ঢাকা, রবিবার, ২৪ আগস্ট ২০২৫, ৯ ভাদ্র ১৪৩২

তামিম হাওলাদারের বাড়িতে আগুন

সারাদেশ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ মে ১৫ ১০:১৫:১৪
তামিম হাওলাদারের বাড়িতে আগুন

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডের রক্তাক্ত ছায়া এবার গিয়ে পড়ল মাদারীপুরের এক প্রত্যন্ত গ্রামে। গ্রেপ্তার হওয়া এক আসামির বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিল ক্ষুব্ধ জনতা—নির্মম হত্যার প্রতিবাদে মানুষের ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া।

বুধবার (১৪ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে মাদারীপুর সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের ব্রাহ্মন্দী গ্রামে ঘটে এই উত্তপ্ত ঘটনা। আগুনে পুড়ে যায় তামিম হাওলাদারের দুটি বসতঘর। তামিম ওই গ্রামের বাসিন্দা এবং সাম্য হত্যাকাণ্ডের অন্যতম প্রধান আসামি।

স্থানীয়রা জানান, দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে সাম্য হত্যায় জড়িত তিনজনের নাম—সবাই মাদারীপুরের বাসিন্দা। মুহূর্তেই আলোড়ন উঠে এলাকায়। বিকেল থেকেই তামিমের বাড়ির চারপাশে মানুষের জটলা, মুখে মুখে ঘৃণা আর ক্ষোভের শব্দ। সন্ধ্যা গড়াতেই ক্ষোভ রূপ নেয় আগুনে। উত্তেজিত জনতা তামিমের বাড়িতে হামলা চালায় এবং রাত সাড়ে ৮টার দিকে আগুন ধরিয়ে দেয়।

খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে কিছুক্ষণের মধ্যেই, তবে ঘর দুটি পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়।

মাদারীপুর জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. জাকির হোসেন বলেন, “এটা এক ধরনের সামাজিক বিস্ফোরণ। যারা আগুন দিয়েছে, তারা মূলত প্রতিক্রিয়াশীল জনতা। ছাত্রদলের কেউ জড়িত কি না, তা এখনও নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।”

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) চাতক চাকমা বলেন, “ঘটনার পরপরই আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কেউ আহত হয়নি, তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।”

তামিম হাওলাদার ছাড়াও এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন পলাশ সরদার (৩০) ও সম্রাট মল্লিক (২৮)। তিনজনেরই বাড়ি মাদারীপুর জেলায়, তবে আলাদা এলাকায়।

এর আগে, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় ছুরিকাঘাতে খুন হন সাম্য। তিনি শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছিলেন এবং স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

নিহতের বড় ভাই এস এ এম শরিফুল আলম শাহবাগ থানায় দায়ের করেন একটি হত্যা মামলা। তারই ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় এই তিনজনকে।

ব্রাহ্মন্দীর আগুন নিভে গেছে, কিন্তু সাম্য হত্যার জ্বালা এখনো দাউদাউ করে জ্বলছে বহু হৃদয়ে। শান্তিপূর্ণ বিচারপ্রক্রিয়ার দাবি জানাচ্ছেন সচেতন নাগরিকরা। তবুও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—আইনের হাত যত দীর্ঘই হোক, জনতার রোষ কখনো কখনো তার আগেই পৌঁছে যায়।

মো: রাজিব আলী/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ