ঢাকা, বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শোক সংবাদ: মারা গেলেন সাকিব, সারা দেশে নেমে এলো শোকের কালো ছায়া

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ নভেম্বর ৩০ ২২:১৬:০৯
শোক সংবাদ: মারা গেলেন সাকিব, সারা দেশে নেমে এলো শোকের কালো ছায়া

গাজীপুরের শ্রীপুরে বনভোজনের সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন জোবায়ের আলম সাকিব। তাঁর মৃত্যুতে শোকাহত পুরো গাঁ, বন্ধু-বান্ধবী ও পরিবারের সদস্যরা। মাত্র ২২ বছর বয়সী এই তরুণের জীবন হারানোর শোক তীব্রভাবে অনুভূত হচ্ছে রাজশাহীর পবা উপজেলার মুরারীপুর গ্রামের মানুষের মধ্যে।

জোবায়ের আলম সাকিবের মা ফজলেতুন্নেসা সেফা, রাজশাহীর একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, আর বাবা জাহাঙ্গীর আলম ছিলেন ব্যাংকার। তাঁদের স্বপ্ন ছিল যে, তাঁদের ছেলে সাকিব একজন সফল ও ভালো মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। তবে সেই স্বপ্নগুলো ছিন্ন হয়ে গেছে তাঁর আকস্মিক মৃত্যুর ঘটনায়।

রাজশাহীর মুরারীপুর গ্রামের প্রায় প্রতিটি পরিবার ছিল সাকিবের আত্মীয়স্বজনের। সাকিবের পরিবার আগে এখানেই বসবাস করলেও পরবর্তীতে রাজশাহী নগরের বাকির মোড় এলাকায় একটি চারতলা বাড়ি নির্মাণ করেন। সাকিব এখানে পড়াশোনা করেছেন রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলে, এবং ২০১৯ সালে এসএসসি ও ২০২১ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। তারপর তিনি ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে (আইইউটি) ভর্তি হন।

গত শনিবার গাজীপুরের শ্রীপুরে বনভোজনের সময় দুইতলা বাসটি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে সাকিবসহ তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। এর পরপরই সাকিবের বাবা-মা ও বোন গাজীপুরে গিয়ে লাশ গ্রহণ করেন এবং গভীর রাতে রাজশাহীতে ফিরে আসেন। আজ রবিবার সকাল ৭টায় সাকিবের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার পর তাঁর লাশ মুরারীপুর গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়।

জানাজায় উপস্থিত হয়ে সাকিবের চাচি শিরিফা বেগম বলেন, "এমন সোনার ছেলে আর হয় না। সে কখনো কারও সঙ্গে উচ্চস্বরে কথা বলত না। এলাকার মানুষ, দেশ ও দুনিয়া সবাই শোকাহত। তার বাবা-মা তাকে ডাক্তার বানাতে চেয়েছিলেন, তবে সে ইঞ্জিনিয়ার হতে চেয়েছিল।"

এদিকে সাকিবের মামা তাসনিম ফেরদৌস মন্তব্য করেন, "গ্রামের রাস্তায় দোতলা বাস নিয়ে পিকনিকে যাওয়া উচিত হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ কেন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা তাদের ভালো জানা উচিত। এই দুর্ঘটনা যদি দোতলা বাসের কারণে না হতো, তবে এমন ঘটনা ঘটত না।"

সাকিবের বন্ধু সোহেল পারভেজ জানান, "আমরা একসঙ্গে কোচিং করতাম এবং বন্ধুত্ব ছিল খুব ভালো। সে ছিল খুব আন্তরিক ও ভালো ছেলে। তার মৃত্যু আমাদের কাছে যেন অস্বাভাবিক।"

তবে, এই দুর্ঘটনা নিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, যার ফলাফল এখনও আসেনি। সাকিবের পরিবারের সদস্যরা এখন তদন্তের ফলাফল জানার অপেক্ষায় আছেন।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে