ভারতের বিপক্ষে সিরিজে টাইগারদের দুর্বলতার জায়গাগুলো

ঈশান কিষানের দুর্দান্ত ডাবল সেঞ্চুরিতে ৪০৯ রানের পাহাড় সমান লক্ষ টাইগারদের দেয় টিম ইন্ডিয়া। ব্যাট হাতে টাইগাররা নিজেদের স্বভাবসুলভ খেলাটাই খেলেছেন। সাধারণত বড় লক্ষ্য পেলেই চাপে পড়ে তাসের পাতার মতো ভেঙে পড়ে টাইগারদের ব্যাটিং লাইন আপ। এবারও ব্যতিক্রম হলো না, ভারতের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের বিপক্ষে ১৮২ রানে অল আউট হয়ে যায় টাইগাররা।
সিরিজটি টাইগাররা জিতলেও টাইগারদের বেশ কিছু দুর্বলতা চোখে পড়েছে। এক অর্থে বলা যায় ভালো না খেলেই সিরিজটি জিতে গিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে ভারতকে ১৮৭ রানে অলআউট করেও একসময় ১৩৬ রানে ৯ উইকেট পড়ে যায় টাইগারদের। সেই সময় ১৮৭ রানের লক্ষ্য কেও পাহাড় সমানই মনে হচ্ছিল। তবে মেহেদী হাসান মিরাজের অবিস্মরণীয় এক ইনিংসের ফলে ম্যাচটি জিততে পারে টাইগাররা। বাস্তব অর্থে ১৮৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে টাইগাররা কুৎসিততম ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী দেখিয়েছে। উপরের সারির ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং অ্যাপ্রচ ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।
একের পর এক ডট বল খেলে ভারতীয় বোলারদের নিজেদের উপর চেপে বসতে দেন লিটন-বিজয়ার। দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিক এবং মাহমুদুল্লাহও দলের উপর চাপই বাড়িয়েছে। মাহমুদুল্লাহ এবং মুশফিকের ইনিংস দুটি ছিল যথাক্রমে ৩৫ বলে ১৪ এবং ৪৫ বলে ১৮। ১৯৯০ দশকের ক্রিকেটে যেন ফিরে গিয়েছিলেন এই দুই ব্যাটসম্যান। এ ধরনের নেগেটিভ এপ্রোচে খেলার পরও পরপর দুই বলে এই দুই ক্রিকেটার প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। ফলশ্রুতিতে এক সময় ১৩৬ রানে টাইগারদের ৯ উইকেটের পতন হয়।
নিঃসন্দেহে ম্যাচটি হেরে গিয়েছিল টাইগাররা, মেহেদি মিরাজের অবিস্মরণীয় এনে দেওয়া জয়টিকে পুরো দলের জয় হয়তো বলা যাবে না। প্রায় হেরে যাওয়া প্রথম ম্যাচ থেকে শিক্ষা না নিয়ে পরবর্তী ম্যাচেও একই ধরনের ক্রিকেট খেলে টপ অর্ডার। ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিলে একসময় টাইগারদের স্কোর দাঁড়ায় ৬৯ রানে ৬ উইকেট। সেখান থেকে আবারো মিরাজ শো, দলকে বিপদ থেকে উদ্ধার করে পাল্টা আক্রমণের পথ বেছে নেন এই ক্রিকেটার।
৮৩ বলে ১০০ রান করে দলের স্কোর ২৭১ রানে নিয়ে যান। এই ম্যাচে অবশ্য মিরাজকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। পরবর্তীতে বোলাররা হতাশ করেননি, ম্যাচটি পাঁচ রানে জিতে যায় বাংলাদেশ। তৃতীয় ওয়ানডেতে কোনো দিক দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেননি টাইগাররা। টস জিতে বোলিং নিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে ৪০৯ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় ভারত, ম্যাচ মোটামুটি ওখানেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে ১৮২ রানে অলআউট হয়ে অসহায় আত্মসমর্পণ করেন ক্রিকেটাররা। এই সিরিজে টাইগারদের টপ অর্ডারের পারফরমেন্স ছিল দৃষ্টিকটু।
টপ অর্ডারে কোনো ব্যাটসম্যানই একটি অর্ধশতর্কও করতে পারেননি। মিডল অর্ডারে মাহমুদুল্লাহর ৭৭ রানের ইনিংস এবং লোয়ার অর্ডারে মেহেদী হাসান মিরাজের ১০০ রানের ইনিংস ছাড়া এই সিরিজে আর কোনো 50 উর্ধ্ব ইনিংস নেই বাংলাদেশের। মূলত টাইগারদের পুরো ব্যাটিং ইউনিটই এই সিরিজে ফেল করেছে। এক মিরাজ ছাড়া কেউই প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারেননি।
অধিনাক এবং দলের সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে লিটনের কাছ থেকে বিশেষ কিছুই আশা করা হচ্ছিল, তিনি সেটা মেটাতে পারলেন কই? দলের সিনিয়র ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম পুরো সিরিজেই নিজের ছায়া হয়ে থাকলেন। তিন ম্যাচে মুশফিকের রান যথাক্রমে ১৮,১২,৭। এছাড়া অন্যান্য ব্যাটসম্যানদের অবস্থাও একই রকমই। এই সিরিজে টাইগারদের বোলিং মোটামুটি ভালই হয়েছে।
যদিও চট্টগ্রামে তৃতীয় ওয়ানডেতে ভালো বোলিং করতে পারেননি টাইগাররা। অর্থাৎ ব্যাটিং বান্ধব উইকেটে এখনো ভালো বোলিং করার কৌশল পুরোপুরি রপ্ত করতে পারেননি ক্রিকেটাররা। বিশ্বকাপের উইকেটগুলো এইরকম ব্যাটিংবান্ধব হবে। ফলে এখন থেকেই এই ধরনের উইকেটে নিজেদের বোলিংয়ের উন্নতি করার চেষ্টা করতে হবে টাইগারদের। এই সিরিজে টাইগারদের ফিল্ডিং তুলনামূলক ভালই হয়েছে।
তবে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে চাপের মুহুর্তে দুইবার রোহিত শর্মার ক্যাচ ছেড়েছিল বাংলাদেশ। অর্থাৎ চাপের মুহূর্তগুলোতে টাইগাররা ভালো ফিল্ডিং করতে পারছে না। এই সিরিজে ব্যাপারটি আরো ভালোভাবে চোখে পড়েছে। দিনশেষে ২-১ ব্যবধানে ভারতের বিপক্ষে সিরিজটি জিতেছে বাংলাদেশ। নিঃসন্দেহে উদযাপন করার মতোই একটি বিষয়। তবে টাইগারদের লক্ষ্য যেহেতু ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ, তাই প্রতিটি সিরিজ শেষেই নিজেদের খুঁটিনাটি দুর্বলতা বের করতে হবে টাইগারদের। এই সিরিজ শেষে তো দুর্বলতার বিশাল এক ভান্ডারই পেল টাইগাররা। সিরিজটি যেভাবে জিতেছে টাইগাররা সেভাবে নিজেদের দুর্বলতা গুলোর উপরেও জয় পাবে এটাই থাকবে প্রত্যাশা।
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- চলছে বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ড নারী বিশ্বকাপ ম্যাচ: টস শেষ, লাইভ দেখবেন যেভাবে
- বাংলাদেশ বনাম হংকং: কখন, কোথায়, কবে ও কিভাবে দেখবেন লাইভ
- বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা করলো ৩ কোম্পানি
- শেয়ারবাজারে শৃঙ্খলা: বিএসইসি চেয়ারম্যানের ৭টি সাহসী পদক্ষেপ!
- শেয়ারবাজারের নীরব বিপ্লব: বিনিয়োগকারী সুরক্ষায় বিএসইসি!
- কিছুক্ষণ পর বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ড নারী বিশ্বকাপ ম্যাচ: লাইভ দেখবেন যেভাবে
- শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির কারসাজির গন্ধ! তদন্তে বিএসইসি
- ৭ শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের ঢল
- শেয়ারবাজারে নতুন উদ্দীপনা: 'বুল রান'-এর ঝলক, তবে সতর্কতার মিশ্রণ
- আজ বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ড নারী বিশ্বকাপ ম্যাচ: লাইভ দেখার সহজ উপায়
- নতুন বেতন কাঠামোতে নতুন বড় চমক: গ্রেড কম, বেতন বেশি!
- আজ বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ড ম্যাচ: কখন, কোথায় ও কিভাবেন দেখবেন লাইভ
- শেয়ারবাজারে 'স্বাভাবিক সংশোধন', কমেছে সূচক তবে বেড়েছে লেনদেন
- এলপিজি ও অটোগ্যাসের দাম কমল! ভোক্তাদের জন্য সুখবর, জানুন নতুন মূল্য
- নতুন বিসিবি সভাপতি হলেন যিনি