ্যমান। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ২৯ মিনিটের গোলটি ছিল ইতিবাচক দিক, যা শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধেও গোল করার সামর্থ্য প্রমাণ করে। তবে, ডিফেন্সের মৌলিক ভুলগুলো, বিশেষ করে হাই লাইন ডিফেন্সের কারণে বারবার পরাস্ত হওয়া এবং দ্রুত গোল হজম করা (যা প্রথম ম্যাচের ৪৫ সেকেন্ডে গোল হজম করার ভুলটিরই পুনরাবৃত্তি) ছিল হতাশাজনক।

সব মিলিয়ে, থাইল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচে বাংলাদেশের হার যথাক্রমে ৩-০ এবং ৫-১ গোলে, যা এশিয়ান ফুটবলের উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানোর জন্য বাংলাদেশকে এখনও অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে তা স্পষ্ট করে দেয়।

তানভির ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ