ঢাকা, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

১৫ লাখ কর্মী নিবে সৌদি ও আমিরাতে

প্রবাসী ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৭ ১২:২৮:০৯
১৫ লাখ কর্মী নিবে সৌদি ও আমিরাতে

বর্তমান বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই-এর জয়জয়কার চলায় যখন অনেক দেশেই কর্মী ছাঁটাইয়ের শঙ্কা বাড়ছে, ঠিক তখনই সম্পূর্ণ ভিন্ন ও ইতিবাচক চিত্র দেখা যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দুই দেশ সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে। ২০২৫ সালের সাম্প্রতিক এক বৈশ্বিক শ্রমবাজার সমীক্ষা বলছে, ২০৩০ সাল নাগাদ এই দুই দেশে অন্তত ১৫ লাখ নতুন জনশক্তির চাহিদা তৈরি হবে।

এআই বনাম মানবশক্তি: মধ্যপ্রাচ্যের অনন্য প্রেক্ষাপট

সার্ভিসনাউ ও পিয়ারসনের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, প্রযুক্তির আধুনিকায়ন উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে মানুষের প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে দেয়নি। বরং এআই-এর মাধ্যমে কাজের ধরণ বদলালেও দেশ দুটির শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সরকারি-বেসরকারি খাতের ক্রমবর্ধমান প্রসারের ফলে মানবকর্মীর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।

সৌদির ‘ভিশন ২০৩০’ ও বিপুল শ্রম চাহিদা

সৌদি আরবের উচ্চাভিলাষী ‘ভিশন ২০৩০’ বাস্তবায়নে দেশজুড়ে চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। বিশেষ করে অবকাঠামো নির্মাণ, পর্যটন শিল্প, লজিস্টিকস, উৎপাদন খাত এবং নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোকে কেন্দ্র করে বিপুল বিনিয়োগ করা হচ্ছে।

গবেষণায় একটি চমকপ্রদ তথ্য উঠে এসেছে—যদি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি না পেত, তবে সৌদি আরবে উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আরও অতিরিক্ত ৬ লাখ ৫০ হাজার কর্মীর প্রয়োজন হতো। অর্থাৎ, প্রযুক্তির ব্যবহারের পরেও দেশটিতে বড় ধরনের কর্মী সংকট দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা নতুন কর্মসংস্থানের পথ আরও প্রশস্ত করবে।

বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাত

শ্রমিক চাহিদা বৃদ্ধির হারে উন্নত দেশগুলোকে ছাড়িয়ে গেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। সমীক্ষার তথ্যমতে, ২০৩০ সালের মধ্যে ইউএই-তে কর্মীবাহিনীর আকার ১২.১ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে এই হার সর্বোচ্চ।

বৈশ্বিক অর্থনীতির তুলনায় মধ্যপ্রাচ্যের অবস্থান

প্রতিবেদনে উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজারের এক তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে:

সংযুক্ত আরব আমিরাত: কর্মীবাহিনীর বৃদ্ধি ১২.১% (শীর্ষে)।

সৌদি আরব: কর্মীবাহিনীর বৃদ্ধি ১১.৬%।

যুক্তরাজ্য: কর্মীবাহিনীর বৃদ্ধি মাত্র ২.৮%।

যুক্তরাষ্ট্র: কর্মীবাহিনীর বৃদ্ধি মাত্র ২.১%।

এই পরিসংখ্যান স্পষ্ট করে যে, পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনায় মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনীতি অনেক বেশি দ্রুতগতিতে সম্প্রসারিত হচ্ছে।

গবেষণার নেপথ্যে যারা

এই চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে আমেরিকার বিখ্যাত এন্টারপ্রাইজ সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান ‘সার্ভিসনাউ’ এবং ব্রিটেনের খ্যাতনামা শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক কোম্পানি ‘পিয়ারসন’। ডিজিটাল অটোমেশন এবং বৈশ্বিক শ্রমশক্তির গুণগত মান বিশ্লেষণে এই দুটি প্রতিষ্ঠান বিশ্বজুড়ে সমাদৃত।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যারা আগামী কয়েক বছরের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে ক্যারিয়ার গড়ার কথা ভাবছেন, তাদের জন্য এই তথ্য অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। বিশেষ করে দক্ষ ও কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন কর্মীদের জন্য এক বিশাল বাজার উন্মুক্ত হতে যাচ্ছে মরুভূমির এই দেশগুলোতে।

আল-মামুন/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ