বসুন্ধরা গ্রুপের খেলাপি ঋণ: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর অবস্থান

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের তিনটি প্রতিষ্ঠানকে ঋণখেলাপি ঘোষণা করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংক। সাড়ে দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়ানো এই খেলাপি ঋণের বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরে এসেছে, যেখানে ঋণ পুনঃতফসিলের একটি প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে। তবে, বাংলাদেশ ব্যাংক স্পষ্ট করে দিয়েছে—নীতিমালার বাইরে কোনো বিশেষ সুবিধা দেওয়া হবে না।
ব্যাংকিং সংকটে বসুন্ধরা গ্রুপের নাম
বসুন্ধরা মাল্টি স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যাংক ঋণ পরিশোধে ব্যর্থতা গত অক্টোবরে ডিমান্ড লোন তৈরি করে এবং পরবর্তীতে এটিকে খেলাপি ঘোষণা করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১,০৯২ কোটি টাকা, যা পুনঃতফসিলের জন্য অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে উপস্থাপন করা হয়েছে। তবে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া এটি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
অন্যদিকে, বসুন্ধরা পেপার মিলস লিমিটেড ও বসুন্ধরা মাল্টি ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেডের ঋণ পরিস্থিতিও শোচনীয়। পেপার মিলসের সিসি হাইপো ঋণ ৩১.৮৫ কোটি টাকা এবং ডিমান্ড লোন ৮৩ কোটি টাকা খেলাপি হয়েছে। অন্যদিকে, মাল্টি ফুড প্রোডাক্টসের প্রকল্প ঋণ ও এলসি ঋণের পরিমাণ প্রায় ৭৬৫ কোটি টাকা।
নিয়মের বাইরে কোনো সুযোগ নয়
সম্প্রতি, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ঋণ পুনঃতফসিলের আলোচনা হয়। তবে, গভর্নর স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, নিয়ম বহির্ভূত কোনো সুবিধা দেওয়া হবে না।
একক ঋণগ্রহীতা সীমা (লোন ক্যাপ) অতিক্রম করায় অগ্রণী ব্যাংককে বিশেষ নিয়ম মেনে চলতে হচ্ছে। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া কোনো পুনঃতফসিলের সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে না।
অর্থপাচার ও জালিয়াতির অভিযোগে তদন্ত
শুধু ঋণখেলাপির অভিযোগই নয়, বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকদের বিরুদ্ধে অর্থপাচার, কর ফাঁকি ও জালিয়াতির অভিযোগও তদন্ত করছে যৌথ তদন্ত দল। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের ভিত্তিতে, গত ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ যুক্তরাজ্যে বসুন্ধরা গ্রুপের পরিবারের সদস্যদের নামে ছয়টি কোম্পানির বিনিয়োগ অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে, দুবাইয়ের বুর্জ খলিফায় তাদের নামে থাকা একটি ফ্ল্যাট জব্দ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর নজরদারি
বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা অর্থনীতির জন্য এক বড় হুমকি। বাংলাদেশ ব্যাংক যদি কঠোর অবস্থান বজায় রাখে, তাহলে ভবিষ্যতে এ ধরনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। আর্থিক খাতকে শৃঙ্খলার মধ্যে রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্ত দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
আব্দুল কাদের/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেয়ারবাজারে কারসাজির চক্র: দুর্বল কোম্পানির শেয়ারের দামে অস্বাভাবিক উল্লম্ফন
- শেষ হলো মেলবোর্ন স্টার্স বনাম বাংলাদেশের মধ্যকার রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ
- এশিয়া কাপ ২০২৫: বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের স্কোয়াড জায়গা পেলেন যারা
- ৩ কোম্পানির কারখানায় ঝুলছে তালা, ক্ষোভ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের
- এশিয়া কাপ ২০২৫: তিন ওপেনার নিয়ে বাংলাদেশের চূড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা
- ভারত বনাম বাংলাদেশ : ৯০ মিনিটের খেলা শেষ, জেনে নিন ফলাফল
- রপ্তানি আয়ের ৮ হাজার কোটি টাকা গায়েব: কেয়া গ্রুপ ও চার ব্যাংককে তলব
- বদলে গেল ফোনের ডায়াল প্যাড, জানুন আসল কারণ ও আগের অবস্থায় ফেরানোর উপায়
- ভারত বনাম বাংলাদেশ: গোল, গোল, ৮০ মিনিটের খেলা শেষ
- বদলে গেল আপনার ফোনের ডায়াল প্যাড, আতঙ্ক নয় সমাধান আছে, জেনে নিন
- এশিয়া কাপ ২০২৫: বড় চমক, বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের স্কোয়াড চূড়ান্ত
- ‘ক্ষমতা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি’—ড. ইউনূস
- মালয়েশিয়া প্রবাস: যেভাবে আবেদন করবেন সম্পূর্ণ বিনা খরচে
- ভারত বনাম বাংলাদেশ: প্রথমার্ধের খেলা শেষ, জানুন সর্বশেষ ফলাফল
- গুজব না সত্য: যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা হাসিনার পদত্যাগপত্র খুঁজে পায়নি