জয় ১৩৭, প্রথম ইনিংসে অল আউট বাংলাদেশ
ডারবান টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ১১৫.৫ ওভারে ২৯৮ রানে। প্রথম ইনিংসে ৬৯ রানে পিছিয়ে রইলো টাইগাররা।
একের পর এক সঙ্গী সাজঘরের পথ ধরছেন। মাহমুদুল হাসান জয় তবু একটা প্রান্ত ধরে খেলে যাচ্ছিলেন। অষ্টম উইকেটে মেহেদি হাসান মিরাজের সঙ্গে তার দারুণ এক জুটিতে এগিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশ। জুটিতে হাফসেঞ্চুরিও আসলো।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত মিরাজ এক ভুল শট খেলে বসলেন। উইয়ান মুল্ডারের অফস্ট্যাম্পের অনেক বাইরে বেরিয়ে যেতে থাকা বল ড্রাইভ করতে গিয়ে প্রথম স্লিপে ক্যাচ হন মিরাজ। ভাঙে ৫১ রানের জুটি। ৮১ বলে ৪ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় মিরাজের উইলো থেকে আসে ২৯ রান।
মিরাজ ফেরার পরই আসলে বাংলাদেশের অলআউট হওয়া সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। জয় বুঝতে পারছিলেন, লোয়ার অর্ডারের বাকি দুই ব্যাটার নিয়ে বেশিদূর যেতে পারবেন না।
মিরাজের আউটের পরের ওভারেই হারমারকে মারেন বিশাল এক ছক্কা। তার পরের ওভারে মুল্ডারকে দর্শনীয় চার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে বসেন জয়। এর মধ্যে তিনটি ছিল টানা তিন বলে।
তবে খালেদ স্ট্রাইকে চলে গেলে দুশ্চিন্তায় পড়েন জয়। সেই দুশ্চিন্তাই সত্য হয়েছে। ডোয়াইন অলিভারের প্রথম পাঁচ বল কোনোমতে কাটালেও শেষ বল খালেদের (০) গ্লাভসে লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষকের কাছে। আম্পায়ার আউট না দিলে রিভিউ নিয়ে জিতে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
এরপর আর ৪ বল টিকেছে বাংলাদেশের ইনিংস। জয় স্ট্রাইকে গেলেও লিজাড উইলিয়ামসের ওভারের পঞ্চম ডেলিভারিতে পরাস্ত হন। বল ব্যাটে লেগে চলে যায় স্লিপে। তাতেই পরিসমাপ্তি ৪৪২ মিনিটের ইনিংসের।
৩২৬ বলে ১৫ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায় ১৩৭ রান করেন জয়। যেটি দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্টে বাংলাদেশি কোনো ব্যাটারের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ।
গত বছর ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল জয়ের। সেই ম্যাচের দুই ইনিংসে তিনি করেছিলেন ০ ও ৬ রান। তবে চলতি বছরের জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২২৮ বলে ৭৮ রানের ইনিংস খেলে নিজের সামর্থ্যের জানান দেন তিনি।
সেই ধারাবাহিকতা ধরে রেখে আজ টানা দ্বিতীয় ম্যাচে খেললেন পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংস। শুধু পঞ্চাশ পেরিয়েই থেমে যাননি তিনি। নিজের ফিফটিকে রূপ দিয়েছেন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিতে। ক্যারিয়ারের মাত্র চতুর্থ ইনিংস খেলতে নেমেই সেঞ্চুরি হাঁকালেন জয়।
কিংসমিডে শুরু থেকেই ধৈর্য্যের মূর্ত প্রতীক হয়ে খেলছিলেন জয়। প্রথম ৫০ করতে তিনি খেলেন ১৭০ বল। কিউইদের বিপক্ষে প্রথম ফিফটিটি করেছিলেন ১৬৫ বলে। আজ আরও ৫ বল বেশি খেলে পঞ্চাশ করার পর হাত খোলেন তিনি।
তাই তো পরের পঞ্চাশ করতে জয়ের লেগেছে মাত্র ৯৯ বল। এই পঞ্চাশে পাঁচটি চারের সঙ্গে ছিল একটি বিশাল ছয়ের মার। সবমিলিয়ে ২৬৯ বলে ১০ চার ও ১ ছয়ের মারে তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার ছুঁয়েছেন জয়।
ডারবানের কিংসমিডে আগেরদিন ৪৯ ওভার খেলে ৪ উইকেটে ৯৮ রান করেছিল বাংলাদেশ। আজ দিনের শুরুতেই সাজঘরের পথ ধরেন নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা তাসকিন আহমেদ। অভিষিক্ত লিজাড উইলিয়ামসের বলে গালিতে দাঁড়িয়ে দারুণ এক ক্যাচ ধরেন উইয়ান মাল্ডার।
এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই পাল্টা আক্রমণ করতে থাকেন লিটন দাস। অপর প্রান্তে বরাবরের মতোই আস্থাশীল ব্যাটিং করেন মাহমুদুল জয়। প্রোটিয়া পেসারদের বাউন্সারে পুল-হুক করতে দুইবার ভাবেননি লিটন আর স্পিনার আসতেই খোলস ছেড়ে বের হন জয়।
অফস্পিনার সাইমন হার্মারের করা ইনিংসের ৬০তম ওভারের প্রথম বলে স্ট্রেইট ড্রাইভে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে নিজের ফিফটি পূরণ করেন মাহমুদুল জয়। গত বছরের জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা নিজের সবশেষ ম্যাচেও ফিফটি করেছিলেন তিনি।
সেদিন পঞ্চাশে পৌঁছতে জয় খেলেন ১৬৫ বল। সবমিলিয়ে ২২৮ বলে করেছিলেন ৭৮ রান। আজ টানা দ্বিতীয় ফিফটি করার পথে জয় খেলেন ১৭০ বল। যেখানে ছিল পাঁচটি চারের মার। ফিফটি ছোঁয়ার পর হাত খুলে খেলেন জয়। হার্মারের বলে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে হাঁকান বিশাল এক ছয়।
অন্যদিকে শুরু থেকেই সাবলীল ব্যাটিং করেন লিটন। একের পর এক দৃষ্টিনন্দন শটে রানের চাকা ঘোরাতে থাকেন এ উইকেটরক্ষক ব্যাটার। মধ্যাহ্ন বিরতির আগপর্যন্ত তিনি করেন ৯০ বলে ৪১ রান। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস জয় অপরাজিত থাকেন ৮০ রান করে।
অবশ্য দুজনই জীবন পেয়েছেন একবার করে। ব্যক্তিগত ৬৪ রানের মাথায় শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান জয়। আর নিজের ৩৯ রানের সময় শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়ে জীবন পেয়েছেন লিটন। তার বিপক্ষে কট বিহাইন্ডেরও সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়ে বাঁচেন লিটন।
আগের ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পেয়েছিলেন সেঞ্চুরি। এবারও হাফসেঞ্চুরির দোরগোড়ায় পৌঁছে যান লিটন। কিন্তু দারুণ ছন্দে থাকা লিটন চল্লিশের ঘরে গিয়ে খেই হারান। লিজাডের গতিতে ইনসাইড এজ হয়ে স্ট্যাম্প খোয়ান ব্যক্তিগত ৪১ রানে, তার ৯২ বলের ইনিংসে ছিল ৬টি বাউন্ডারি।
দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই লিটন আউট হওয়ার পর সপ্তম উইকেটে ৩৩ রানের জুটি গড়ে ফেলেছিলেন জয় ও ইয়াসির। দুজনের জুটিতে ভালোই খেলছিল বাংলাদেশ। সেঞ্চুরির অপেক্ষায় থাকা জয় ধৈর্য্যের প্রদর্শনী করছিলেন আর ইয়াসির ছিলেন সাবলীল।
ইনিংসের ৮৯তম ওভারের প্রথম বলে অনসাইডে ঠেলে দিয়ে সহজেই এক রান নেন জয়। কিন্তু ইয়াসির ছোটেন দুই রানের জন্য। অথচ নন স্ট্রাইকে দাঁড়িয়ে শুরু থেকেই নো কল করছিলেন জয়। তা দেখেননি ইয়াসির। ফলে ব্যক্তিগত ২২ রানে কাটা পড়েন রানআউটে।
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- বিএনপির ২৩ আসনে প্রার্থী পরিবর্তন! আসছে নতুন ১১ প্রার্থী
- HSC Re-scrutiny Result 2025: বোর্ড চ্যালেঞ্জের ফল দেখুন এখানেই
- বাংলাদেশ বনাম ভারত ফুটবল ম্যাচ: কখন, কোথায় ও কবে খেলা জানুন সময়সূচি
- হুট করে একলাফে কমলো সোনার দাম, ২২ ক্যারেট স্বর্ণের ভরি কত
- কিছুক্ষণ পর এইচএসসি বোর্ড চ্যালেঞ্জ রেজাল্ট ২০২৫ প্রকাশ: ফল দেখুন এখানেই
- আইএমএফের কড়া বার্তা: ঝুঁকিতে দেশের ১৬ ব্যাংক
- পাকিস্তান বনাম শ্রীলঙ্কা ৩য় ওয়ানডে: ব্যাটিংয়ে শ্রীলঙ্কা, সরাসরি দেখুন Live
- কিছুক্ষণ পর এইচএসসি বোর্ড চ্যালেঞ্জ রেজাল্ট ২০২৫ প্রকাশ: অনলাইনে যেভাবে দেখবেন
- আজ রাতে মুখোমুখি ব্রাজিল বনাম সেনেগাল: লাইভ দেখার উপায় ও সময়সূচি
- এইচএসসি বোর্ড চ্যালেঞ্জ রেজাল্ট ২০২৫ প্রকাশ: ফলাফল দেখুন এখানে
- পুঁজিবাজারে স্বস্তি: বিএসইসি'র ‘মার্জিন রুলস নীতিমালা ২০২৫’ আসলো নতুন সিদ্ধান্ত
- আজ রাতে মুখোমুখি ব্রাজিল বনাম সেনেগাল: খেলাটি লাইভ দেখার সহজ উপায়
- ব্রাজিল বনাম সেনেগাল: ৮০ মিনিটের খেলা শেষ, জেনে নিন সর্বশেষ ফলাফল
- এইচএসসি বোর্ড চ্যালেঞ্জ রেজাল্ট ২০২৫ প্রকাশ: অনলাইনে যেভাবে দেখবেন
- আজ HSC Board Challenge Result 2025 প্রকাশিত হবে, যেভাবে দেখবেন রেজাল্ট