ঢাকা, মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

কঠোর শাস্তির মুখে শিক্ষকরা: পরীক্ষা বন্ধের জেরে কঠোর অবস্থানে সরকার

শিক্ষা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০২ ১৪:১৯:২৬
কঠোর শাস্তির মুখে শিক্ষকরা: পরীক্ষা বন্ধের জেরে কঠোর অবস্থানে সরকার

সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য অপেক্ষা করছে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। শিক্ষার্থীদের চলমান পরীক্ষা বাতিল করার জেরে সরকারি কর্মচারী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে এই পদক্ষেপ নিতে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার।

সোমবার বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা-বাসস-কে (বাসস) দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে মাধ্যমিক শিক্ষকরা কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা বন্ধের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা সরকারি কর্মচারী বিধি ভঙ্গের শামিল। এর ফলস্বরূপ শিক্ষকদের শাস্তির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

অধ্যাপক আবরার কঠোর সুরে হুঁশিয়ারি দেন, ‘মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ আন্দোলনের নামে যা করছেন, তা সরকারি আচরণবিধি লঙ্ঘনের শামিল। সরকারি আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য আপনাদের কিন্তু তৈরি থাকতে হবে। এখানে সরকার একেবারে দৃঢ়ভাবে তার অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে।’

পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে কোনও আপস নয়

শিক্ষার্থীদের ওপর থেকে মানসিক চাপ কমাতে অবিলম্বে পরীক্ষা কার্যক্রমে ফিরে আসার নির্দেশ দেন শিক্ষা উপদেষ্টা। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘পরীক্ষা আপনাদেরকে নিতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীদের উপরে যে চাপ এবং অভিভাবকদের উপরেও যে চাপ সেটা যেন লাঘব হয়।’

অধ্যাপক আবরারের বক্তব্য অনুযায়ী, পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে কোনও প্রকার আপস করা হবে না।

নবম গ্রেডের দাবি ‘অন্যায় ও ভিত্তিহীন’

শিক্ষকদের নবম গ্রেডে উন্নীত হওয়ার দাবিকে উপদেষ্টা 'অন্যায় এবং অন্যায্য' বলে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাঁর মতে, কর্মজীবনে প্রবেশের সময় শিক্ষকরা দশম গ্রেডে থাকার শর্ত মেনেই চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন। সুতরাং, নবম গ্রেডের এই দাবি চাকরির শর্তাবলীর মধ্যে পড়ে না।

তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন, নবম গ্রেড মূলত বিসিএস অ্যাডমিন ক্যাডারদের জন্য নির্ধারিত। এই পদমর্যাদার বিষয়টি এককভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিষয় নয়। এটি আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল, যেখানে তুলনামূলক (কম্পারেটিভ) অনেক দিক বিবেচনা করতে হয়।

পরীক্ষাকে 'অস্ত্র' করা: শিক্ষকের চরম নৈতিক স্খলন

শিক্ষা উপদেষ্টা শিক্ষকদের এই আন্দোলন কৌশলকে তীব্রভাবে সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, শিক্ষকরা এমন এক সময়ে এই দাবি উত্থাপন করেছেন, যখন স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বার্ষিক বা টেস্ট পরীক্ষা চলছিল।

অধ্যাপক আবরারের অভিযোগ, শিক্ষকরা এই পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের ‘অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন।’ এটিকে তিনি শিক্ষক হিসেবে ‘চরম একটি অনৈতিক কাজ’ বলে আখ্যায়িত করেন।

শিক্ষা উপদেষ্টা শেষবারের মতো শিক্ষকদের অযৌক্তিক দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘কাজেই আমরা তাদের অযৌক্তিক দাবি প্রত্যাখ্যান করছি এবং আমরা তাদেরকে বলছি যে, আপনারা আগামীকাল থেকে পরীক্ষা নেন। অন্যথায় সরকারি কর্মচারী হিসেবে বিধি লঙ্ঘনের দায়ে যে শাস্তি রয়েছে সেগুলোর জন্য আপনাদের কিন্তু তৈরি থাকতে হবে।’

আল-মামুন/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ