ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

তারেক রহমান দেশে আসেন না কেন?

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ মে ২৮ ১১:৩৫:০৮
তারেক রহমান দেশে আসেন না কেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রবাহমান রাজনীতির এই অনিশ্চিত সময়ে একটি প্রশ্ন দিনকে দিন স্পষ্ট হয়ে উঠছে: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কেন দেশে ফিরছেন না? এই প্রশ্নটা এখন আর কেবল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কৌশল নয়, বরং বিএনপিপন্থি অনেক সচেতন নাগরিক, প্রবাসী, এমনকি দলের নিবেদিতপ্রাণ কর্মীদের মধ্যেও জন্ম নিচ্ছে বিস্ময় ও হতাশা।

যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী প্রিসিলা সোসাল এক্টিভিস্ট সম্প্রতি তাঁর ফেসবুক পোস্টে এই বিষয়েই স্পষ্ট, সাহসী ও অনালোচিত কিছু সত্য তুলে ধরেছেন। যেখানে তিনি সরাসরি প্রশ্ন রেখেছেন—মা আসলেন, স্ত্রী আসলেন, অথচ তারেক রহমান কেন নয় মাসেও দেশে ফিরলেন না? মামলা নেই, সরকার নিরপেক্ষ, নেতাকর্মীরা মুক্ত—তবুও তিনি দেশে ফেরার কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না কেন?

এই পোস্টে শুধু প্রশ্নই নয়, আছে তীক্ষ্ণ বিশ্লেষণ, হতাশার অভিব্যক্তি এবং রাজনৈতিক বাস্তবতার এক নির্মম প্রতিবেদন। নিচে দেওয়া হলো প্রিসিলার সেই আলোচিত ও ভাবনার খোরাক জোগানো লেখাটি।

পাঠকদের জন্য পোস্টটি ‍হুবহু তুলে ধরা হলো:

তারেক রহমান দেশে আসেন না কেন?

মা আসলেন , স্ত্রী আসলেন , অথচ তিনি আসছেন না !আজ প্রায় নয় মাস হলো, দেশে কোনো রাজনৈতিক সরকার নেই। দায়িত্বে রয়েছেন একটি নিরপেক্ষ উপদেষ্টা সরকার। এই সময়ের মধ্যে জেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন বিএনপি-জামায়াতের প্রায় সব নেতা। এমনকি বড় অপরাধে অভিযুক্ত অনেকেও এখন মুক্ত বাতাস খাচ্ছেন।

মুক্ত আছেন তারেক রহমানও। তাঁর নামে কোনো মামলা নেই।

কিন্তু প্রশ্ন হলো—তিনি কি আসলেই মুক্ত?

যদি তাই হয়, তাহলে আজও তিনি কেন লন্ডনে?

দেশে কয়টি বিএনপির মিছিল দেখেছেন, যেখানে জোরালোভাবে বলা হয়েছে—“তারেক রহমান, আপনি দেশে আসুন”?এই যে ফজলু চাচা এত বড় বড় কথা বলেন, কখনও কি তিনি বলেছেন—“আমাদের নেতা দেশে আসবেন, তাঁর নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন”?সালাহউদ্দিন স্যার, দুদু স্যার, মির্জা ফখরুল স্যার—কাউকে বলতে শুনিনি যে তারেক রহমান দেশে ফিরতে চান এবং তাঁর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে সরকারকে।

আমি জানি না আপনারা শুনেছেন কি না।

কিন্তু আমি, অন্তত, শুনিনি।

তারেক রহমানকে দেশে ফেরার দাবিতে কোনো মিছিল দেখিনি, কোনো মিটিং শুনিনি, কোথাও কারও কণ্ঠে সে দাবি শুনিনি।আপা (শেখ হাসিনা ) থাকাকালেও শুনিনি, এখনও শুনছি না।

তারেক রহমান যদি দেশে আসতেন, নেতৃত্ব দিতেন, একক সিদ্ধান্ত নিতেন—অনেক কিছুর দৃশ্যপট বদলে যেত।কিন্তু এখন সবাই বলছে, কে কী বলছে, কেন বলছে, কেউ জানে না।

প্রতিযোগিতা চলছে—কে কত বেশি বলতে পারে।

মাইক্রোফোন দেখলেই মাথা গরম হয়ে যায়।

অন্যের মাইক কেড়ে নিয়ে নিজেই বলতে শুরু করে।

দেশের আলেম-উলামাদের অপমান করে কথা বলে। এমনকি হিসু দিয়ে সাগরে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেয়।

আগে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ভিডিও বানালে বেশি ভিউ পাওয়া যেত।

এখন বিএনপির নেতাদের নিয়ে পোস্ট দিলেই “মাশাল্লাহ” ভিউ!

অনেকে বলেন, বিএনপিকে নিয়ে পোস্ট দিলেই জামায়াত-শিবির এসে কমেন্ট করে।

আমার প্রশ্ন হলো—আপনাদের নেতা বেশি, কর্মী বেশি, সমর্থক বেশি—তাহলে লাইক-কমেন্ট এত কম কেন?

আমি যখন জিয়া পরিবার নিয়ে কোনো পোস্ট দিই, তখন সেই পোস্টে এত লাইক, এত কমেন্ট, এত শেয়ার আসে—সেগুলো কোথা থেকে আসে?

মূল বিষয়টা হলো, মানুষ এখন অনেক সচেতন।

শিবির-জামায়াত বট নয়—মানুষ এখন ভালোকে ভালো এবং মন্দকে মন্দ বলতে শিখেছে।

আপনারা এটা বুঝতেই সময় নিচ্ছেন।

এটাই আপনাদের সবচেয়ে বড় ভুল।

আবার আসি মূল প্রসঙ্গে—তারেক রহমান দেশে ফিরলে দলের চেহারা বদলে যাবে।

কর্মীরা সাহস পাবে, প্রেরণা পাবে।

দলের ভেতরের অনেক কোন্দল বন্ধ হয়ে যাবে।

এই মুহূর্তে দল যেন এক অভিভাবকহীন পরিবার—

প্রতিটি নেতাই নিজেকে সবচেয়ে বড় মনে করেন, একজন আরেকজনের চেয়ে “আরও বড়”।

কেন তারেক রহমান আসেন না?

তিনি কি বুঝেন না কী হচ্ছে?

তিনি সব বোঝেন, জানেন এবং মনে রাখছেন।

আপনারা বিএনপিতে বড় নেতা—কিন্তু দল না থাকলে আপনাদের কোনো মূল্য নেই।

দল থেকে বের হলে আপনাদের অবস্থাও হয়ে যাবে বিধবা নারীর মতো, কিংবা ব্যারিস্টার শাহজাহান উমরের মতো—নাম আছে, দাম নেই।বড় বড় নেতারা অনেক কিছু বলেন, কিন্তু দলীয় প্রধানের দেশে ফেরা নিয়ে একটি কথাও বলেন না।তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে বলেন না।

একজন নেতার নিরাপত্তা নিশ্চিতে যদি আপনারা ব্যর্থ হন, তাহলে আর কী বলার আছে?

এ কাজটা কি সবচেয়ে প্রথম কাজ চিল না ? উনাকে দেশে আনা , নিরাপত্তা দেয়া ?

নাকি আপনারাই এই বিষয়টিকে ইচ্ছাকৃতভাবে করছেন, কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যে? কারও পরিচালনায় ?

আল-আমিন ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ